স্বাধীনতা দিবসে স্কেটিংয়ের খেলা হাওড়া ময়দানে। ছবি: দীপঙ্কর মজুমদার
স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে সোমবার নিরাপত্তার চাদরে মুড়ে ফেলা হয়েছিল গোটা কলকাতা শহরকে। রাস্তার মোড়ে মোড়ে পুলিশকর্মীদের মোতায়েন করার পাশাপাশি চলেছে গাড়ি থামিয়ে তল্লাশি। রেড রোড ও সংলগ্ন এলাকার জন্য ছিল নিরাপত্তার বাড়তি কড়াকড়ি। যদিও উৎসবের দিনগুলিতে বিধি ভাঙার যে ছবি বরাবর দেখা যায়, এ বারেও তার অন্যথা হয়নি। ট্র্যাফিক আইন শিকেয় তুলে, পিছনে একাধিক জনকে বসিয়ে রাস্তায় দেদার মোটরবাইক ছোটাতে দেখা গিয়েছে অনেককেই।
স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে এ দিন সকাল থেকেই গোটা শহরে ছিল উৎসবের মেজাজ। কার্যত প্রতিটি রাস্তার মোড়েই বিভিন্ন ক্লাব বা সংগঠনের তরফে পতাকা উত্তোলনের পাশাপাশি বিভিন্ন অনুষ্ঠানেরও আয়োজন করা হয়। কোভিডের জন্য দু’বছর বন্ধ থাকার পরে এ বার রেড রোডেও স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে সাধারণের প্রবেশের ক্ষেত্রে কোনও বিধিনিষেধ ছিল না। সেই কারণে কলকাতা পুলিশের তরফেও এ দিন শহরের প্রায় সর্বত্রই নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছিল। সমস্ত এলাকাতেই মোতায়েন করা হয়েছিল পুলিশকর্মীদের। বাড়তিনজর ছিল গঙ্গার ধার, ময়দান, ভিক্টোরিয়া চত্বর-সহ শহরের একাধিক জায়গায়।
এ দিন বেলা বাড়তেই উৎসবমুখী জনতার ভিড় বাড়ে ওই সমস্ত এলাকায়। শহরে ঢোকার প্রতিটি রাস্তায় ছিল কড়া পুলিশি প্রহরা। গাড়ি থামিয়ে তল্লাশি চালাতেও দেখা গিয়েছে পুলিশকর্মীদের। এ ছাড়া, শিয়ালদহ, উল্টোডাঙা, রুবি, গড়িয়াহাট, কালীঘাট, পার্ক স্ট্রিট, ধর্মতলা, শ্যামবাজার-সহ শহরের একাধিক গুরুত্বপূর্ণ অংশে অতিরিক্ত বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছিল। স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে ২৩টি জায়গায় নাকা-তল্লাশির ব্যবস্থা করা হয়েছিল বলে জানা গিয়েছে। এ দিন শহরে অতিরিক্ত চার হাজার পুলিশকর্মীকে মোতায়েন করা হয় বলেলালবাজার সূত্রের খবর।
রেড রোডের জন্য ছিল বাড়তি ব্যবস্থা। এক দিন আগে থেকেই কার্যত রেড রোডের দখল চলে গিয়েছিল পুলিশের হাতে। ছ’টি ওয়াচ-টাওয়ার থেকে নজরদারির পাশাপাশি রেড রোড এবং আশপাশের এলাকাকে ১৪টি জ়োনে ভাগ করে নজরদারি চালানো হয়। প্রতিটি জ়োনের দায়িত্বে ছিলেন এক জন করে ডেপুটি কমিশনার পদমর্যাদার অফিসার। শুধু রেড রোডের জন্যই প্রায় ১২০০ পুলিশকর্মীকে মোতায়েন করা হয়েছিল। এ ছাড়া, জায়গায় জায়গায় ছিল কুইক রেসপন্স টিম। নিরাপত্তার কাজে লাগানো হয়েছিল কলকাতা পুলিশের বিশেষ বাহিনীকেও।
এক দিকে পুলিশের নজরদারি যেমন ছিল, অন্য দিকে, সেই নজরদারির আড়ালে দেখা গিয়েছে দেদার বিধি ভাঙার ঘটনাও। গাড়িতে জাতীয় পতাকা লাগিয়ে অবাধে যাতায়াত করতে দেখা গিয়েছে অনেককেই। কোথাও বিনা হেলমেটে বাইক ছোটাতে দেখা গিয়েছে বেপরোয়া যুবকদের। কোথাও আবার বাইকের পিছনে একাধিক জনকে বসিয়ে তোলা হয়েছে গতির তুফান। অনেকেরই মাথায় ছিল না হেলমেট। গাড়ির ভিতরে প্রচণ্ড জোরে গান বাজিয়েও যেতে দেখা গিয়েছে অনেককে। ই এম বাইপাস, এ জে সি বসু রোড বা চিত্তরঞ্জন অ্যাভিনিউ— সর্বত্র ছিল একই ছবি। পুলিশের চোখের সামনে দিয়েই ট্র্যাফিক-বিধি ভাঙতে দেখা গিয়েছে বহু চালককে। পুলিশকর্মীরা দেখেও কোনও ব্যবস্থা নেননি। কিন্তু কেন? বাইপাসে কর্মরত এক ট্র্যাফিক পুলিশকর্মী অবশ্য বললেন, ‘‘সব দিন কি আর সমান কঠোর হলে চলে! উৎসবের দিনে একটু ছাড় চলে প্রতি বছরই। তবে নজরদারি ছিল। বেশি বাড়াবাড়ি করলেই জরিমানা করা হয়েছে।’’ লালবাজারের এক পুলিশকর্তা বললেন, ‘‘গোটা শহরেই নজরদারি চলেছে। অতিরিক্ত বাহিনীও রাস্তায় ছিল। ছিল নাকা-তল্লাশির ব্যবস্থাও। এ ছাড়া, ক্যামেরার মাধ্যমেও কড়া নজরদারি চালানো হয়েছে গোটা শহরে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy