তিন দিন ধরে এমনই বিক্ষোভ চলছে কলকাতার নানা এলাকায়। ছবি: পিটিআই।
পাঁচ দিন হয়ে গেল আমপান গিয়েছে। আজও বিদ্যুত্ ফেরেনি কলকাতার অনেক এলাকায়। দক্ষিণ কলকাতার বেহালা, টালিগঞ্জ, যাদবপুর, সন্তোষপুরের বিস্তীর্ণ অঞ্চলে টানা বিপর্যয়ে নাজেহাল মানুষ এ দিনও নেমে পড়েন রাস্তায়। অবরোধ হল থানাতে। এমনকি বিদ্যুৎকর্মীদের আক্রান্ত হওয়ারও খবর মিলেছে। পরিস্থিতি নিয়ে আবারও ক্যালকাটা ইলেকট্রিক সাপ্লাই কর্পোরেশন বা সিইএসসি-র দিকে আঙুল তুললেন কলকাতা পুরসভার প্রশাসক বোর্ডের চেয়ারম্যান ফিরহাদ হাকিম। ক্ষোভের সুরেই তিনি এ দিন বলেন, “এনাফ ইজ এনাফ। অনেক হয়েছে। অবিলম্বে যা করার করুন। লোকে আর কত সহ্য করবে!”
গত বুধবার বিকেলে ভয়ঙ্কর ঘূর্ণিঝড় আমপান (প্রকৃত উচ্চারণ উম পুন) আছড়ে পড়ার পর, কলকাতার অধিকাংশ এলাকাই বিদ্যুৎহীন হয়ে পড়ে। তার পর কেটে গিয়েছে পাঁচ দিন। বিদ্যুত্ না থাকার ফলে জল নেই বহু আবাসন এবং বাড়িতে। “সহ্যের সীমা পেরিয়ে গিয়েছে আমাদের। আর পারা যাচ্ছে না”— প্রিন্স আনোয়ার শাহ রোডে রাস্তা অবরোধে নেমে এ ভাবেই ক্ষোভে ফেটে পড়েন স্থানীয় এক হাইরাইজের মহিলা বাসিন্দা।
সোমবার ফিরহাদ হাকিম বলেন, “কলকাতায় প্রায় সাড়ে পাঁচ হাজার গাছ পড়েছে। ১৭ হাজার কর্মী কাজ করছেন। আমরা সবাইকে নিয়ে কাজ করার চেষ্টা করছি। কেন এত দেরি হচ্ছে? সিইএসসি –কে বলেছি, আপনারা কি বুঝতে পারেননি যে কী হতে চলেছে? অনবরত চাপ সৃষ্টি করেছি। বেহালা, যাদবপুর, টালিগঞ্জে এখনও সমস্যা রয়েছে।”
সোমবার কলকাতা পুরসভায় ফিরহাদ হাকিম। —নিজস্ব চিত্র।
আরও পড়ুন: করোনার উপসর্গ নিয়ে কনস্টেবলের মৃত্যু, পুলিশ বিক্ষোভ গরফা থানায়
কলকাতা পুরসভা ছাড়াও বিপর্যয় মোকাবিলায় কাজ করেছে সেনা, জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী, কলকাতা পুলিশ এবং দমকল কর্মীরা। সিইএসসি-র দাবি, বিদ্যুৎ বন্টনকারী ওই সংস্থার তরফে জানানো হয়েছে, কলকাতা শহরের ৯৫ শতাংশ জায়গায় পরিষেবা স্বাভাবিক করা গিয়েছে। এখনও কিছু এলাকায় বিদ্যুৎ নেই। ওয়ার্ড ধরে ধরে কাজ চলছে।
বিদ্যুৎ না থাকার কারণে বহুতলে পাম্পে করে জল তোলা যাচ্ছে না। ফ্রিজ বন্ধ। খাবারদাবার রাখা যাচ্ছে না। ফোনের চার্জ শেষ। সোমবার বেহালা পর্ণশ্রী এলাকার বাসিন্দারা থানা ঘেরাও করে অভিযোগ তোলেন, সিইএসসি-র কোনও কর্মীর দেখা নেই এ কদিন ধরে। বাধ্য হয়েই থানার সামনে বিক্ষোভ দেখাতে হচ্ছে বলে জানান এলাকাবাসীরা। বেহালার বনমালী নস্কর রোড, সরশুনা, শিবরামপুর, শকুন্তলা পার্ক-সহ বিভিন্ন এলাকায় একই সমস্যা।
বিক্ষোভ চলছে চারু মার্কেট থানার সামনেও। সেখানকার বাসিন্দারা জানাচ্ছেন, কবে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে, অন্তত সিইএসসি-র তরফ থেকে এলাকাবাসীদের সঙ্গে কথা বলা উচিত ছিল। চারু মার্কেট থেকে কিছুটা দূরেই প্রিন্স আনোয়ার শাহ রোডে তালতলার কাছেও চলছে বিক্ষোভ। রাস্তা অবরোধ। যত ক্ষণ না পর্যন্ত বিদ্যুৎ আসবে, এই বিক্ষোভ চলবে বলে জানিয়েছেন অবরোধকারীরা। গরফা থানা এলাকার সাঁপুইপাড়াতে বিক্ষোভ দেখান স্থানীয় বাসিন্দারা। অভিযোগ, প্রশাসন বা সিইএসসি কারও দেখা নেই। বয়স্কদের ভীষণ অসুবিধা হচ্ছে। সন্তোষপুর, যাদবপুরের বিভিন্ন এলাকাতেও একই অবস্থা।
আরও পড়ুন: ঝোড়ো হাওয়ার সঙ্গে এ বার বৃষ্টিতে ভাসবে উত্তরের জেলাগুলি
ফিরহাদ হাকিম বলেন, “সিইএসসি একটা বেসরকারি সংস্থা। তাঁদের অনুরোধ করা হচ্ছে, যাতে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করা যায়। আমার চাপও সৃষ্টি করছি। আমি ওদের বলেছি, এনাফ ইজ এনাফ।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy