Advertisement
২০ ডিসেম্বর ২০২৪
Job Seekers of West Bengal

ধর্না মঞ্চে ১৩০৭ দিন পার, বিচারের বাণীর প্রতীক্ষায় অপেক্ষমাণ প্রার্থীরা

তাঁদের সবার একটাই প্রশ্ন, ধর্না মঞ্চে ১৩০৭ দিন অপেক্ষা করে কেটে গেল। আর কত দিন অপেক্ষা করতে হবে? তাঁরা সবাই চান শুনানি শেষ করে দ্রুত রায় দিক সুপ্রিম কোর্ট।

নবম থেকে দ্বাদশের অপেক্ষমাণ তালিকায় থাকা চাকরিপ্রার্থীদের ধর্না মঞ্চে। বৃহস্পতিবার, গান্ধী মূর্তির পাদদেশে।

নবম থেকে দ্বাদশের অপেক্ষমাণ তালিকায় থাকা চাকরিপ্রার্থীদের ধর্না মঞ্চে। বৃহস্পতিবার, গান্ধী মূর্তির পাদদেশে। ছবি: বিশ্বনাথ বণিক।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২০ ডিসেম্বর ২০২৪ ০৮:০৮
Share: Save:

ওঁরা বসেছিলেন কলকাতার ময়দানে গান্ধী মূর্তির পাদদেশে। কিন্তু ওঁদের নজর ছিল দিল্লির সুপ্রিম কোর্টে। তাঁদের সবার একটাই প্রশ্ন, ধর্না মঞ্চে ১৩০৭ দিন অপেক্ষা করে কেটে গেল। আর কত দিন অপেক্ষা করতে হবে? তাঁরা সবাই চান শুনানি শেষ করে দ্রুত রায় দিক সুপ্রিম কোর্ট।

বিকেলের দিকে তাঁরা জানতে পারলেন, শুনানি-পর্ব শেষ হয়নি। পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য হয়েছে ৭ জানুয়ারি। যা শুনে হতাশা গ্রাস করছে তাঁদের। সবারই প্রশ্ন, ধর্নামঞ্চে কেটে গেল ১৩০৭ দিন। শুধু পরবর্তী তারিখই পাচ্ছেন। আর কিছু হচ্ছে না। আর কত দিন অপেক্ষা করতে হবে?

গত ১৩০৭ দিন ধরে ধর্না মঞ্চে বসা অপেক্ষামাণ তালিকায় থাকা প্রার্থীরা জানালেন, তাঁদের মধ্যে নবম থেকে দশমের প্রার্থী তিন হাজারের মতো এবং একাদশ-দ্বাদশের প্রার্থী আছেন আড়াই হাজারের মতো। তাঁদেরই এক জন বিল্ব ঘোষের বক্তব্য, ‘‘স্কুল সার্ভিস কমিশন বলেছে, তাঁরা প্যানেলের থেকে যোগ্য এবং অযোগ্যদের পার্থক্য করতে পারবে। তা হলে সেটা এত দিন ধরে করছে না কেন? কাদের বাঁচাতে চাইছে স্কুল সার্ভিস কমিশন?’’

প্যানেল থেকে যোগ্য ও অযোগ্যদের আলাদা না করলে পুরো প্যানেলই বাতিল হয়ে যেতে পারে বলে আশঙ্কা অপেক্ষমাণ তালিকায় থাকা প্রার্থীদের। সে ক্ষেত্রে ধর্না মঞ্চে থাকা নবম-দ্বাদশের এই প্রার্থীদেরও নিয়োগের আশা শেষ হয়ে যাবে। তাই ধর্না মঞ্চে বসা চাকরিপ্রার্থীরা চান না, পুরো প্যানেল বাতিল হোক। পাণ্ডুয়ার বাসিন্দা বিল্ব একাদশ-দ্বাদশের সংস্কৃতের চাকরিপ্রার্থী। তিনি বলেন, ‘‘আমরা চাই প্যানেল যেন বাতিল না হয়। স্কুল সার্ভিস কমিশন এই প্যানেল থেকে যোগ্য ও অযোগ্যদের আলাদা করুক। যাঁরা যোগ্য, তাঁরা সম্মানের সঙ্গে চাকরি করুন। যাঁরা অযোগ্য, তাঁদের চাকরি বাতিল করে অপেক্ষমাণ তালিকায় থাকা প্রার্থীদের সেখানে নিয়োগ দেওয়া হোক।’’

মুর্শিদাবাদ থেকে আসা চাকরিপ্রার্থী স্বাতী সরকার তাঁর ছ’বছরের মেয়ে পিয়াসা সাহাকে নিয়ে বসেছিলেন ধর্না মঞ্চে। স্বাতী বলেন, ‘‘মেয়েকে বাড়িতে দেখার কেউ নেই। তাই ওকে সঙ্গে নিয়েই আসতে হয়। আগে বহু বার মেয়েকে নিয়ে এই ধর্না মঞ্চে এসেছি। অযোগ্য চাকরিপ্রার্থীরা সাদা খাতা জমা দিয়ে চাকরি পেয়েছেন। ওঁরা চাকরি করছেন বলেই আমরা যাঁরা যোগ্য, তাঁরা বছরের পর বছর রাস্তায় বসে আছি। একটা দুর্নীতি হয়েছে। তার ফল আমাদের ভোগ করতে হবে কেন?’’

এখন অবশ্য রোজ গান্ধী মূর্তির পাদদেশে বসেন না এই চাকরিপ্রার্থীরা। অপেক্ষমাণ তালিকায় থাকা এক প্রার্থী অরূপ বিশ্বাস বলেন, ‘‘আন্দোলনটা চার বছর ধরে চলছে। অনেকের বয়স হয়ে গিয়েছে। অনেকেই ঘর ভাড়া নিয়ে ধর্না মঞ্চে রোজ আসতেন। কিন্তু ঘর ভাড়া নিয়ে আন্দোলন করে যাওয়ার মতো ক্ষমতাও সবার নেই। তবে আমরা ধর্না মঞ্চ বন্ধ করিনি। পালা করে অনেকে আসেন। বিশেষ বিশেষ দিনে ধর্না মঞ্চে বসা হয়। এ ভাবেই কেটে গেল ১৩০৭ দিন।’’

বৃহস্পতিবার এই প্রার্থীদের অনেকেই ভেবেছিলেন, হয়তো সুপ্রিম কোর্ট কোনও আশার কথা শোনাবে। অরূপ বলেন, ‘‘ফের ৭ জানুয়ারি শুনানি। আমরা শেষ দেখা পর্যন্ত দাঁত চেপে লড়ে যাব।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Jobseekers of West Bengal Sit in Protest Supreme Court
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy