Advertisement
২৪ নভেম্বর ২০২৪
Cyclone Amphan

করোনা-ঘূর্ণিঝড়ের জোড়া ধাক্কায় বিপর্যস্ত ফুলবাজার 

সারা বাংলা ফুলচাষি ও ফুল ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক নারায়ণচন্দ্র নায়েক জানান, ফুলচাষি, ব্যবসায়ী, যাঁরা ফুল পাড়েন, মালা গাঁথেন, যাঁরা ফুলের পরিচর্যা করেন— রাজ্যে এমন প্রায় ৮০ হাজার মানুষ সঙ্কটে।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

প্রবাল গঙ্গোপাধ্যায়
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৩ মে ২০২০ ০১:৫৩
Share: Save:

একা করোনায় রক্ষা ছিল না। এ বার জুড়ল আমপান।

দীর্ঘ লকডাউনের কারণে ৭ এপ্রিল পর্যন্ত বন্ধ ছিল মল্লিকঘাট ফুলবাজার। এর পরে দূরত্ব-বিধি মেনে দুপুর ২টো পর্যন্ত বাজার চলার শর্তে সেখানে ফুল নিয়ে আসার অনুমতি পেয়েছিলেন চাষিরা। ধীরে ধীরে শুরু হয়েছিল ব্যবসা। কিন্তু তার পরপরই ঘূর্ণিঝড় আমপান জেলায় জেলায় ফুলের বাগান ধ্বংস করে দিয়েছে। যার ফলে আগামী এক-দেড় মাস কলকাতা শহরেও ফুলের জোগানে টান পড়বে বলে জানাচ্ছেন চাষিরা।

চাষিরা জানান, বুধবার রাতে ঝড়ের পরে মল্লিকঘাট ফুলবাজার খুলেছে ঠিকই। কিন্তু, ঝড়বৃষ্টিতে প্রচুর ফুল নষ্ট হওয়ায় বাজারে পর্যাপ্ত ফুল পৌঁছচ্ছে না। এই অবস্থায় দাম বাড়ার আশঙ্কা রয়ে যাচ্ছে। চাষিরা আরও জানান, বৈশাখ মাসে করোনার জন্য বাতিল হয়েছে বহু বিয়ের অনুষ্ঠান। তার জন্য ফুল ফেলে দিতে হয়েছে। এই সময়ে মূলত চাহিদা থাকে বেল, জুঁই, রজনীগন্ধা, গাঁদা, জবার মতো ফুলের। কিন্তু ঝড়ের দাপটে ঝরে গিয়েছে সেই সব ফুলের কুঁড়ি।

সারা বাংলা ফুলচাষি ও ফুল ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক নারায়ণচন্দ্র নায়েক জানান, ফুলচাষি, ব্যবসায়ী, যাঁরা ফুল পাড়েন, মালা গাঁথেন, যাঁরা ফুলের পরিচর্যা করেন— রাজ্যে এমন প্রায় ৮০ হাজার মানুষ সঙ্কটে। তিনি বলেন, ‘‘অতিমারি ও ঘূর্ণিঝড়ের জোড়া বিপর্যয়ে ফুলচাষিরা চরম সঙ্কটে। এর আগে রাজ্য সরকারের কাছে অনুরোধ করার পরে ফুলবাজার খোলার অনুমতি মিলেছিল। আগামী সপ্তাহে আমরা সরকারকে অনুরোধ জানাব, যাতে ফুলচাষিদেরও ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা করা হয়। না-হলে দুর্গাপুজোর আগে ফুলের চাষ করার মতো আর্থিক সামর্থ্য তাঁদের নেই।’’

চাষিদের দাবি, ফল বা আনাজের মতো হিমঘরে ফুল রাখার ব্যবস্থা এ রাজ্যে নেই। ফলে প্রতিদিন বিক্রির পরেও অনেক ফুল ফেলে দিতে হয়। লকডাউন চলায় মেদিনীপুর বা দূরের অন্য জেলা থেকে ফুল নিয়ে মল্লিকঘাট পৌঁছতেই বেলা ১১টা বেজে যাচ্ছে। আবার ২টোর মধ্যে বাজার বন্ধ হয়ে যাওয়ায় ক্রেতার জন্য অপেক্ষা করতে না-পেরে ফড়েদের কম দামে সেই ফুল বেচতে বাধ্য হচ্ছেন চাষিরা। তাঁরা জানান, গ্ল্যাডিয়োলি, গোলাপ, জবা, রজনীগন্ধা-সহ বিভিন্ন ধরনের ফুলের চাষ হয় দুই মেদিনীপুরে। দক্ষিণ ২৪ পরগনায় জবা, গাঁদা, উত্তর ২৪ পরগনায় টগর, গাঁদা, জবা, দোপাটি ও নদিয়ায় রজনীগন্ধার চাষ হয়। ঘূর্ণিঝড়ে সব শেষ।

মল্লিকঘাটে রোজ ফুল নিয়ে আসেন কোলাঘাটের চাষি গৌরীশঙ্কর ঘাঁটা। তিনি বলেন, ‘‘একেই করোনার জন্য প্রচুর ক্ষতি হয়েছে। তার উপরে ঝড়ে সব তছনছ হয়ে গেল। এর পরে দুর্গাপুজোর আগে ফুল চাষের প্রস্তুতি নিতে হবে। তার মধ্যে জুলাইয়ে রয়েছে বন্যার ভ্রুকুটি। ফলে এখন সরকারের সাহায্য না-পেলে ঘুরে দাঁড়ানোর রাস্তা নেই।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Mallikghat Flower Market Cyclone Amphan
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy