কষ্ট: সুপ্রিম কোর্টে যাওয়ার জন্য আবেদনের লাইনে দাঁড়িয়ে চাকরিহারা এক শিক্ষকের বৃদ্ধ বাবা। বৃহস্পতিবার, শহিদ মিনারের পাদদেশে। ছবি: সুমন বল্লভ।
২০১৬ সালের এসএসসি পরীক্ষায় বসা সমস্ত পরীক্ষার্থীর ওএমআর শিট প্রকাশ করতে হবে। এই দাবিতে সল্টলেকে স্কুল সার্ভিস কমিশনের দফতরে সংগ্রামী যৌথ মঞ্চের অভিযান ঘিরে উত্তেজনা ছড়াল বৃহস্পতিবার দুপুরে।
ওই মঞ্চের তরফে জানানো হয়, এ দিন তাদের জনা পঞ্চাশেক সদস্য করুণাময়ী মেট্রো স্টেশন থেকে বেরোতেই তাঁদের আটকে দেওয়া হয়। তাঁরা জানান, শান্তিপূর্ণ ভাবেই স্কুল সার্ভিস কমিশনের দফতরে স্মারকলিপি দিতে যাবেন। কিন্তু কোনও কথাই শোনেনি পুলিশ। যৌথ মঞ্চের তরফে অনিরুদ্ধ ভট্টাচার্যের অভিযোগ, তাঁদের অনেককেই টেনেহিঁচড়ে পুলিশের গাড়িতে তুলে বিধাননগর উত্তর থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। তাঁদের সঙ্গে হাই কোর্টের রায়ে চাকরি হারানো কয়েক জন শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীও ছিলেন। তাঁদেরও রেয়াত করা হয়নি। অনিরুদ্ধ বলেন, ‘‘ওএমআর শিট নষ্ট করে ফেলা হয়েছে বলে স্কুল সার্ভিস কমিশন যে তথ্য দিচ্ছে, তা মিথ্যা। অনেক শিক্ষকের কাছেই নিজের পরীক্ষার ওএমআর শিটের স্ক্যান করা প্রতিলিপি আছে। তা হলে এসএসসি-র কাছে তা থাকবে না কেন? আমাদের দাবি, ২০১৬ সালের এসএসসি পরীক্ষার ২৩ লক্ষ ওএমআর শিট প্রকাশ করতে হবে।’’ যদিও এসএসসি-র চেয়ারম্যান সিদ্ধার্থ মজুমদারের দাবি, ‘‘নিয়ম অনুযায়ী, ওএমআর শিট এক বছর রেখে নষ্ট করে ফেলা হয়েছে।’’ মঞ্চের সদস্যেরা জানান, চাকরিহারা শিক্ষকেরা হাই কোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে যাচ্ছেন। তাঁদের সঙ্গে মঞ্চের কয়েক জন প্রতিনিধিও দিল্লি যাবেন।
এ দিকে, শহিদ মিনার চত্বরে এ দিনও দেখা যায়, চাকরি হারানো শিক্ষকেরা দিল্লি যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। নিজেদের এসএসসি পরীক্ষা সংক্রান্ত যাবতীয় নথি প্রতিনিধিদের কাছে জমা করেন তাঁরা। এর জন্য রাজ্যের বিভিন্ন জেলা থেকে চাকরিহারা শিক্ষকেরা এসেছিলেন। আলাদা করে বিভিন্ন জেলার অস্থায়ী ডেস্ক তৈরি করা হয়েছিল। সেখানেই নথি জমা নেওয়া হয়।
তীব্র গরমে নথি জমা দিতে এসে দীর্ঘক্ষণ লাইনে দাঁড়িয়ে ছিলেন শিক্ষক, শিক্ষিকা এবং শিক্ষাকর্মীরা। কারও কারও সঙ্গে এসেছেন তাঁদের অভিভাবকেরাও। কেউ আবার সঙ্গে নিয়ে এসেছেন ছোট সন্তানকে। ঠা ঠা রোদে শহিদ মিনারের মাঠে বসে এক হাতে ছেলের মাথায় ছাতা ধরে ছিলেন বীরভূম থেকে আসা শিক্ষিকা সুনীতা হোতে। অন্য হাতে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র গুছিয়ে নিচ্ছিলেন। নবম-দশমের ওই শিক্ষিকা বললেন, ‘‘তিন-চার বছর ধরে শিক্ষকতা করার পরে এটাই আমাদের পরিণতি! এত দিন পরে আবার যোগ্যতার প্রমাণ দিতে হবে! হাই কোর্টের এই রায়ে আমাদের পায়ের তলা থেকে মাটি সরে গিয়েছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy