Advertisement
E-Paper

বাসের দেখা নেই, দিনভর নাকাল যাত্রীরা

সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার পরে এ দিন বেসরকারি বাস প্রায় অদৃশ্যই হয়ে যায় রাস্তা থেকে।

বাদুড়ঝোলা: ভিড়ে ঠাসা বাসে কোনও রকমে ওঠার চেষ্টা যাত্রীদের। সোমবার, এক্সাইড মোড়ের কাছে।

বাদুড়ঝোলা: ভিড়ে ঠাসা বাসে কোনও রকমে ওঠার চেষ্টা যাত্রীদের। সোমবার, এক্সাইড মোড়ের কাছে। ছবি: রণজিৎ নন্দী।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১১ জানুয়ারি ২০২২ ০৮:১৪
Share
Save

সপ্তাহের প্রথম কাজের দিন হওয়া সত্ত্বেও সোমবার বাসের তীব্র আকাল দেখা দি‌ল শহরে। সন্ধ্যা নামতে দেখা যায়, বাসের সংখ্যা আরও কমে গিয়েছে। এসপ্লানেড, শিয়ালদহ, ই এম বাইপাস, গড়িয়াহাট, আলিপুর, এক্সাইড, রাজাবাজার, সল্টলেক— সর্বত্রই ছিল প্রায় এক ছবি। ব্যস্ততম বিভিন্ন রুটে, যেখানে তিন-চার মিনিটের ব্যবধানেই বাস পাওয়া যায়, সেখানে সকালের দিকে ১০-১৫ মিনিট অপেক্ষা করতে হয়েছে। সন্ধ্যার পরে সেই অপেক্ষা ২০-২৫ মিনিটে গিয়ে ঠেকেছে। গঙ্গাসাগর মেলার জন্য দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা প্রশাসনের তরফে কিছু বেসরকারি বাস নেওয়া হলেও তাতে রাস্তায় বাসের সংখ্যা এতটা কমে যাওয়ার কথা নয় বলেই জানিয়েছেন খোদ বাসমালিক সংগঠনের নেতারা।

এ দিন এম আর বাঙুর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আত্মীয়কে দেখতে এসেছিলেন মল্লিকপুরের বাসিন্দা মন্টু সর্দার। গড়িয়া পর্যন্ত ট্রেনে এলেও সেখান থেকে টালিগঞ্জে আসার বাস পেতে নাজেহাল হতে হয়েছে তাঁকে। মেট্রোয় টোকেন বন্ধ থাকায় বাধ্য হয়ে অনেক বেশি টাকা দিয়ে অটোয় যাতায়াত করেন তিনি। বারুইপুরের বাসিন্দা গোপাল নস্কর জরুরি কাজে আলিপুরের প্রশাসনিক ভবনে এসেছিলেন। ফেরার পথে দুপুরের দিকে বাসের অপেক্ষায় তাঁকেও বহু ক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকতে হয়। শেষে ওঠেন অটোয়। দুপুরের দিকে লোকাল ট্রেন কম থাকায় যাত্রীদের অনেকেই বাসে গন্তব্যে পৌঁছনোর চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু পারেননি। দক্ষিণের মতো উত্তরেও হাওড়া স্টেশন থেকে সল্টলেক বা নিউ টাউনের বাস পেতে সমস্যা হয়েছে যাত্রীদের। সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার পরে এ দিন বেসরকারি বাস প্রায় অদৃশ্যই হয়ে যায় রাস্তা থেকে। সায়েন্স সিটি, রুবি, এক্সাইড ও এসপ্লানেডের মতো এলাকাতেও বাসের সংখ্যা ছিল হাতে গোনা।

বাসের আকালের মধ্যেই অবশ্য রমরমিয়ে ব্যবসা করেছে শাটল ট্যাক্সি। সন্ধ্যা নামতেই পার্ক স্ট্রিট, রাসবিহারী, হাজরা, গড়িয়াহাট ও পার্ক সার্কাসের মতো অঞ্চলে চোখে পড়েছে হলুদ ট্যাক্সির রমরমা। রাস্তায় সরকারি বাস চললেও প্রয়োজনের তুলনায় তা ছিল যথেষ্টই কম। সরকারি নন-এসি বাসে যাত্রীদের ঠাসাঠাসি ভিড়ের দৃশ্যও চোখে পড়েছে।

বাসমালিক সংগঠনগুলি অবশ্য জানিয়েছে, যাত্রী হঠাৎ কমে যাওয়ার ফলেই বাস কমে গিয়েছে। এ দিন ‘মিনিবাস অপারেটর্স কোঅর্ডিনেশন কমিটি’র সাধারণ সম্পাদক স্বপন ঘোষ বলেন, ‘‘সংক্রমণ নিয়ে আশঙ্কা বেড়েছে। তার মধ্যে স্কুল-কলেজ, অফিস— অনেক কিছুই বন্ধ। একটি ট্রিপে সাকুল্যে ৫০-৬০ জন যাত্রীও মিলছে না। তাই ক্ষতির আশঙ্কায় কেউই বাস নামাতে চাইছেন না।’’ ‘বাস-মিনিবাস সমন্বয় সমিতি’র সাধারণ সম্পাদক রাহুল চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘সার্বিক লকডাউন হলে তবু আমাদের কিছুটা সুরাহা হত। সে ক্ষেত্রে বিমার খরচ এবং গাড়ির জ্বালানি খাতে বিপুল লোকসানের ভার খানিকটা কমত। বাস চালিয়ে তেলের খরচও উঠছে না।’’ ‘সিটি সাবার্বান বাস সার্ভিস’-এর টিটু সাহা জানালেন, সংক্রমণ বাড়তে থাকায় বারুইপুর, সোনারপুর-সহ একাধিক অঞ্চলে বাজারহাট প্রশাসনের নির্দেশে বন্ধ থাকছে। এর ফলে যাত্রী আরও কমেছে। তাঁর কথায়, ‘‘বাস চালিয়ে আয় না হওয়ায় বহু রুটের বাসই সপ্তাহে দু’-তিন দিন অন্তর পালা করে চলছে। তাতেও বাসের সংখ্যা কমেছে।’’

পরিস্থিতি সামাল দিতে বাসের স্বাস্থ্য সংক্রান্ত শংসাপত্র নেওয়া এবং পথকর মেটানোর ক্ষেত্রে দেরির জন্য জরিমানা মকুবের দাবি জানিয়েছে বাসমালিক সংগঠনগুলি।

Bus Coronavirus in Kolkata corona

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

{-- Slick slider script --}}