সারি সারি: ডেঙ্গির ভয়ে মশারি টাঙিয়ে ঘুম ফুটপাতবাসীদের। বৃহস্পতিবার, হেদুয়ার কাছে। ছবি: সুদীপ্ত ভৌমিক
বাতাসে শিরশিরানি ভাব চলে এলেও শহর কলকাতায় ডেঙ্গির সংক্রমণ কমার লক্ষণ নেই। যা উদ্বেগবাড়াচ্ছে পুরসভার অন্দরে। পুরসভা সূত্রের খবর, দক্ষিণ কলকাতায় সংক্রমণ ঊর্ধ্বমুখী তো ছিলই। এখন তার দোসর হয়েছে উত্তরের একাধিক এলাকাও। পুর স্বাস্থ্য বিভাগ সূত্রে জানা গিয়েছে, উত্তর কলকাতার এক নম্বর বরোর কাশীপুর ও বেলগাছিয়া এলাকায় গত কয়েক মাসে ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা বেড়েছিল। এখন নতুন করে সংক্রমণ ছড়াচ্ছে তিন, চার, পাঁচ এবং ছ’নম্বর বরোয়। বিশেষত তিন নম্বর বরোর ফুলবাগান এবং কাঁকুড়গাছি এলাকায় ডেঙ্গি সংক্রমণ বেড়েছে। পুর স্বাস্থ্য বিভাগের এক আধিকারিকের কথায়, ‘‘আগে শুধু দক্ষিণ কলকাতায় সংক্রমণের হার বেশি ছিল। কিন্তু এখন উত্তর কলকাতার ওই বরোগুলিতেও অনেকে সংক্রমিত হচ্ছেন। তবে উত্তরে আক্রান্তের হার কম।’’
পুরসভা সূত্রের খবর, ডেঙ্গি-মৃত্যু কিছুতেই কমছে না। গত সাত দিনে দক্ষিণ কলকাতার ৭০, ৯২ এবং ১১৪ নম্বর ওয়ার্ডে মৃত্যুহয়েছে একাধিক জনের। ৯২ নম্বর ওয়ার্ডে দু’জন মারা গিয়েছেন। ওই ওয়ার্ডের সিপিআই কাউন্সিলর মধুছন্দা দেব বৃহস্পতিবার বলেন, ‘‘আমাদের এখানে ডেঙ্গি সংক্রমণের হার ভয়াবহ। এখন সংক্রমণ ছড়াচ্ছে বস্তি এলাকায়। পুরসভারতরফে যাবতীয় ব্যবস্থা নেওয়া হলেও নাগরিকদের একাংশ সচেতন হচ্ছেন না।’’ ১১৪ নম্বর ওয়ার্ডেও ডেঙ্গিতে মৃত্যু হয়েছে দুই যুবকের। গত ২৮ সেপ্টেম্বর মারা যান শুভ ব্রহ্ম (২৫) নামে এক যুবক। তাঁরপরিবারের সদস্যেরা এ দিন জানান, তাঁদের বাড়ির আশপাশে অনেকেই আক্রান্ত। পাশের বাড়ির দুই বাসিন্দা হাসপাতালে ভর্তি। ১১৫ নম্বর ওয়ার্ডেও ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে তিন জনের।
পুর স্বাস্থ্য বিভাগ সূত্রে জানা গিয়েছে, দক্ষিণ কলকাতার দশ থেকে চোদ্দো নম্বর বরো এলাকা এখন মূল চিন্তা। এক পুর আধিকারিক জানান, ১২ নম্বর বরোর ইএম বাইপাস লাগোয়া ১০৯ নম্বরওয়ার্ডে সংক্রমণের হার সব চেয়ে বেশি। ডেঙ্গি নিয়ন্ত্রণে আসছে না কসবা এবং হালতু এলাকাতেও। ওই দুই এলাকা ১০৬ এবং ১০৭ নম্বরের অন্তর্গত। ১০৬ নম্বর ওয়ার্ডে ইতিমধ্যে দু’জন ডেঙ্গিতে মারা গিয়েছেন। স্থানীয় কাউন্সিলর অরিজিৎ দাসঠাকুর বলেন, ‘‘আগে যে হারে সংক্রমণ ছড়াচ্ছিল, সেটা এখন কমেছে ঠিকই। তবে পুরসভার তরফে বাড়ি বাড়ি অভিযান চালানো হচ্ছে। সমস্যা হল, বাড়িতে নোটিস পাঠানো সত্ত্বেও অনেকেই গুরুত্ব দিচ্ছেন না।’’
যদিও ১০৬ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দাদের পাল্টা বক্তব্য, এলাকার পুকুরগুলি কচুরিপানায় ভর্তি। অব্যবহৃত সেই সব পুকুরে বংশবৃদ্ধি ঘটছে মশার। পাশাপাশি, বহু ফাঁকা জমিতে আবর্জনা জমে থাকায় সেখানেও জন্মাচ্ছে মশার লার্ভা। পুরসভার অবশ্য দাবি, কোনও ব্যক্তিগত পুকুর বা ফাঁকা জমি পরিষ্কার করার দায়িত্ব সেটির মালিকের। এমন সম্পত্তিতে আবর্জনা জমে থাকলে মালিককে নোটিস পাঠানো হয়। তার পরেও সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ওই পুকুর বা জমি সাফ না করলে পুরসভা সেই কাজ করে দেয়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy