Advertisement
২২ ডিসেম্বর ২০২৪
Coronavirus Third Wave

Coronavirus Third Wave: তৃতীয় ঢেউয়ের আশঙ্কায় কমেছে চাহিদা, দুর্ভোগে সাজশিল্পীরা

গত বছর থেকেই করোনার কারণে সাজশিল্পের সেই ব্যবসায় মন্দা চলছে। অথচ প্রতিমার সাজ তৈরির এই শিল্পের সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন বিভিন্ন জেলার কয়েক লক্ষ মানুষ।

প্রতীক্ষা: ক্রেতাহীন কুমোরটুলির সাজশিল্পের দোকান।

প্রতীক্ষা: ক্রেতাহীন কুমোরটুলির সাজশিল্পের দোকান। ছবি: সুমন বল্লভ

মেহবুব কাদের চৌধুরী
কলকাতা শেষ আপডেট: ০২ সেপ্টেম্বর ২০২১ ০৭:০৭
Share: Save:

আগামী অক্টোবরে, দুর্গাপুজোর সময়ে করোনার তৃতীয় ঢেউ আছড়ে পড়তে পারে বলে ইঙ্গিত দিয়েছে বিশেষজ্ঞ মহল। আর তার জেরেই মার খাচ্ছে কুমোরটুলি পাড়ার সাজশিল্পের ব্যবসা। এর জেরে চরম আতান্তরে পড়েছেন রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে থাকা সাজশিল্পীরাও।

উত্তর কলকাতার কুমোরটুলিতে প্রায় ৪০টি সাজশিল্পের দোকান রয়েছে, যেখানকার তৈরি অলঙ্কারেই সেজে ওঠে প্রতিমা। কুমোরটুলিতে তৈরি প্রতিমা তো বটেই, ভিন্ রাজ্যেও কুমোরটুলির ওই সাজশিল্পের কদর রয়েছে। শোলার সাজ, শাড়ি, চাঁদবাহার, গয়না, মুকুট, মালা— এ সবই ওই সব দোকান থেকে কিনে নিয়ে যান উত্তরপ্রদেশ, বিহার, ঝাড়খণ্ড, ত্রিপুরার ব্যবসায়ীরাও। কিন্তু গত বছর থেকেই করোনার কারণে সাজশিল্পের সেই ব্যবসায় মন্দা চলছে। অথচ প্রতিমার সাজ তৈরির এই শিল্পের সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন বিভিন্ন জেলার কয়েক লক্ষ মানুষ। ফলে অতিমারি পরিস্থিতিতে ব্যবসার মন্দায় অর্থকষ্টে ভুগছেন তাঁরাও।

কুমোরটুলিতে প্রতিমার সাজসজ্জা তৈরির স্টুডিয়ো রয়েছে মন্টু দে-র। তিনি বলছেন, ‘‘গত বছরে তা-ও ৫০ শতাংশ ব্যবসা হয়েছিল। এ বার পুজোর সমেয় করোনার তৃতীয় ঢেউ আসতে পারে, এটা জানার পর থেকে আর কোনও ক্রেতাও আসছেন না। সাধারণত জুলাই থেকে আমাদের কাছে বায়না আসা শুরু হয়। এ বার এখনও পর্যন্ত ১০ শতাংশও বিক্রি হয়নি।’’ আর এক সাজশিল্প ব্যবসায়ী লালবাবু সাহু বলছেন, ‘‘অন্য বছরে এমন সময়ে ক্রেতাদের ভিড়ে কথা বলার সুযোগ পেতাম না। এ বার মাছি তাড়াচ্ছি। গত বছরেও এ বারের তুলনায় ভাল ব্যবসা হয়েছিল। এমন চলতে থাকলে তো আমাদের পথে বসতে হবে! গুদামঘরের ভাড়া, চার জন কর্মীর বেতন কী ভাবে দেব, তা নিয়ে চিন্তায় রয়েছি।’’

এ দিকে কুমোরটুলি থেকে বরাত না পেয়ে কার্যত মাথায় হাত রাজ্যের বিভিন্ন এলাকার সাজশিল্পীদের। দক্ষিণ ২৪ পরগনার আমতলার বাসিন্দাদের একাংশের পুজোর আগে রোজগার হয় প্রতিমার চুল তৈরি করে। তাঁদেরই এক জন, মুজিবর রহমান বলছেন, ‘‘এই সময়ে প্রতিমার চুল তৈরি করতে করতে মাথা তুলতে পারি না। করোনার জন্য কি এ বার আমাদের অন্য ব্যবসার কথা ভাবতে হবে?’’ প্রতিমার মুকুট তৈরির কাজে যুক্ত দমদমের কৌশিক ধর, শোলার মালা তৈরির কারিগর দক্ষিণ ২৪ পরগনার মন্দিরতলার শম্ভুনাথ মণ্ডলেরা জানাচ্ছেন, জরি-চুমকি-শোলা দিয়ে তৈরি মালার উপরেই নির্ভর করে তাঁদের সংসার। অথচ করোনার কারণে এ বারে কুমোরটুলি থেকে তেমন বরাতই পাচ্ছেন না তাঁরা।

শুধু স্থানীয় ভাবেই নয়, এ বার ভিন্ রাজ্যেও কমেছে প্রতিমার সাজশিল্পের চাহিদা। ‘কুমোরটুলি মৃৎশিল্পী সংস্কৃতি সমিতি’র সম্পাদক রণজিৎ সরকার বলছেন, ‘‘দুর্গাপুজোর মরসুমের দিকে চেয়েই আমাদের সারা বছর সংসার চলে। কিন্তু ভিন্ রাজ্য থেকে প্রতিমার সাজের জন্য বায়নার পরিমাণ গত বছরের চেয়েও এ বার কম এসেছে। যাঁরা সাজশিল্প তৈরি করেন, তাঁরা চরম দুর্ভোগে রয়েছেন।’’ বিহারে দুর্গাপুজো দশেরা উৎসব বলে পরিচিত। ছাপড়া জেলার সাহেবগঞ্জের বিজয় কুমার, দ্বারভাঙার আশুতোষ কুমার, পূর্ব চম্পারণের বিশাল কুমারেরা গাড়িতে করে কুমোরটুলি থেকে প্রতিমার সাজ পাইকারি দামে কিনে নিয়ে যান। ছাপড়া থেকে ফোনে বিজয় বলেন, ‘‘করোনার কারণে এখানে গত বছর বেশির ভাগ দশেরাই প্রতীকী হিসেবে পালন করা হয়েছিল। এ বার তৃতীয় ঢেউয়ের আতঙ্কে সবাই আরও বেশি সতর্ক।

তাই কলকাতা থেকে প্রতিমার সাজ আনাচ্ছি না।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Coronavirus Third Wave Durga Puja 2021
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy