প্রস্তুতি: পুজোর আর বাকি দু’মাসের কিছু বেশি সময়। কুমোরটুলিতে শুরু হয়েছে প্রতিমা তৈরির কাজ। ছবি: দেবস্মিতা ভট্টাচার্য।
এক ধাক্কায় এ বছর দুর্গাপুজোয় সরকারি অনুদানের পরিমাণ বেড়েছে ১৫ হাজার টাকা। দিন কয়েক আগে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সেই ঘোষণা করার পর থেকেই জেলার উদ্যোক্তাদের ভিড় জমছে কুমোরটুলিতে। কারণ, পুজোর আয়োজন আরও জমকালো করতে জেলার অনেকেই এ বার কুমোরটুলির প্রতিমার দিকে ঝুঁকছেন। কাঁথি, বজবজ, মেদিনীপুর শহর, পাঁশকুড়া, চুঁচুড়া, বারাসত থেকেও প্রতিমার বায়না নিয়ে আসছেন উদ্যোক্তারা। কেউ কেউ আবার সরাসরি ফোনেই বায়না দিয়ে দিচ্ছেন।
গত বছর সরকারের তরফে প্রতিটি পুজো কমিটিকে ৭০ হাজার টাকা করে অনুদান দেওয়া হলেও এ বছর তার পরিমাণ বেড়ে হয়েছে ৮৫ হাজার। দিন কয়েক আগে মুখ্যমন্ত্রী কলকাতায় পুজো কমিটিগুলির সঙ্গে বৈঠকে এই ঘোষণা করেন। আরও জানান, রাজ্যের প্রায় ৪৩ হাজারের বেশি পুজো কমিটিকে এই অনুদান দেওয়া হবে। সেই সঙ্গে বিদ্যুতের বিলেও মোটা ছাড়ের ঘোষণা করা হয়। তার পরেই কুমোরটুলিতে জেলার উদ্যোক্তাদের আনাগোনা বেড়েছে। মেদিনীপুরের কাঁথি, হুগলির চুঁচুড়া, দক্ষিণ ২৪ পরগনার ডায়মন্ড হারবার, উত্তর ২৪ পরগনার বারাসত থেকে বেশ কিছু উদ্যোক্তা ইতিমধ্যেই বায়না নিয়ে পৌঁছেছেন কুমোরটুলিতে। তাই গত কয়েক বছর কুমোরটুলি থেকে হাতে গোনা কিছু প্রতিমা জেলায় গেলেও এ বছর সেই সংখ্যা অনেকটাই বেশি হতে চলেছে বলে মনে করছেন শিল্পীরা।
কুমোরটুলির শিল্পীদের একাংশ জানাচ্ছেন, জেলার তুলনায় কুমোরটুলির প্রতিমার দাম তুলনামূলক বেশি। কলকাতা থেকে জেলায় প্রতিমা নিয়ে যেতে গাড়ি ভাড়া বাবদ খরচও অনেকটাই বেশি পড়ে। তাই জেলার উদ্যোক্তাদের কাছে কুমোরটুলির প্রতিমার চাহিদা থাকলেও বাজেট মূল সমস্যা হয়ে দাঁড়াত। ফলে অনেকের ইচ্ছা থাকলেও কুমোরটুলিমুখী হতে পারতেন না। তবে এ বার সরকারি অনুদানের পরিমাণ বেড়ে যাওয়ায় অনেকেই কুমোরটুলির প্রতিমার পাশাপাশি, পুজোর জাঁকজমক আরও বাড়ানোর পথে হাঁটছেন বলে মনে করছেন মৃৎশিল্পীরা।
মেদিনীপুর, ডায়মন্ড হারবার থেকে ইতিমধ্যেই গোটা কয়েক বায়না পেয়েছেন মৃৎশিল্পী বিশ্বনাথ পাল। তাঁর কথায়, ‘‘অন্যান্য বার মূলত কলকাতা আর শহরতলি থেকেই উদ্যোক্তারা আসতেন। দূরের জেলা থেকে বায়না আসত হাতে গোনা। কিন্তু এ বছর ছবিটা আলাদা। মুখ্যমন্ত্রীর অনুদান বৃদ্ধির ঘোষণার পরে পরেই জেলা থেকেও অনেকে বায়না দিতে আসছেন।’’ আর এক শিল্পী মন্টু পাল দূর জেলা থেকে এখনও পর্যন্ত আটটি বায়না পেয়েছেন। তাঁর কথায়, ‘‘আসলে সবাই অভিনবত্ব চাইছেন। তাই অনেকে কুমোরটুলির প্রতিমার খোঁজে আসছেন।’’
জেলায় কুমোরটুলির প্রতিমার চাহিদা বাড়লেও নতুন করে সব বায়না নিতে পারছেন না বলেই জানাচ্ছেন মৃৎশিল্পীদের একাংশ। পুজোর আর বেশি দিন বাকি না থাকায় বাধ্য হয়েই অনেক নবাগত উদ্যোক্তাকে ‘না’ বলতে হচ্ছে তাঁদের। শিল্পী প্রদ্যুৎ পাল বলেন, ‘‘পুজোর তো আর কিছু দিন মাত্র বাকি। তার উপরে আবহাওয়ার খামখেয়ালিপনা। ফলে নতুন বায়না এলেও এখন আর সব নেওয়া সম্ভব নয়। অনিচ্ছা সত্ত্বেও না বলে দিতে হচ্ছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy