Advertisement
২৬ ডিসেম্বর ২০২৪
Aedes Aegypti

মুখ্যমন্ত্রীর উদ্বোধনের আগেই মণ্ডপে হাজির ‘ডেঙ্গির মশা’

মুখ্যমন্ত্রী তখনও ঢোকেননি মণ্ডপে। তাঁর জন্য অপেক্ষায় টানটান স্থানীয় বাসিন্দা, কর্মকর্তা, পুলিশ থেকে সংবাদমাধ্যম। নিরাপত্তার ব্যূহ ভেদ করে তখনই ঘটে অতর্কিত ‘হামলা’।

টালা প্রত্যয়ের মণ্ডপে বৃহস্পতিবার এ রকম মশারই উপদ্রব ছিল।

টালা প্রত্যয়ের মণ্ডপে বৃহস্পতিবার এ রকম মশারই উপদ্রব ছিল। নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২২ ০৭:৩২
Share: Save:

খোদ মুখ্যমন্ত্রী যে মণ্ডপ উদ্বোধন করে গেলেন, যেখানে হাজির হয়েছিলেন ইউনেস্কোর কর্তা থেকে বিভিন্ন দেশি-বিদেশি গণ্যমান্য অতিথি, সেখানেই ডেঙ্গির মশার হামলা। বিষয়টি অবশ্যই মুখ্যমন্ত্রীর নজরে আসেনি। কিন্তু থিমের কৌলীন্যে শহরবাসীর জল্পনায় থাকা বড় পুজোর মণ্ডপও এ বার ডেঙ্গি-আতঙ্কের মানচিত্রে ঢুকে গেল। বৃহস্পতিবার পুজো উদ্বোধনের প্রথম দিনেই টালা প্রত্যয়ের মণ্ডপে ডেঙ্গির মশা দেখা গিয়েছে বলে অভিযোগ। তবে শাসকদলের স্থানীয় নেতাদের দাবি, এ মশা ‘বহিরাগত’। সংবাদমাধ্যমের ক্যামেরায় ধরা পড়া মশার চেহারা দেখে তা ডেঙ্গির মশা বলেই সন্দেহ চিকিৎসকদেরও।

মুখ্যমন্ত্রী তখনও ঢোকেননি মণ্ডপে। তাঁর জন্য অপেক্ষায় টানটান স্থানীয় বাসিন্দা, কর্মকর্তা, পুলিশ থেকে সংবাদমাধ্যম। নিরাপত্তার ব্যূহ ভেদ করে তখনই ঘটে অতর্কিত ‘হামলা’। মণ্ডপের ভিতরে চিত্র সাংবাদিকেরা কেউ কেউ মশার কামড় খেয়েছেন। তাঁদের হাতে পঞ্চত্বপ্রাপ্ত একটি মশার ছবিও ক্যামেরায় ওঠে। শুক্রবার সেই ছবি সংক্রামক রোগের চিকিৎসক অমিতাভ নন্দীকে দেখানো হলে তিনি বলেন, ‘‘এটা ডেঙ্গিরই মশা। মশার গায়ে সাদা-সাদা ছোপ থাকলে তা ডেঙ্গির মশা-ই হয়।’’

এ রাজ্যে ডেঙ্গি লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে। তারই মধ্যে উত্তর কলকাতার নামী পুজোর প্রাঙ্গণে ডেঙ্গির মশার উপস্থিতি অনেকের কাছেই উদ্বেগজনক বলে মনে হয়েছে। স্থানীয় পাঁচ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর তথা বরো চেয়ারম্যান তরুণ সাহা বলছেন, ‘‘মনে হচ্ছে, ডেঙ্গির মশা বাইরে থেকে উড়ে এসেছে। এখানে ডেঙ্গির মশার লার্ভা কই! তবে বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে দেখছি। সংক্রমণ রোধে যা যা করণীয়, পুরসভা সবই করে চলেছে।’’

টালা প্রত্যয়ের লাগোয়া মাঠে পড়ে রয়েছে টালা সেতু তৈরির লোহালক্কড়ের একাংশ। রয়েছে ঝোপজঙ্গল। তরুণের অবশ্য দাবি, ‘‘এই তল্লাটে কোথাও জমা জল নেই।’’ মণ্ডপেই অবশ্য প্রতিমার সামনে জল রাখা আছে। তবে তরুণ বলছেন, ‘‘ওই জলে ওষুধ দেওয়া। তাতে মশার ডিম পাড়া চলবে না।’’

কিন্তু ওই মণ্ডপেই মশার কামড়ে অতিষ্ঠ হয়েছেন চিত্র সাংবাদিকেরা। সেখানে শতাধিক কর্মীও প্রায় সারাক্ষণ থাকছেন। মণ্ডপের পিছনে ঝোপজঙ্গলে কারিগরদের একাংশের তাঁবু রয়েছে। তাঁরাও মশার কামড় খাচ্ছেন। পুরসভার তরফে বলা হচ্ছে, কোথাও জল বা জঞ্জাল জমতে দেবেন না। স্থানীয় কাউন্সিলর ওই তল্লাটে জমা জল নেই বলে দাবি করলেও ফেলে দেওয়া চায়ের ভাঁড় বা বোতলের জলেও ডেঙ্গির মশা ডিম পাড়তে পারে। জল, কাদাও অল্পবিস্তর রয়েছে। এলাকার বাসিন্দারাও মনে করেন, মণ্ডপের পিছনের মাঠটা পরিষ্কার না-হওয়া পর্ষন্ত মশার ভয় থাকবেই।

টালা সেতু তৈরির কাজ শুরু হওয়ার আগে সবুজে সবুজ ছিল ওই মাঠ। ২০২০-র মাঝামাঝি থেকে তা পাল্টে গিয়েছে। সেখানে লার্সন অ্যান্ড টুব্রো-র নিযুক্ত শ্রমিকেরা এত দিন ধরে থাকছেন। সেতু তৈরির লোহালক্কড়ও মাঠে রাখা। পুরো মাঠের চেহারাই পাল্টে গিয়েছে। তরুণ বলেন, ‘‘নির্মাণকারী সংস্থা বলেছে, কাজ শেষ করে যাওয়ার আগে তারা মাঠ পুরনো চেহারায় ফিরিয়ে দেবে। এটা তাদের কর্পোরেট সামাজিক দায়বদ্ধতারও অঙ্গ।’’ তবে কবে মাঠ পুরনো চেহারায় ফিরবে বা ওই তল্লাট ডেঙ্গির আশঙ্কামুক্ত হবে, পরিষ্কার নয়। তবে পুজোকর্তারা সর্বতো ভাবে পরিস্থিতি সামলানোর আশ্বাস দিচ্ছেন।

অন্য বিষয়গুলি:

Aedes Aegypti Dengue Mamata Banerjee
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy