Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪
Jaundice

যাদবপুরে জন্ডিসের আতঙ্ক, বাসিন্দারা বলছেন, আমরা কোন জল খাব?

জন্ডিসের খবর আসতেই কলকাতা পুরসভার স্বাস্থ্য বিভাগ তড়িঘড়ি ওই এলাকায় বোতলবন্দি জলের নমুনা সংগ্রহ করেছে। পাশাপাশি, পুরসভার সরবরাহ করা জলও পরীক্ষাগারে পাঠানো হয়েছে। দু’টি ক্ষেত্রেই দেখা গিয়েছে, জলে কলিফর্ম ব্যাক্টেরিয়া মিলেছে।

রামগড়ের বিদ্যাসাগর কলোনিতে জন্ডিস আক্রান্তের বাড়িতে সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তী ও ৯৯ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর দেবাশিস মুখোপাধ্যায়। —নিজস্ব চিত্র।

রামগড়ের বিদ্যাসাগর কলোনিতে জন্ডিস আক্রান্তের বাড়িতে সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তী ও ৯৯ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর দেবাশিস মুখোপাধ্যায়। —নিজস্ব চিত্র।

সোমনাথ মণ্ডল
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৪ জুন ২০১৯ ০১:৩৮
Share: Save:

জন্ডিস আতঙ্কের মাঝেই পরিস্রুত পানীয় জলের দাবি উঠল যাদবপুরে। এলাকাবাসীর অভিযোগ, দীর্ঘ দিন ধরেই তাঁরা পরিস্রুত পানীয় জল থেকে বঞ্চিত। বাধ্য হয়েই তাঁদের বোতলবন্দি জল খেতে হচ্ছে। অভিযোগ, পুরসভার জলও খাওয়ার যোগ্য নয়, আর্সেনিক পাওয়া যাচ্ছে। গত বছরে আন্ত্রিকের খবরে আতঙ্ক ছড়িয়েছিল যাদবপুরে। এ বছর আবার জন্ডিসের আতঙ্কে ‘কাঁপছেন’ বাসিন্দারা। এর প্রধান কারণ হিসাবে পরিশ্রুত পানীয় জলের অভাবকেই দায়ী করেছেন তাঁরা।

জন্ডিসের খবর আসতেই কলকাতা পুরসভার স্বাস্থ্য বিভাগ তড়িঘড়ি ওই এলাকায় বোতলবন্দি জলের নমুনা সংগ্রহ করেছে। পাশাপাশি, পুরসভার সরবরাহ করা জলও পরীক্ষাগারে পাঠানো হয়েছে। দু’টি ক্ষেত্রেই দেখা গিয়েছে, জলে কলিফর্ম ব্যাক্টেরিয়া মিলেছে।

রামগড়ের বাসিন্দা অভিনন্দন দত্তের বক্তব্য, “তা হলে কী জল খাব? সব সময় কি জল ফুটিয়ে খাওয়া সম্ভব? কেন পরিস্রুত পানীয় জল থেকে বঞ্চিত হবে যাদবপুরের মানুষ?”

আরও পড়ুন: মিলল না সারদার লাল ডায়েরি, সিবিআই জেরার মুখে আরও এক সিট সদস্য

এ সবের উত্তর অবশ্য পুর আধিকারিকদের কাছ থেকে মেলেনি। তবে কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম বলেন, “জন্ডিস মোকাবিলায় নজর রাখছে পুরসভা। প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা হচ্ছে।”

গত এক মাস ধরে ওই এলাকার বিভিন্ন জায়গা থেকে জন্ডিসে আক্রান্ত হওয়ার খবর আসছে। ৯৯ ওয়ার্ডের কাউন্সিলর দেবাশিস মুখোপাধ্যায় নিজেই এ বিষয়ে পুরসভার স্বাস্থ্য বিভাগে চিঠি দিয়েছেন। অভিযোগ, প্রথমে বিষয়টিতে গুরুত্ব দেওয়া না হলেও, পরে তৎপর হয় পুরসভা। ইতিমধ্যেই ৫০টিরও বেশি জায়গা থেকে জলের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। ১৮টি নমুনার মধ্যে ১২টিতেই জীবাণু মিলেছে।

আরও পড়ুন: জগদ্দলে বিশ্ববাংলার ‘ব’ কেটে রাম, তদন্তে পুলিশ

যাদবপুরের বাসিন্দা অরুণোদয় সরকার বলেন, ‘‘পুরসভার পরিস্রুত পানীয় জলের বন্দোবস্ত করা গেলেই এই সমস্যা থেকে রেহাই মিলতে পারে। মাটির নীচ থেকে যে জল তুলে বোতলবন্দি করা হচ্ছে, তা কি পরিস্রুত? কোন জল খাব?”

ওই এলাকায় ঘরোয়া ভাবেই বোতলবন্দি জলের কারবার রয়েছে। সেখানে জল পরিস্রুত করা হচ্ছে কি না তা দেখার দায়িত্ব পুরসভার। ৯৯ নম্বর ওয়ার্ডের বিদ্যাসাগর কলোনি, রামগড় এলাকায় অনেকে জন্ডিসে আক্রান্ত হয়েছেন গত এক মাসে। গত বছর যখন এই এলাকায় ব্যাপক ভাবে আন্ত্রিক ছড়িয়েছিল তখন পুরসভার তরফে অবৈধ জলের ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে ধরপাকড় শুরু হয়েছিল। কিছু দিনের মধ্যেই তা বন্ধও হয়ে যায়। যাদবপুর এলাকার সব জায়গায় গার্ডেনরিচের পরিস্রুত জল পৌঁছয় না। সেখানে ডিপ টিউবওয়েলের মাধ্যমে পাইপলাইনে পৌঁছে দেওয়া হয় জল। কোথাও কোথাও আবার গভীর নলকূপের জলে আর্সেনিক রয়েছে। অভিযোগ উঠেছে, যাঁরা স্থানীয় ভাবে বাড়ি বাড়ি বোতলবন্দি জল পৌঁছে দেন, তাঁদের অনেকে গভীর নলকূপ থেকে জল তুলছেন পুরসভার নজর এড়িয়ে।

অন্য বিষয়গুলি:

Jaundice Water KMC Jadavpur Firhad Hakim
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE