Advertisement
E-Paper

পুজোর বরাতেই ঘুরে দাঁড়ানোর আশা

কেউ পেয়েছেন প্রতিমা গড়ার বরাত। কারও জুটেছে মণ্ডপ তৈরির কাজ। কেউ ব্যস্ত থিম নিয়ে।

লড়াই: নারায়ণতলায় কাজ করছেন শিল্পী সন্তোষ পাল। ছবি: সুমন বল্লভ

লড়াই: নারায়ণতলায় কাজ করছেন শিল্পী সন্তোষ পাল। ছবি: সুমন বল্লভ

আর্যভট্ট খান

শেষ আপডেট: ০৯ অক্টোবর ২০২০ ০২:২৫
Share
Save

আমপানে সব ওলটপালট হয়ে গিয়েছে ওঁদের। ওঁরা ভেবেছিলেন, এ বার আর ঘুরে দাঁড়াতে পারবেন না। তবে দুর্গাপুজো একটু হলেও আশার আলো দেখাচ্ছে। তাই পুজোকে খড়কুটোর মতো আঁকড়ে ধরেছেন ওঁরা। কেউ পেয়েছেন প্রতিমা গড়ার বরাত। কারও জুটেছে মণ্ডপ তৈরির কাজ। কেউ ব্যস্ত থিম নিয়ে।

পূর্ব মেদিনীপুরের কাঁথির কাছে মরিশদা গ্রামের কয়েক জন শিল্পী বিবেকানন্দ রোডে স্বামীজির বসতবাড়ি লাগোয়া একটি ক্লাবের মণ্ডপসজ্জার কাজ পেয়েছেন। তাঁদেরই এক জন অরুণ জানা জানালেন, আমপানে গ্রামের সব বাড়ি তছনছ হয়ে গিয়েছিল। অরুণ বললেন, “চাল উড়ে গিয়েছিল। গাছ পড়ে ভেঙেছিল দেওয়াল। সেই সঙ্গে করোনা। ভেবেছিলাম, এ বার হয়তো কলকাতায় দুর্গাপুজোর কাজ পাব না। শেষ পর্যন্ত কাজ পাওয়ায় সংসারটা হয়তো বেঁচে যাবে।”

ওই পুজোর সম্পাদক গৌতম বিশ্বাস বললেন, “ওঁরাই প্রতিবার আমাদের পুজোর কাজ করেন। এ বার ওঁরা বিপদে পড়েছেন। এই সময়ে পাশে দাঁড়ানোই কর্তব্য। সামাজিক দূরত্ব এবং যাবতীয় স্বাস্থ্য-বিধি মেনেই কাজ হচ্ছে।” গৌতমবাবু জানান, তাঁরা ওই শিল্পীদের পরিবারকে অর্থ সাহায্য এবং জামাকাপড় দেবেন বলে ঠিক করেছেন।

আমপানে অনেকেরই বাড়ি-ঘর ভেঙে পড়েছিল পূর্ব মেদিনীপুরের ভগবানপুর এলাকায়। ওই গ্রামের কয়েক জন শিল্পী প্রতিবারই কলকাতায় আসেন দুর্গাপুজোর মণ্ডপ বানাতে। এ বার তাঁরা ভেবেছিলেন, কাজ পাবেন না। শেষ পর্যন্ত শ্যামবাজারের মেট্রো স্টেশনের কাছে একটি পুজোয় কাজ পেয়েছেন। পুজোর কর্মকর্তা সুব্রত ভট্টাচার্য বললেন, “আমপানে ক্ষতিগ্রস্ত আট-দশ জন শিল্পী এখানে কাজ করছেন। সমুদ্র থেকে ধেয়ে আসা ঘূর্ণিঝড়েই ওঁদের জীবন ওলটপালট হয়ে গিয়েছিল। সেই সমুদ্র সৈকত থেকে সংগ্রহ করা ঝিনুক দিয়েই ওঁরা মণ্ডপ সাজিয়ে তুলছেন।”

আমপানের দাপটে বাড়িতে তৈরি করে রাখা কিছু প্রতিমা নষ্ট হয়ে গিয়েছিল খিদিরপুরের কেষ্ট দাসের। সেই লোকসান কী ভাবে পূরণ হবে, ভাবনায় পড়েছিলেন। অবশেষে আশার আলো দেখেছেন পাড়ারই এক পুজো উদ্যোক্তার জন্য। কেষ্টবাবু বলেন, “যখন আমপান আসে, তখন বাড়ির গোলায় কয়েকটি অন্নপূর্ণা ও বজরংবলীর মূর্তি রাখা ছিল। সেই সব মূর্তি ঝড়ে নষ্ট হয়ে যায়। সঙ্গে বাড়িরও ক্ষতি হয়। এ বার তো করোনা পরিস্থিতিতে পুজো কম হচ্ছে। তাই ভেবেছিলাম, ঠাকুর গড়ার বরাত কি পাব?” খিদিরপুরের ওই পুজোর যুগ্ম সম্পাদক অভিজিৎ দাস জানান, তাঁরা সাধারণত কুমোরটুলি থেকে ঠাকুর আনেন। কিন্তু এ বার আমপানে ক্ষতিগ্রস্ত পাড়ার শিল্পীর পাশে দাঁড়াতেই কেষ্টবাবুকে ঠাকুর তৈরির বরাত দিয়েছেন। অভিজিৎ বলেন, “আমপানে ওই শিল্পীর অনেক ক্ষতি হয়ে গিয়েছে। তাই ওঁকে

বলেছি, লক্ষ্মী, কালী, সরস্বতী— সব তৈরি করে আমাদের মণ্ডপে রাখতে। মণ্ডপে যাঁরা ঠাকুর দেখতে আসবেন, তাঁদের যদি ওই মূর্তি পছন্দ হয়, তা হলে সেই প্রতিমা তিনি সরাসরি কিনতে পারবেন। বিক্রির পুরো টাকাটাই

পাবেন শিল্পী। এ ভাবে ওই শিল্পীর প্রতিমা বিক্রির ব্যবস্থাও করে দিচ্ছি আমাদের মণ্ডপে।”

বাগুইআটির রেলপুকুর এলাকার একটি পুজোর প্রতিমা তৈরির বরাত পেয়েছেন আমপানে ক্ষতিগ্রস্ত শিল্পী সন্তোষকুমার পাল। সন্তোষবাবু বললেন, “যেখানে প্রতিমা তৈরি করি, সেই ঘরের চাল উড়ে গিয়েছিল আমপানে। প্রচুর ক্ষতি হয়েছে। চেষ্টা করছি, এই রেলপুকুরের পুজো আঁকড়ে ঘুরে দাঁড়াতে।” ওই ক্লাবের যুগ্ম সচিব উৎপল চন্দ্র বলেন, “পুজোকে কেন্দ্র করে আমপানে ক্ষতিগ্রস্ত এক শিল্পীর পাশে যে দাঁড়াতে পারলাম, এটাই এ বার পুজোর সার্থকতা। উনি আমপানের সেই দুঃস্বপ্ন ভুলে আমাদের জন্য মনপ্রাণ ঢেলে সাবেক প্রতিমা তৈরি করছেন।”

Cyclone Amphan Durga Puja 2020

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

এটি একটি প্রিন্ট আর্টিক্‌ল…

  • এমন অনেক খবরই এখন আপনার হাতের মুঠোয়

  • সঙ্গে রোজ পান আনন্দবাজার পত্রিকার নতুন ই-পেপার পড়ার সুযোগ

  • ই-পেপারের খবর এখন শুধুই ছবিতে নয়, টেক্সটেও

প্ল্যান সিলেক্ট করুন

মেয়াদ শেষে নতুন দামে আপনাকে নতুন করে গ্রাহক হতে হবে

Best Value
এক বছরে

৫১৪৮

১৯৯৯

এক বছর পূর্ণ হওয়ার পর আপনাকে আবার সাবস্ক্রিপশন কিনতে হবে। শর্তাবলী প্রযোজ্য।
*মান্থলি প্ল্যান সাপেক্ষে
এক মাসে

৪২৯

১৬৯

এক মাস পূর্ণ হওয়ার পর আপনাকে আবার সাবস্ক্রিপশন কিনতে হবে। শর্তাবলী প্রযোজ্য।