কলকাতা মেট্রোয় চালু হওয়া চারটি লাইনে (ব্লু, গ্রিন, অরেঞ্জ এবং পার্পল) সব মিলিয়ে শতাধিক মোটরম্যানের ঘাটতি রয়েছে। চলতি বছরের শেষে ২০ জনেরও বেশি চালকের অবসর নেওয়ার কথা।
অথচ, ইস্ট-ওয়েস্ট (গ্রিন লাইন) মেট্রোর হাওড়া ময়দান-এসপ্লানেড, শিয়ালদহ-সেক্টর ফাইভ ছাড়াও নিউ গড়িয়া-রুবি (অরেঞ্জ লাইন) এবং জোকা-মাঝেরহাট (পার্পল লাইন) মেট্রোপথে পরিষেবা চালু রয়েছে। চলতি বছরে নোয়াপাড়া থেকে ক্যান্টনমেন্টের মধ্যেও পরিষেবা শুরুর লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে।
সুতরাং নতুন মেট্রোপথ চালু হওয়ার পাশাপাশি সব ক’টি পথে সারা দিনে ট্রেনের সংখ্যা বৃদ্ধি পেলে চালকের চাহিদা আরও বাড়বে। সেখানে অভিযোগ উঠছে, এই অবস্থায় চালকের ঘাটতি পূরণ করার বদলে মেট্রো কর্তৃপক্ষ জোড়াতালি দিয়ে পরিস্থিতি সামাল দিতে চাইছেন। রেল বোর্ডের মাধ্যমে টেকনিক্যাল ক্যাটাগরিতে নিযুক্ত কর্মীদের মধ্যে থেকেই প্রশিক্ষণ দিয়ে অতীতে চালক তৈরি করত মেট্রো। সেই ব্যবস্থা এক দশকেরও বেশি সময় ধরে বন্ধ। মেট্রো চালানোর জন্য চালক পেতে কর্তৃপক্ষকে তাই পূর্ব রেল এবং দক্ষিণ-পূর্ব রেলের উপরে নির্ভর করতে হয়।
চালক না পেয়ে, সর্বত্র পিছনের কামরায় গার্ড বা কন্ডাক্টিং মোটরম্যান তুলে দিয়ে সেখানে টেকনিশিয়ানদের দিয়ে কাজ চালানোর কথা ভেবেছেন মেট্রো কর্তৃপক্ষ। কারিগরি ও মানসিক সক্ষমতা যাচাই না করে এ ভাবে জোড়াতালি দিয়ে কাজ চালানো যাত্রী সুরক্ষার দিক থেকে বিপজ্জনক হতে পারে বলে মনে করছেন অনেকেই। মেট্রোর কর্মী সংগঠনগুলি পুরনো ব্যবস্থায় চালক নিয়োগের প্রক্রিয়ায় ফিরে যাওয়ার পক্ষে। পাশাপাশি, মেট্রোর লাইন রক্ষণাবেক্ষণে থাকা কর্মীরা টানা দু’বছরের বেশি সময় ধরে রাতে কাজ করছেন বলেও অভিযোগ। যা তাঁদের স্বাস্থ্য এবং কাজের পরিবেশের শর্ত লঙ্ঘন করছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
এ সবের মধ্যেই বেসরকারিকরণের তৎপরতার বিরুদ্ধে মেট্রোকর্মীদের মধ্যে ক্ষোভ বাড়ছে। তার বিরোধিতায় ও চালকের ঘাটতি-সহ বিভিন্ন সমস্যার প্রতিবাদ জানিয়ে আজ, বুধবার মেট্রো ভবনে অভিযান হবে। রাজ্যের শাসকদলের শ্রমিক সংগঠন ঘনিষ্ঠ ‘মেট্রো রেলওয়ে প্রগতিশীল শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়ন’ মদন মিত্রের নেতৃত্বে পার্ক স্ট্রিটে মেট্রো ভবনে অভিযানের ডাক দিয়েছে।
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)