বেপরোয়া: হেলমেটের বালাই নেই। উৎসবের পার্ক স্ট্রিটে দেখা মিলেছে এমনই বহু বাইকচালক ও আরোহীর। নিজস্ব চিত্র
হেলমেটবিহীন এক মোটরবাইক চালককে হেলমেট পরিয়ে দিচ্ছে সান্তা ক্লজ। বড়দিনের আগে নিজেদের ফেসবুক পেজে ‘সেফ ড্রাইভ সেভ লাইভ’ শিরোনাম সহকারে এমনই একটি ছবি প্রকাশ করেছিল কলকাতা পুলিশ।
শুধু বড়দিনের আগে নয়, বিভিন্ন মরসুমে, এমনকি শহরে ‘পিঙ্ক’ টেস্ট ম্যাচ চলাকালীনও এমন একাধিক ছবি পোস্ট করেছিল কলকাতা পুলিশ। উদ্দেশ্য একটাই— সাধারণ মানুষকে সচেতন করা। কিন্তু পুলিশের এত পোস্ট এবং সতর্কবার্তার পরেও ২৪ থেকে ২৫ ডিসেম্বর গভীর রাত পর্যন্ত হাজারেরও বেশি বাইকচালককে আটক করেছে কলকাতা পুলিশ। হেলমেট না পরায় তাঁদের ট্র্যাফিক আইনে অভিযুক্ত করা হয়। কিন্তু এত ধরপাকড়ের পরেও মোটরবাইক চালকদের যে সচেতন করা যাচ্ছে না, তা বোঝা যায় রাত বাড়লেই শহরের রাস্তায় হেলমেটবিহীন বাইকচালকদের দৌরাত্ম্য দেখে। এই দাপাদাপি আরও বাড়ে উৎসবের দিনগুলিতে। আর মোটরবাইকের এই দাপট যে মঙ্গলবার, বছর শেষের দিনে এবং নতুন বছরেও থাকবে, তা বলাই বাহুল্য। শুধু হেলমেট না পরাই নয়, তার সঙ্গে রয়েছে বিপজ্জনক গতি এবং দুইয়ের বেশি আরোহীর একই বাইকে ওঠার প্রবণতাও। যার ফলে দুর্ঘটনার আশঙ্কা থেকে যায় সব সময়ে।
কেন্দ্রীয় সড়ক এবং পরিবহণ মন্ত্রকের রিপোর্ট বলছে, ২০১৭ সালে সব রকম পথ দুর্ঘটনার মধ্যে ৩৪ শতাংশই ছিল মোটরবাইক দুর্ঘটনা। যার জেরে দেশ জুড়ে মারা গিয়েছিলেন ৪৮ হাজারেরও বেশি মানুষ। শুধু তা-ই নয়, ৭৫ শতাংশ মৃত্যুই হয়েছিল হেলমেট না পরায়। কলকাতা ট্র্যাফিক পুলিশের পরিসংখ্যান বলছে, ২০১৮ সালে এ শহরে মোটরবাইক দুর্ঘটনা ঘটেছিল ৪২৭টি। তাতে জখম হয়েছিলেন ৪৫৭ জন। মৃত্যু হয়েছিল ৩৫ জনের। এ বছর এই সংখ্যাটি বেড়েছে না কমেছে, সে ব্যাপারে অবশ্য কলকাতা ট্র্যাফিক পুলিশ কোনও তথ্য দেয়নি। তবে দুর্ঘটনার সংখ্যা যাতে না বাড়ে, তার জন্যই নিয়মিত প্রচার চালানোর পাশাপাশি নাকা তল্লাশি করা হচ্ছে। যাতে বাইকচালকদের হেলমেট পরার অভ্যাস তৈরি হয়। কলকাতা পুলিশের বিভিন্ন ট্র্যাফিক গার্ডের ওসিদের মতে, হেলমেট ছাড়া মোটরবাইক চালালে জরিমানা হতে পারে ভেবেই ভয়ে কিছু মানুষ হেলমেট পরেন। আবার ওই অফিসারদের একাংশের বক্তব্য, জরিমানার অঙ্কটা এতই কম যে, অনেকেই তার পরোয়া করেন না। তাঁদের কথায়, ‘‘নতুন কেন্দ্রীয় ট্র্যাফিক আইন চালু হলে জরিমানার অঙ্ক কয়েক হাজারে পৌঁছবে। তখন হেলমেটবিহীন বাইকচালকদের দাপট অনেকটা কমবে বলেই মনে হয়।’’
পুলিশ জানিয়েছে, বছর শেষে বেপরোয়া বাইকচালকদের রুখতে শহর জুড়ে একাধিক নাকা তল্লাশির কেন্দ্র তৈরি করা হয়েছে। বিভিন্ন ট্র্যাফিক গার্ডের কর্মীরা মনে করছেন, নাকা তল্লাশি চালু রাখলে বাইকচালকদের দৌরাত্ম্য অনেকটাই রোখা যাবে।
আর সেই কারণেই লালবাজার ঠিক করেছে, বড়দিনের মতো বছর শেষেও শহরের ন’টি ডিভিশনে বেশ কিছু এলাকা ভাগ করে সেখানে নজরদারি চালানো হবে। যার মধ্যে থাকছে রাসবিহারী মোড়, শরৎ বসু রোড, কসবা কানেক্টর, প্রিন্স আনোয়ার শাহ রোড কানেক্টর, ই এম বাইপাস, পার্ক সার্কাস মোড়-সহ একাধিক গুরুত্বপূর্ণ মোড়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy