প্রতীকী ছবি
শহরের রাস্তায় গাছ পড়ে থাকাটা প্রতীকী। অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় আসলে কলকাতায় কোভিড নিয়ন্ত্রণের পথে কাঁটা বিছিয়ে দিয়েছে। রোগীর পরিজন তো বটেই, দুর্যোগের পাকে রোগীদের নমুনা সংগ্রহের ব্যবস্থা করতে গিয়েও হিমশিম অবস্থা একাধিক বেসরকারি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের।
রিপন স্ট্রিটের বাসিন্দা, বছর পঞ্চাশের প্রৌঢ়ের অভিজ্ঞতা এমনই। তাঁর দাদা হাওড়ার বাসিন্দা এবং নিজে চিকিৎসক। ছ’দিন ধরে জ্বর, শুকনো কাশি ও পেটের গন্ডগোল থাকায় ভাইয়ের যে দ্রুত কোভিড পরীক্ষা করানো প্রয়োজন, তা বুঝতে পেরে সকাল থেকেই একাধিক জায়গায় চেষ্টা করছিলেন তিনি। কিন্তু কোথাও নমুনা সংগ্রহ করাতে পারেননি। বৃহস্পতিবার বিকেলে ওই রোগীর চিকিৎসক দাদা জানান, পেটের গন্ডগোলে ভাই দুর্বল হয়ে পড়ায় তাঁকে বেলুড়ের একটি হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। কিন্তু সেখানে ভর্তির পরেই জ্বরের সঙ্গে শুরু হয় শুকনো কাশি। তাই এ দিন সকাল থেকে করোনা পরীক্ষার জন্য নমুনা সংগ্রহের তৎপরতা শুরু হয়।
বেলুড়ের হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানান, রাস্তায় জল জমে থাকায় বেসরকারি পরীক্ষাগার থেকে কেউ নমুনা সংগ্রহের জন্য আসতে রাজি হচ্ছেন না। এই পরিস্থিতিতে সল্টলেকের এইচসি ব্লকের একটি বেসরকারি হাসপাতালের সঙ্গে যোগাযোগ করেন রোগীর চিকিৎসক দাদা। কিন্তু ঘূর্ণিঝড়ে আইসোলেশন ওয়ার্ডের পরিকাঠামো নষ্ট হয়ে যাওয়ায় সেখানে এখন নতুন রোগী ভর্তি করা হচ্ছে না বলে জানানো হয়। আনন্দপুরের একটি বেসরকারি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষও শয্যার অভাবের কথা জানান।
বেলেঘাটা আইডি-তে ওই চিকিৎসকের এক জন পরিচিত রয়েছেন। তিনি জানান, নমুনা পরীক্ষায় কোভিডের অস্তিত্ব না মিললে সেখানে ভর্তি করানো যাবে না। ই এম বাইপাসের একটি কোভিড হাসপাতালও একই কথা বলে দেয়। রোগীর চিকিৎসক দাদা জানিয়েছেন, এইচসি ব্লকের বেসরকারি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ রাতে এক বার যোগাযোগ করতে বলেন। শেষ পর্যন্ত ইতিবাচক জবাব না আসায় একবালপুরের একটি নার্সিংহোমে ভাইকে ভর্তি করিয়ে কোভিড পরীক্ষা করানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন চিকিৎসক দাদা।
আমপান-পরবর্তী পরিস্থিতিতে নমুনা পরীক্ষা করাতে গিয়ে প্রতিকূলতার সম্মুখীন হচ্ছেন বেসরকারি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষদের একাংশও। বাগবাজারের একটি বেসরকারি হাসপাতাল সূত্রের খবর, বি কে পাল অ্যাভিনিউয়ের বাসিন্দা, বছর সাতান্নর এক মহিলা হার্নিয়ার অস্ত্রোপচারের জন্য সেখানে ভর্তি রয়েছেন। সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে অস্ত্রোপচারের আগে রোগিণীর কোভিড পরীক্ষা করানো প্রয়োজন। কিন্তু তা সম্ভব হয়নি। কারণ, একে তো শহরের একাধিক রাস্তায় গাছ পড়ে থাকার কারণে পরীক্ষাগারে নমুনা পাঠাতে গিয়ে বেগ পেতে হচ্ছে। তার উপরে শহরের একটি বেসরকারি পরীক্ষাগার ঘূর্ণিঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় সেখানে এ দিন নমুনা পাঠানো যায়নি বলে খবর।
শুধু কি তা-ই? আমপানের কারণে কোভিড পজ়িটিভ রোগীর মৃতদেহও তিন দিন ধরে বাগবাজারের বেসরকারি হাসপাতালে পড়ে রয়েছে। জোড়াবাগানের বাসিন্দা, বছর সত্তরের ওই বৃদ্ধের মঙ্গলবার সকালে মৃত্যু হয়েছে। বেসরকারি হাসপাতালের ম্যানেজার
দিগ্বিজয় নায়েক বলেন, ‘‘আমাদের মৃতদেহ রাখার মতো পরিকাঠামো নেই। সাধারণত, কলকাতা পুরসভা দেহ নিয়ে যায়। কিন্তু প্রাকৃতিক দুর্যোগের মধ্যে শহরের যা অবস্থা, তাতে পুরসভাও এখন অসহায়।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy