প্রতীকী ছবি।
অতিমারির তৃতীয় ঢেউয়ের আশঙ্কার মধ্যেই এ বারের দুর্গাপুজো। অষ্টমীর সকালে কুমারী পুজোর আয়োজনও থাকবে বিভিন্ন পুজো প্রাঙ্গণে। কিন্তু প্রশ্ন হল, করোনার তৃতীয় পর্যায়ে যেখানে শিশুদের বেশি সাবধানে রাখার কথা বলা হচ্ছে, সেখানে এক নাবালিকাকে ‘চিন্ময়ী’ রূপে আরাধনায় কতটা সুরক্ষার প্রস্তুতি থাকছে? কুমারী পুজো যাঁরা করেন, এমন কয়েকটি পুজোর উদ্যোক্তারা অবশ্য জানাচ্ছেন, কলকাতা হাই কোর্ট ও রাজ্যের বেঁধে দেওয়া নিয়ম মেনেই সবটা করবেন। বেলুড় মঠ কর্তৃপক্ষও জানিয়েছেন, গত বারের মতো এ বছরও সব রকম সতর্কতা মেনেই কুমারী পুজো করবেন তাঁরা।
গত বছর বেলুড় মঠে কুমারী ও পূজারির মুখে মাস্ক না থাকায় সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রশ্ন উঠেছিল। মঠ কর্তৃপক্ষ জানিয়েছিলেন, তাঁরা কোভিড-বিধি মেনেই কুমারী পুজোর আয়োজন করেছেন। এ বছরও সতর্কতায় ফাঁক রাখতে নারাজ মঠ। অষ্টমীর সকালে কোভিড-বিধি মানতে কুমারীকে পুজোর জায়গায় নিয়ে আসবেন তাঁর পরিবারের সদস্যেরাই।
মঠের তরফে স্বামী জ্ঞানব্রতানন্দ জানান, পুজোর জায়গায় দূরত্ব-বিধি মেনে ২০-২৫ জনের বেশি সন্ন্যাসী ও ব্রহ্মচারী থাকবেন না। সকলকেই মাস্ক পরতে হবে। প্রতিষেধকের দু’টি ডোজ়ও বাধ্যতামূলক। যাঁরা পুজোর কাজে যুক্ত থাকবেন, তাঁদেরও দু’টি ডোজ়ের শংসাপত্র এবং আরটি পিসিআর নেগেটিভ রিপোর্ট থাকতে হবে। কুমারী ও তার পরিবারের চার সদস্যেরও আরটি পিসিআর করানো হবে। নাবালিকার বয়স অনুযায়ী সাধারণ ভাবে যে সমস্ত প্রতিষেধক তার নেওয়ার কথা, সেগুলি সে নিয়েছে কি না, তা-ও খতিয়ে দেখা হয়েছে। সঙ্গে আসা পরিবারের সদস্যদেরও দু’টি ডোজ় নেওয়া থাকতে হবে। স্বামী জ্ঞানব্রতানন্দ বলেন, “পুজোর কাজে যুক্ত সন্ন্যাসী, ব্রহ্মচারী, কুমারী ও পরিজনদের সকলের আরটি পিসিআর একই জায়গা থেকে করানো হবে। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে রিপোর্ট মিলবে।”
কিন্তু, দু’টি ডোজ় নিয়েও তো অনেকে সংক্রমিত হচ্ছেন? মঠ কর্তৃপক্ষ জানাচ্ছেন, সেই জন্যই পুজোর ২৪ ঘণ্টা আগে পরীক্ষা হবে। এক প্রবীণ সন্ন্যাসীর কথায়, “পূজারি ও তন্ত্রধারকের পক্ষে এতক্ষণ মাস্ক পরে থাকা সম্ভব নয়। ছোট্ট মেয়েটার পক্ষেও পুজোর সময়ে মাস্ক পরে থাকা কষ্টকর। বিজ্ঞানসম্মত ভাবেই তার সংস্পর্শে আসা সকলের পরীক্ষা ও প্রতিষেধকের বিষয়টি দেখা হচ্ছে।”
বাগবাজার সর্বজনীনের কুমারী পুজোয় নাবালিকার সঙ্গে আসতে পারবেন শুধু বাবা-মা। তাঁদের দু’টি ডোজ়ের শংসাপত্র থাকতে হবে। তবে কারও আরটি পিসিআর করানো হচ্ছে না বলেই জানালেন পুজোর সাধারণ সম্পাদক গৌতম নিয়োগী। তাঁর দাবি, আদালত ও প্রশাসনের নিয়ম মেনেই কেউ মণ্ডপে থাকবেন না। পুজো কমিটির যে ২০-২৫ জন থাকবেন, তাঁদেরও দু’টি ডোজ় হয়ে গিয়েছে। পূজারিকেও মাস্ক পরতে বলা হয়েছে। কিন্তু কুমারীকে পরানো হবে না। গৌতমবাবুর কথায়, “কুমারী পুজোয় অনেক আচার-নিয়ম থাকে, তাই মাস্ক থাকছে না।”
গত বছর কাপড়ের উপরে সোনার কারুকাজ করা মাস্ক পরানো হয়েছিল জগৎ মুখার্জি পার্কের কুমারীকে। এক ভক্ত দিয়েছিলেন। এ বছর কী হবে, স্থির হয়নি বলেই জানাচ্ছেন পুজোর যুগ্ম সম্পাদক দ্বৈপায়ন রায়। তাঁর কথায়, “কুমারী পুজোয় পাড়ারই জনা দশেক মানুষ দূরত্ব-বিধি মেনে মণ্ডপের ভিতরে থাকবেন। আর কুমারীও পাড়ারই বাসিন্দা। তার পরিবার সম্পর্কে সকলেই অবহিত। তাঁদেরও দু’টি ডোজ় বাধ্যতামূলক।”
পুজোর কাজে যাঁদের প্রয়োজন, তার বেশি কেউই মণ্ডপে থাকবেন না বলে জানাচ্ছেন সন্তোষপুর লেকপল্লির সাধারণ সম্পাদক সোমনাথ দাস। তিনি বলেন, “সবই হচ্ছে নিয়ম মেনে। সদস্যদের পাশাপাশি পূজারিও মাস্ক পরবেন, তাই কুমারীর পরার প্রয়োজন হবে না।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy