সারেক খান —ফাইল চিত্র।
রাজ্যে ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়ে একের পর এক মৃত্যুর ঘটনা ঘটছে। সোম ও মঙ্গলবার, দু’দিনে কলকাতা এবং হাওড়ার বাসিন্দা দুই কমবয়সির মৃত্যু হয়েছে মশাবাহিত এই রোগে। আবার, চলতি মরসুমে, অর্থাৎ গত জানুয়ারি থেকে এখনও পর্যন্ত যত জন ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়েছেন, সেই সংখ্যা গত পাঁচ বছরের মোট আক্রান্তের থেকে বেশি!
সূত্রের খবর, স্বাস্থ্য দফতরের এই অভ্যন্তরীণ রিপোর্ট দেখে কপালে ভাঁজ পড়েছে স্বাস্থ্যকর্তাদেরও। তাঁদের আশঙ্কা, যে ভাবে আক্রান্তের সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে, তাতে আগামী দু’মাসের মধ্যে, অর্থাৎ চলতি বছরে আক্রান্তের মোট সংখ্যা লক্ষের ঘরে পৌঁছে যেতে পারে। জানা যাচ্ছে, গত জানুয়ারি থেকে ২৪ অক্টোবর পর্যন্ত রাজ্যে মোট আক্রান্ত হয়েছেন ৭৬ হাজার ৪৭৫ জন। বছর শেষের দু’মাস আগেই যা ২০২২ সালের রেকর্ড ভেঙে দিয়েছে।
গত বছর মোট আক্রান্ত হয়েছিলেন ৬৭ হাজার ২৭১ জন। স্বাস্থ্য দফতরের অন্দরের খবর, মহালয়া থেকে দশমী পর্যন্ত এগারো দিনে রাজ্যে ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়েছেন ৮৯২৯ জন। চলতি মরসুমে সরকারি হাসপাতালে পরীক্ষায় ৪৮ হাজার ৩১১ জনের ডেঙ্গি ধরা পড়েছে। বেসরকারি হাসপাতাল ও ল্যাবরেটরির পরীক্ষায় ২৮ হাজার ১৬৪ জনের ডেঙ্গি পজ়িটিভ রিপোর্ট এসেছে।
জানা যাচ্ছে, সোমবার ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়ে মৃত তরুণের নাম সারেক খান (১৮)। একটি ইংরেজি মাধ্যম স্কুলের দ্বাদশ শ্রেণির পড়ুয়া ওই তরুণের বাড়ি কলকাতা পুরসভার ৭৯ নম্বর ওয়ার্ডের একবালপুরে, ব্রাউনফিল্ড রো-তে। সেখানে মা, বাবা ও দাদার সঙ্গে থাকতেন সারেক। পুরসভা সূত্রের খবর, ২৩ অক্টোবর ওই তরুণের জ্বর আসে। ২৪ তারিখ তাঁর রক্ত পরীক্ষা হয়। পরদিন ডেঙ্গি ধরা পড়ে। ২৬ তারিখ সকালে একবালপুরের একটি নার্সিংহোমে ভর্তি করা হয় সারেককে। কিন্তু শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় ওই রাতেই তাঁকে স্থানান্তরিত করা হয় একবালপুরেরই একটি বেসরকারি হাসপাতালে। সোমবার সকালে সেখানে মারা যান ওই তরুণ।
সারেকের বাবা, পেশায় ব্যবসায়ী মহম্মদ সেলিম খান বলেন, ‘‘ডেঙ্গি ধরা পড়ার পরে ছেলের বমি, পায়খানা শুরু হয়েছিল। শরীরও দুর্বল হতে থাকে। একবালপুরের একটি নার্সিংহোমে ভর্তি করা হলেও অবস্থার অবনতি হওয়ায় ২৬ তারিখ রাতেই সিএমআরআই হাসপাতালে ওকে ভর্তি করি। ভর্তির সময়ে প্লেটলেট ছিল ৬২ হাজার। পরে তা কমে ৪২ হাজার হয়ে যায়।’’
পুরসভা সূত্রের খবর, কলকাতায় চলতি বছরে এখনও পর্যন্ত ১৫ জন ডেঙ্গিতে মারা গিয়েছেন। তাঁদের মধ্যে ১৩ জনই দক্ষিণ কলকাতার বাসিন্দা। পুর স্বাস্থ্য বিভাগ সূত্রে জানা
যাচ্ছে, ৭৯ নম্বর ওয়ার্ডটি ন’নম্বর বরোর অধীনে।
দক্ষিণ কলকাতার ৯, ১০, ১১, ১২, ১৩ নম্বর বরোর বিভিন্ন ওয়ার্ডে ডেঙ্গির সংক্রমণ সব চেয়ে বেশি। এমনকি, ১৫ নম্বর বরো এলাকা, অর্থাৎ গার্ডেনরিচেও ডেঙ্গির সংক্রমণ যে ভাবে বেড়েছে, তা চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে পুর প্রশাসনের কাছে।
অন্য দিকে, ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে হাওড়া পুরসভার রামেশ্বর মালিয়া লেনের বাসিন্দা অতীশকুমার সিংহেরও। ২৭ বছরের ওই যুবক দিনকয়েক ধরে জ্বরে ভুগছিলেন। আন্দুলের একটি বেসরকারি হাসপাতালের বহির্বিভাগে চিকিৎসা করাচ্ছিলেন তিনি। পরীক্ষায় ডেঙ্গি পজ়িটিভ এসেছিল। সোমবার সন্ধ্যায় ডাক্তার দেখাতে এসে আচমকা জ্ঞান হারান অতীশ। তড়িঘড়ি তাঁকে ভর্তি করা হয় ওই হাসপাতালেই। মঙ্গলবার সকালে ওই যুবকের মৃত্যু হয়। ডেথ সার্টিফিকেটে ডেঙ্গি শক সিনড্রোমের উল্লেখ রয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy