কড়াকড়ি: শুধু বিদেশ থেকে নয়, ভিন্ রাজ্য থেকে আসা যাত্রীদেরও কোভিড নেগেটিভ শংসাপত্র রাখতে হবে বলে দাবি উঠেছে। ফাইল চিত্র
লকডাউনের পর থেকে সোমবার সর্বাধিক যাত্রী পেল কলকাতা বিমানবন্দর। সারা দিনে ২৮২টি উড়ানে যাতায়াত করেছেন ৩৯ হাজার ৩০৭ জন যাত্রী। তা সত্ত্বেও চিন্তা যাচ্ছে না। তার প্রধান কারণ দিল্লি।
দিল্লির করোনা পরিস্থিতি সম্প্রতি আবার খারাপ হয়েছে। দেশের অন্য কয়েকটি শহরেও খুব দ্রুত আবার করোনা ছড়াচ্ছে। মহারাষ্ট্র সরকার ইতিমধ্যেই জানিয়ে দিয়েছে, দিল্লি থেকে কোনও যাত্রী মুম্বই যেতে চাইলে তাঁকে সঙ্গে কোভিড নেগেটিভ শংসাপত্র রাখতে হবে। এই নিয়ম এত দিন শুধু আন্তর্জাতিক যাত্রীদের জন্য ছিল। শুধু দিল্লি নয়, কোভিড শংসাপত্র ছাড়া গুজরাত, রাজস্থানের সব বিমানবন্দর এবং গোয়া থেকেও কাউকে মুম্বইয়ে নামতে দেওয়া হবে না বলে মহারাষ্ট্র সরকার জানিয়ে দিয়েছে।
কলকাতার ক্ষেত্রে এখনও ছ`টি শহর ঘিরে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। দিল্লি তাদের মধ্যে অন্যতম। বলা হয়েছে, সপ্তাহে শুধু সোম, বুধ ও শুক্রবার দিল্লি, মুম্বই, চেন্নাই, নাগপুর, আমদাবাদ ও পুণে থেকে কলকাতায় উড়ান যাতায়াত করবে। অন্য চার দিন কলকাতা থেকে এই ছ`টি শহরে উড়ান যেতে পারলেও আসতে পারবে না। মঙ্গলবার কলকাতা বিমানবন্দরের অধিকর্তা কৌশিক ভট্টাচার্য জানিয়েছেন, গত কয়েক দিন ধরে যাত্রী সংখ্যা বাড়ছে। তাঁর কথায়, “সোমবার তো ছ`টি শহরের উড়ান ছিল। কিন্তু, গত রবিবারেও যাত্রী সংখ্যা ৩০ হাজার ছাড়িয়ে গিয়েছে।”
আরও পড়ুন: সাবওয়ে এড়িয়ে রাস্তা পারাপার চলছেই বাইপাসে
আশঙ্কা করা হচ্ছে, যে হারে দিল্লিতে রোগ ছড়াচ্ছে, তাতে অদূর ভবিষ্যতে দিল্লি-সহ দেশের কয়েকটি রাজ্য থেকে সরাসরি কলকাতার উড়ান পুরোপুরি বন্ধ করে দিতে পারে পশ্চিমবঙ্গ সরকার। কারণ, ওই ছ`টি রাজ্যের সরাসরি উড়ান বন্ধ করার পিছনেও ছিল সংক্রমণ ছড়ানোর আশঙ্কা। আর সেটা হলে যাত্রী সংখ্যা আবার কমে যাবে। ব্যবসায় মার খাবে উড়ান সংস্থা এবং ট্র্যাভেল এজেন্টরা।
এই অবস্থায় ট্র্যাভেল এজেন্ট ফেডারেশনের পূর্ব ভারতের কর্তা অনিল পাঞ্জাবির দাবি, আন্তর্জাতিক যাত্রীদের মতো কলকাতায় এ বার অভ্যন্তরীণ যাত্রীদের ক্ষেত্রেও কোভিড নেগেটিভ শংসাপত্র বাধ্যতামূলক করা হোক। তিনি বলেন, “এই দাবি জানিয়ে গত জুলাই মাসেই আমি রাজ্য সরকারকে চিঠি দিয়েছিলাম। এতে প্রাথমিক ভাবে হয়তো যাত্রী সংখ্যা কমতে পারে। কিন্তু, যে আশঙ্কা করে উড়ান বন্ধ করা হচ্ছে, সেটা আর থাকবে না। যিনি কলকাতায় আসবেন, তাঁর সঙ্গে কোভিড নেগেটিভ শংসাপত্র থাকলেই হল। তা হলে শহরে এদের জন্য সংক্রমণ ছড়ানোর আশঙ্কা থাকবে না।”
অনিলের যুক্তি, এখন যে সপ্তাহে চার দিন দিল্লি, মুম্বই-সহ ছ`টি শহর থেকে সরাসরি কলকাতার উড়ান বন্ধ হয়েছে, তাতে কি ওই চার দিন সেখান থেকে যাত্রী আসছেন না? যাত্রী আসছেন লখনউ, ভুবনেশ্বর বা অন্য শহর ঘুরে। নির্দিষ্ট করে কাল যদি বলে দেওয়া হয়, শুধু দিল্লি থেকে আসা যাত্রীদের কাছেই কোভিড
নেগেটিভ শংসাপত্র থাকতে হবে, তবে অনেক যাত্রীই সেটা এড়ানোর জন্য অন্য শহর ঘুরে আসবেন। তাই, অভ্যন্তরীণ ক্ষেত্রে সব শহরের জন্য ওই নিয়ম চালু করলে আর সমস্যা থাকবে না।
এক উড়ান সংস্থার কর্তা জানিয়েছেন, দীপাবলির একটু আগে থেকে ভারত জুড়েই যাত্রী একটু বেড়েছে। এখন দূরপাল্লার ট্রেনের সংখ্যা কম। ফলে, উড়ানে যাতায়াত ছাড়া উপায় থাকছে না। কর্তার মতে তাই, আগামী দিনে যাই হোক না কেন, বিমান যাত্রী কমার বিশেষ সম্ভাবনা নেই।
আরও পড়ুন: আর্থিক সমস্যায় জর্জরিত বৃদ্ধ দম্পতির পচাগলা দেহ উদ্ধার
আর এক উড়ান সংস্থার কর্তার কথায়, “দিল্লি নিয়ে আশঙ্কা তো রয়েছেই। তবে, শীতের সময়ে যাত্রী সাধারণত বাড়ে। কলকাতা থেকে যে ছ’টি শহরে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে, তার বাইরেও অন্য শহরের জন্য যাত্রী বাড়ছে। এখন যদি পশ্চিমবঙ্গ সরকার দিল্লির নিরিখে কিছু নতুন নির্দেশ দেয়, আমাদের তো সেটা মেনে চলতে হবে। তাতে যাত্রী কমলেও কিছু করার থাকবে না।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy