Advertisement
২৩ ডিসেম্বর ২০২৪
dumdum

Plastic use: প্লাস্টিক ব্যবহার নিয়ন্ত্রণের পথে দমদম, সংশয় সাফল্য নিয়ে

রাজ্য পরিবেশ দফতরের রিপোর্ট বলছে, বেআইনি প্লাস্টিকের ব্যবহার বন্ধ করতে প্রায়ই অভিযান চালানো হয়।

রুদ্ধ: প্লাস্টিক-বর্জ্যে ভরেছে পুকুর। সোমবার, দমদম ক্যান্টনমেন্টের মাঠকল এলাকায়।

রুদ্ধ: প্লাস্টিক-বর্জ্যে ভরেছে পুকুর। সোমবার, দমদম ক্যান্টনমেন্টের মাঠকল এলাকায়। স্নেহাশিস ভট্টাচার্য

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ১০ মে ২০২২ ০৭:১০
Share: Save:

অতীতের বিভিন্ন দৃষ্টান্ত বলছে, সাফল্য নিয়ে সংশয় যথেষ্টই রয়েছে। তবু আগামী ১৫ মে থেকে দোকান-বাজারে অবৈধ প্লাস্টিকের ব্যবহার নিষিদ্ধ করতে চলেছে দমদম পুরসভা। জানানো হয়েছে, ওই পুর এলাকায় সরকারি নির্দেশ অমান্য করে ৭৫ মাইক্রনের চেয়ে কম পুরু প্লাস্টিক ব্যবহার করলেই পদক্ষেপ করা হবে। হতে পারে জরিমানাও।

এর আগেও বিভিন্ন পুরসভা প্লাস্টিক নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করেছে। কিন্তু সেই কড়াকড়ি প্রায় কোথাওই দীর্ঘস্থায়ী হয়নি। দমদম পুরসভার চেয়ারম্যান হরিন্দর সিংহ ও ভাইস চেয়ারম্যান বরুণ নট্ট জানান, প্লাস্টিক নিয়ন্ত্রণে কড়া পদক্ষেপ করা হবে। তার জন্য সচেতনতার প্রসারেও গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে।

এলাকাবাসীর মতে, ২০০৫ সাল থেকে এ বিষয়ে প্রশাসন সচেষ্ট হলেও সাফল্য আসেনি। তারও আগে, ২০০১ সালে অবশ্য দক্ষিণ দমদমের ২৯ নম্বর ওয়ার্ডের তৎকালীন কংগ্রেস কাউন্সিলর মৃগাঙ্ক ভট্টাচার্য প্লাস্টিকের ব্যবহার নিয়ন্ত্রণে সফল হয়েছিলেন। মৃগাঙ্কবাবু জানালেন, প্লাস্টিক নিয়ন্ত্রণে জনমত গঠন করেই সাফল্য এসেছিল। বাসিন্দাদের অবশ্য প্রশ্ন, একটি পুরসভার বদলে গোটা রাজ্যেই প্লাস্টিক নিয়ন্ত্রণ হবে না কেন? কিছু কিছু পুর এলাকায় বিক্ষিপ্ত ভাবে প্লাস্টিক নিয়ন্ত্রণে কড়াকড়ি করা হলেও সার্বিক পদক্ষেপের ক্ষেত্রে কেন ঘাটতি?

কেন্দ্রীয় দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের তথ্য বলছে, রাজ্যের পুরসভাগুলিতে মোট যে পরিমাণ বর্জ্য উৎপন্ন হয়, তার ১২ শতাংশই প্লাস্টিক। সেই হিসাবে রাজ্যের সমস্ত পুরসভা মিলিয়ে দৈনিক ১৬৪৫ টন প্লাস্টিক বর্জ্য উৎপন্ন হয়।

রাজ্য পরিবেশ দফতরের রিপোর্ট বলছে, বেআইনি প্লাস্টিকের ব্যবহার বন্ধ করতে প্রায়ই অভিযান চালানো হয়। দোষীদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপও করা হয়। যদিও দফতরেরই আর একটি রিপোর্ট বলছে, অবৈধ প্লাস্টিক কারখানার তথ্যভান্ডারই নেই সরকারের কাছে। বোঝার উপায় নেই, নিষিদ্ধ প্লাস্টিক কোথায় তৈরি হচ্ছে।

প্রশাসন সূত্রের খবর, প্লাস্টিকের ব্যবহার কমাতে গত বছরের সেপ্টেম্বরে বৈধ প্লাস্টিকের ঘনত্ব ৫০ থেকে বাড়িয়ে ৭৫ মাইক্রন করা হয়েছে। যার জন্য ‘প্লাস্টিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনা সংশোধনী আইন, ২০২১’ আনা হয়েছে। ২০২২ সালের ৩১ ডিসেম্বরের পর থেকে ১২০ মাইক্রনের কম পুরু প্লাস্টিক পুরোপুরি নিষিদ্ধ হয়ে যাবে।

কলকাতা পুরসভার নিকাশি বিভাগের আধিকারিকেরা জানাচ্ছেন, এ শহরে জল জমার অন্যতম কারণ প্লাস্টিক। প্লাস্টিক জমেই বন্ধ হয়ে যায় নিকাশি নালা ও গালিপিট। ধাপায় তো বর্জ্য প্লাস্টিকের পাহাড় তৈরি হয়েছে। সংযুক্ত এলাকার জলাশয়ে অবাধে প্লাস্টিক ফেলায় বিপন্ন হচ্ছে জলজ প্রাণীদের জীবন। গঙ্গার জলও বিষিয়ে যাচ্ছে প্লাস্টিকের দূষণে। পরিবেশকর্মী সুভাষ দত্তের অভিযোগ, ‘‘প্লাস্টিক ব্যবহারের ক্ষেত্রে যে মাপকাঠি বেঁধে দেওয়া হয়েছে, তা আদৌ মানা হচ্ছে কি না, তার উপরে নজরদারির কোনও পরিকাঠামো প্রশাসনের নেই। ফল যা হওয়ার তা-ই হচ্ছে।’’ অথচ, বছর আটেক আগে নামী গায়ক-গায়িকাদের নিয়ে প্লাস্টিক বর্জনের প্রচারে সিডি প্রকাশ করেছিল কলকাতা পুরসভা। পুরসভা জানিয়েছিল, শহর জুড়েই প্রচার চলবে। তাতে কাজ না হলে কড়া পদক্ষেপ করা হবে। ট্রেড লাইসেন্স নবীকরণের সময়ে প্রত্যেক দোকানি বা সংস্থাকে মুচলেকা দিয়ে জানাতে হবে যে, নিষিদ্ধ প্লাস্টিক ব্যবহার করা হবে না।

কেন্দ্রীয় দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের নির্দেশিকা অনুযায়ী, এ রাজ্যেও ৭৫ মাইক্রনের কম পুরু প্লাস্টিক ব্যবহার করলে দু’হাজার টাকা জরিমানা হওয়ার কথা। কিন্তু অভিযোগ, কলকাতা পুরসভার পরিবেশ বিভাগ থাকলেও প্লাস্টিকের বিরুদ্ধে অভিযান হয় কালেভদ্রে। মেয়র পারিষদ (পরিবেশ) স্বপন সমাদ্দারের অবশ্য দাবি, ‘‘পুরসভা অভিযান চালায়। যদিও গত দু’বছরে তা বন্ধ ছিল। এ বার স্কুলে স্কুলে সচেতনতার প্রচারের পাশাপাশি বাজারেও লিফলেট বিলি করা হবে।’’

পরিবেশমন্ত্রী রত্না দে নাগের বক্তব্য, ‘‘শুধু অভিযান চালিয়ে বা শাস্তি দিয়ে প্লাস্টিক নিয়ন্ত্রণ সম্ভব নয়। কোন প্লাস্টিক ব্যবহারযোগ্য আর কোনটা নয়, সে সম্পর্কে সাধারণ মানুষের ধারণাও স্পষ্ট নয়। না জেনেই অনেকে নিষিদ্ধ প্লাস্টিক ব্যবহার করছেন। তাঁদের সচেতন করার কাজ সরকার করছে।’’

অন্য বিষয়গুলি:

dumdum Plastic
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy