Advertisement
২৭ নভেম্বর ২০২৪

খেলার কোটায় ভর্তিতে গরমিল, অভিযোগ কলেজে

শিক্ষামন্ত্রীর কড়া নির্দেশের পরেও শিক্ষাঙ্গনে ওই ভর্তি-প্রার্থীদের দেখে দ্রুত তৎপর হন কলেজ কর্তৃপক্ষ। গত ৬ জুন পোর্টালে ক্রীড়া শংসাপত্র আপলোডের ব্যবস্থা হয়।

চারুচন্দ্র কলেজ।—ফাইল চিত্র।

চারুচন্দ্র কলেজ।—ফাইল চিত্র।

নীলোৎপল বিশ্বাস
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৯ জুন ২০১৯ ০১:০৪
Share: Save:

ক্রীড়া জগতের কৃতীদের ভর্তির ক্ষেত্রে মানা হচ্ছে না সরকারি নিয়ম। দক্ষিণ কলকাতার চারুচন্দ্র কলেজের বিরুদ্ধে ওঠা এই অভিযোগ নিয়ে শিক্ষা দফতরকে চিঠি দিল মুখ্যমন্ত্রীর সচিবালয়ের ‘মনিটরিং সেল অন প্রোগ্রাম ইমপ্লিমেন্টেশন ইন দ্য সিএমআরও’। আইন মেনে ব্যবস্থা নিয়ে সাত দিনের মধ্যে কী পদক্ষেপ করা হয়েছে, তা-ও জানাতে বলা হয়েছে। শিক্ষা দফতরের নির্দেশে বিষয়টি নিয়ে চারুচন্দ্র কলেজের কাছে জবাব তলব করেছে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়।

ওই কলেজ সূত্রের খবর, গত ২৭ মে ভর্তির পোর্টাল খোলা হয় চারুচন্দ্র কলেজে। প্রথমে তাতে ভর্তি সংক্রান্ত কোনও বিজ্ঞপ্তিই ছিল না। পরে ২৯ মে পোর্টালে ভর্তির বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়। এর পরে ভর্তি হতে চাওয়া পড়ুয়াদের অনেকেই ক্যাম্পাসে গিয়ে দাবি করেন, ক্রীড়া শংসাপত্র থাকা সত্ত্বেও ভর্তির ফর্ম পূরণের সময়ে সেটি তাঁরা পোর্টালে আপলোড করতে পারছেন না। শিক্ষামন্ত্রীর কড়া নির্দেশের পরেও শিক্ষাঙ্গনে ওই ভর্তি-প্রার্থীদের দেখে দ্রুত তৎপর হন কলেজ কর্তৃপক্ষ। গত ৬ জুন পোর্টালে ক্রীড়া শংসাপত্র আপলোডের ব্যবস্থা হয়।

যদিও চারুচন্দ্র কলেজের শিক্ষকদের অনেকেরই অভিযোগ, তত দিনে বহু কৃতী পড়ুয়ারই ফর্ম পূরণ করা হয়ে গিয়েছিল। পরে আর তাঁরা ক্রীড়া শংসাপত্র আপলোড করতে পারেননি। এর পরে নতুন সমস্যা দেখা দেয় কলেজ মেধা তালিকা প্রকাশ করার পরে। কলেজের বাণিজ্য বিভাগের শিক্ষক তথা ক্রীড়ার দায়িত্বপ্রাপ্ত সমীর বেরা বলছেন, ‘‘নিয়ম অনুযায়ী, ক্রীড়া শংসাপত্র থাকা ভর্তি-প্রার্থীরা পাঁচ শতাংশ মেরিট পয়েন্ট পান। অর্থাৎ, তাঁদের চারটি বিষয়ে প্রাপ্ত মোট নম্বরের সঙ্গে আরও ২০ নম্বর যোগ করে দেন কলেজ কর্তৃপক্ষ। কিন্তু আমাদের প্রকাশিত তালিকায় দেখলাম তা হয়নি।’’ সমীরবাবুর দাবি, এর জন্যই বহু কৃতী পড়ুয়ার নাম মেধা তালিকায় অনেকটাই নীচের দিকে চলে গিয়েছে। ফলে তাঁরা ভর্তি হওয়ার সুযোগ না-ও পেতে পারেন।

গরমিল ধরা পড়তেই চারুচন্দ্র কলেজের এক শিক্ষক মুখ্যমন্ত্রীর দফতর এবং শিক্ষা দফতরে চিঠি পাঠিয়ে বিষয়টি জানিয়েছেন। তাঁর দাবি, গত ১০ বছরে কমনওয়েলথ গেমস ও এশিয়ান গেমসে বাংলা থেকে অংশগ্রহণ করা বহু কৃতীই চারুচন্দ্র কলেজের পড়ুয়া। মুখ্যমন্ত্রীকে পাঠানো অভিযোগপত্রে চারুচন্দ্র কলেজের তৃতীয় বর্ষের ছাত্রী স্বপ্না বর্মণের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। তিনি ২০১৮ সালে এশিয়ান গেমসে সোনা জেতেন। এ ছাড়াও মহম্মদ রফিক, প্রণয় হালদার, প্রীতম কোটালের মতো চারুচন্দ্র কলেজের ছাত্রেরা ভারতীয় ফুটবল দলে খেলছেন। তবু ক্রীড়া শংসাপত্র দেখিয়ে ভর্তিতে গরমিলের অভিযোগ কেন? কলেজের বর্তমান টিচার ইন-চার্জ অনুরাধা ঘোষ বলেন, ‘‘যেখানে উত্তর দেওয়ার কথা, সেখানে আগে উত্তর দিই। তার পরে বলব।’’

চারুচন্দ্র কলেজের পরিচালন সমিতির সভাপতি শিবরঞ্জন চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘আমাদের কলেজ থেকে অনেক সফল খেলোয়াড় বেরিয়েছেন। তবে ভর্তি-প্রক্রিয়ার শুরুতেই সরকারি নিয়মে থাকা কোটা ছাড়া অন্য কোনও রকম ছাড় দেওয়া বন্ধ করতে বলেছিল শিক্ষা দফতর।’’ কিন্তু খেলোয়াড়দের ক্ষেত্রে ছাড়ের নিয়ম তো সরকারি? শিবরঞ্জনবাবু এ বার বলেন, ‘‘এ ক্ষেত্রে কী হয়েছে, খোঁজ করে দেখতে হবে। সমস্যা হওয়ার কথা নয়!’’

ক্রীড়ায় কৃতীদের জন্য কি মেধা তালিকা সংশোধন করবে ওই কলেজ? উত্তর মেলেনি কোনও পক্ষেরই।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy