পুজোয় উপচে পড়া ভিড় মেট্রোয়। ফাইল চিত্র
পুজোর ভিড় সামলাতে কতটা তৈরি মেট্রো, তা নিয়ে গোড়া থেকেই সংশয় ছিল যাত্রীদের একটা বড় অংশের মধ্যে। বিশেষত পঞ্চমীর সন্ধ্যায় ঠাসা ভিড়ের মধ্যে গিরিশ পার্ক এবং রবীন্দ্র সদন স্টেশনে থার্ড রেলে সাময়িক বিদ্যুৎ-বিভ্রাটের জেরে সেই শঙ্কা বেশ কিছুটা বেড়ে যায়। যার জন্য তৈরি থাকা নতুন দু’টি এসি রেক পুজোর মধ্যে নামাতেই সাহস করেননি মেট্রো কর্তৃপক্ষ। কিন্তু পুজো মেটার পরে দেখা গেল, চতুর্থী থেকে দশমী পর্যন্ত এক সপ্তাহের পরীক্ষায় কলকাতার জীবন-রেখার খাতায় লাল দাগ খুব একটা পড়েনি। টালা সেতুতে বাস বন্ধের জেরে পাতালপথে ভিড় বহু গুণ বাড়লেও বড় বিভ্রাটে বেলাইন হয়নি পরিষেবাও। বরং মেট্রো কর্তৃপক্ষের দাবি, যাত্রী-সংখ্যা ছাপিয়ে গিয়েছে অতীতের সব নজির। যদিও এর মধ্যেও খানিকটা কাঁটা হয়ে বিঁধছে সময়ানুবর্তিতা নিয়ে যাত্রীদের একাংশের প্রশ্ন।
মেট্রো সূত্রের খবর, চতুর্থী থেকে দশমীর মধ্যে একমাত্র চতুর্থী এবং অষ্টমী ছাড়া রোজই যাত্রী-সংখ্যা বিগত বছরের হিসেবকে বিপুল পিছনে ফেলেছে। পঞ্চমী এবং যষ্ঠী, পরপর দু’দিন যাত্রী-সংখ্যা ছাপিয়ে গিয়েছে ৯ লক্ষ। নবমীর দিন মেট্রোয় যাতায়াত করেছেন সাড়ে আট লক্ষেরও বেশি যাত্রী। গত বছর চতুর্থী থেকে দশমী যেখানে মেট্রোয় চড়েছিলেন ৪৯ লক্ষ ৬৮ হাজার ৫৮৩ জন, এ বছর সেই সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৫২ লক্ষ ৮৬ হাজার ৬৭৮-এ। অতিরিক্ত যাত্রী পরিবহণ থেকে মেট্রোর আয়ও বেড়েছে প্রায় ৪৯ লক্ষ টাকার কাছাকাছি।
পুজোর দিনগুলিতে ভিড়ের নিরিখে অন্য সব স্টেশনকে পিছনে ফেলেছে কালীঘাট। সপ্তমীতে সেখানে যাত্রীসংখ্যা ছিল ৯৯,৫০০। নবমীতে ৯৮ হাজারের কিছু বেশি। ভিড়ের দিক থেকে কালীঘাটের পরেই ছিল দমদম, শোভাবাজার, রবীন্দ্র সরোবর এবং কুদঘাট।
মেট্রোকর্তারা বলছেন, পুজোর মাসখানেক আগে থেকে ট্রেনে ওঠানামা নিয়ে যাত্রীদের সচেতন করতে উঠেপড়ে লেগেছিলেন তাঁরা। তার পরে পুজোয় প্ল্যাটফর্মের ভিড় সামলানোর ক্ষেত্রে বিশেষ পরিকল্পনাই বিভ্রাট এড়ানোর ক্ষেত্রে বিশেষ ভাবে উপযোগী হয়েছে।
কী সেই পরিকল্পনা?
মেট্রোর মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক ইন্দ্রাণী বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, যে সব স্টেশনে মাঝে প্ল্যাটফর্ম রয়েছে সেখানে আপ এবং ডাউন লাইনে দু’টি ট্রেন কখনওই একসঙ্গে থামতে দেওয়া হয়নি। এর ফলে সময়ানুবর্তিতা অল্প-বিস্তর ধাক্কা খেলেও ভিড়ের চাপে দমবন্ধ করা পরিস্থিতি হয়নি। দরজা বন্ধ না হওয়ার সমস্যাও ঠেকানো গিয়েছে। পাশাপাশি স্টেশনগুলির তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারাও যাত্রীদের অস্বস্তি বাড়তে দেয়নি। সবচেয়ে বড় কথা, মোটের উপর ৮০ শতাংশের বেশি ক্ষেত্রে এসি রেক ব্যবহার করা গিয়েছে।
কিন্তু মেট্রোয় যাত্রীদের ঠাসাঠাসি ভিড়ের ব্যাখ্যা কী? এক মেট্রোকর্তা বলেন, ‘‘যাত্রী-সংখ্যা ক্রমে বাড়ছে। চাপ মোটেই কম নয়। কিন্তু তাঁদের নিরাপত্তার দিকটিকে অগ্রাধিকার দিয়ে চালু পরিকাঠামোয় সর্বাধিক সংখ্যক ট্রেন চালানোর চেষ্টা করা হয়েছে। যার জন্য এড়ানো গিয়েছে বড় বিভ্রাট।’’
কিন্তু এর পরেও একটা প্রশ্ন থেকে যাচ্ছে। বুধবার, একাদশীর দিন ঠাকুর দেখার ভিড় অনেকটাই কম। তা সত্ত্বেও কিছু মেট্রো সময় মেনে চলেনি বলে অভিযোগ। এর কারণ কী? সেই প্রশ্নের অবশ্য সন্তোষজনক জবাব পাওয়া যায়নি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy