এ বি এম হাটের এই সিঁড়ি থেকে উদ্ধার হয় ব্যবসায়ীর দেহ। রবিবার। নিজস্ব চিত্র
পাঁচতলায় সিঁড়ির উপরে উপুড় হয়ে পড়ে আছেন এক ব্যক্তি। পেট, গলা-সহ শরীরের একাধিক জায়গায় আঘাতের চিহ্ন। সেখান থেকে গলগল করে রক্ত বেরোচ্ছে। গোটা মেঝে ভেসে যাচ্ছে রক্তে। নিস্তেজ হয়ে পড়ে রয়েছেন ওই ব্যক্তি।
রবিবার সকাল ন’টা নাগাদ রাজাবাগান থানা এলাকার ব্যস্ত এ বি এম হাটের পাঁচতলার সিঁড়িতে ওই দৃশ্য দেখে থমকে গিয়েছিলেন স্থানীয় কয়েক জন ব্যবসায়ী। দ্রুত অন্যদের ডেকে আনার পাশাপাশি তড়িঘড়ি তাঁরা রাজাবাগান থানাতেও খবর দেন। খবর পেয়েই দ্রুত ঘটনাস্থলে চলে আসে রাজাবাগান থানার পুলিশ।এলাকা ঘিরে দেওয়ার পাশাপাশি শুরু হয় ওই ব্যক্তিকে উদ্ধারের তোড়জোড়। পরে হাসপাতালে চিকিৎসকেরা ওই ব্যক্তিকে মৃত ঘোষণা করেন। ঘটনাস্থলে আসে কলকাতা পুলিশের হোমিসাইড শাখা। বছরপঞ্চাশের ওই ব্যক্তির কী ভাবে, কখন মৃত্যু হয়েছে, তা নিয়ে ঘনিয়েছে রহস্য। প্রাথমিক ভাবে শরীরের একাধিক জায়গায় ধারালো কিছু দিয়েআঘাতের ফলেই ওই ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে বলে পুলিশের অনুমান। সকালে পরিচয় জানা না গেলেও এ দিন সন্ধ্যার পরে ওই ব্যক্তির পরিচয় জানা যায়। পুলিশ জানিয়েছে, মৃতের নাম মোবারক শেখ (৫৩)। বাড়ি দক্ষিণ ২৪ পরগনার রবীন্দ্রনগরে। তিনি পেশায় ব্যবসায়ী। এ দিন তাঁর দ্বিতীয় পক্ষের স্ত্রী দেহটি শনাক্ত করেন। মোবারক ব্যবসার প্রয়োজনেই এ বি এম হাটে গিয়েছিলেন কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে। গোটা ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে লালবাজারের হোমিসাইড শাখা। ময়না তদন্তের প্রাথমিক রিপোর্টে জানা গিয়েছে, শ্বাসরোধ করে ওই ব্যক্তিকে খুন করা হয়েছে।
রাজাবাগান থানা এলাকার এ বি এম হাটের ছ’তলা ভবনের প্রথম তিনটি তলায় ব্যবসায়ীদের দোকান থাকলেও বাকি অংশে নির্মাণকাজ চলছে। শনি এবং রবিবার সেখানে জামা-কাপড়ের পাইকারি ও খুচরো হাট বসে। ভিন্ রাজ্যের পাশাপাশি কলকাতা এবং শহরতলির ব্যবসায়ীরাও সেখানে আসেন। রাতেও অনেকে হাটে থেকে যান। হাটের নিজস্ব নিরাপত্তারক্ষীও রয়েছেন। রাতেও নিরাপত্তার ব্যবস্থা থাকে। জনবহুল এই হাটের একাংশে রক্তাক্ত দেহ উদ্ধারের পরে তাই নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন ব্যবসায়ীরা। স্থানীয় এক ব্যবসায়ী বলেন, ‘‘প্রতিদিন এখানে হাজার হাজার মানুষ আসেন ব্যবসার কাজে। সেখানে যদি এমন ঘটনা ঘটে, তা হলে তো আমাদের ব্যবসার ক্ষতি।’’
শনিবার রাতে তেমন কিছু চিৎকার-চেঁচামেচির আওয়াজ পাননি বলে জানাচ্ছেননিরাপত্তারক্ষীরা। স্থানীয় ব্যবসায়ীদের একাংশ গোটা ঘটনার পিছনে দুষ্কৃতী দৌরাত্ম্যের দিকেই আঙুল তুলছেন। ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, হাটের ভবনের নির্মীয়মাণ অংশে রাত হলেই আসামাজিক কাজের দৌরাত্ম্য বাড়ে। জায়গায় জায়গায় বসেমদের আসর। সেখানে বাইরে থেকেও লোকজন এসে জড়ো হন। এই অসামাজিক কাজের দৌরাত্ম্যের ফলেই এই খুন বলে ব্যবসায়ীদের অনুমান।
তদন্তে নেমে ইতিমধ্যেই গোটা ভবনের সিসি ক্যামেরারফুটেজ সংগ্রহ করেছেন তদন্তকারীরা। এক তদন্তকারী আধিকারিক বলেন, ‘‘প্রাথমিক ভাবে ওই ব্যক্তিকে খুন করা হয়েছে বলেই মনে হচ্ছে। যুবকের পরিচয় জানার চেষ্টা হচ্ছে। দেহ ময়না তদন্তে পাঠানো হয়েছে। সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখা হচ্ছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy