শপিং মল খোলার প্রথম দিনেই শুরু কেনাকাটা। সোমবার, প্রিন্স আনোয়ার শাহ রোডে। ছবি: দেবস্মিতা ভট্টাচার্য
দূরে দাঁড়িয়েই কয়েক জোড়া পোশাক দেখে শপিং মলের কর্মীকে এক মহিলার প্রশ্ন, ‘‘পোশাকগুলো আমার আগে কত জন হাতে নিয়ে দেখেছেন, সত্যি বলুন।’’ খানিক বিব্রত ওই কর্মী জানালেন, তিনিই প্রথম। আশ্বস্ত হয়ে মহিলার মন্তব্য, ‘‘যত দেরি করব, তত ভিড় বাড়বে। কে, কোথা থেকে এসে ছুঁয়ে রেখে যাবে, সেই ভয়েই প্রথম দিন দরকারি জিনিস কিনতে চলে এসেছি।’’
পঞ্চম দফার লকডাউনে ছাড় পেয়ে সোমবারই প্রথম খুলল শহরের শপিং মলগুলি। ছোঁয়াচ-বিধির তোয়াক্কা না-করে প্রথম দিনই ভিড় জমিয়েছিলেন অনেকে। একই পোশাকের টানে এক জায়গায় ভিড় না-করার বিধিও ভুলেছেন তাঁরা। পোশাক বিপণির পাশাপাশি সব চেয়ে বেশি ভিড় বিউটি পার্লারগুলিতে। একটি পার্লার থেকে বেরোনোর মুখে সুলগ্না হালদার নামে এক তরুণী বললেন, ‘‘আমি এখানে ছাড়া চুল কাটাই না। পরে লোক বাড়বে, তাই আজই এলাম। তখন আর বাড়ি থেকে ছাড়বে না।’’ প্রিন্স আনোয়ার শাহ রোডের একটি মলে মায়ের সঙ্গে ট্রাউজার্স কিনতে আসা তন্ময় দত্তের চিন্তা, ‘‘আবার যদি লকডাউন হয়! তাই প্রথম দিনই চলে এলাম।’’
বিভিন্ন মলের কর্তৃপক্ষ বেশি চিন্তিত ভিড় নিয়ন্ত্রণের কৌশল নিয়ে। দক্ষিণ কলকাতার একটি শপিং মলের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার দীপ বিশ্বাস বললেন, ‘‘৭ লক্ষ ২০ হাজার বর্গফুট জায়গা নিয়ে আমাদের মল। সতর্কতা মানতে এক-এক জনের ৭৫ বর্গফুট জায়গা প্রয়োজন। সেই হিসেবে একটি নির্দিষ্ট সময়ে ২০ হাজার লোককে ঢুকতে দিতে পারি। অকারণ ভিড় এড়াতেই হবে।’’ তবে ওই মলে ব্যাগ নিয়ে প্রবেশ নিষিদ্ধ। কর্তৃপক্ষের দাবি, ছোঁয়াচ এড়াতে ব্যাগ পরীক্ষা করা হবে না। তাই এই সিদ্ধান্ত।
আরও পড়ুন: দুর্ভোগ সয়েই উপস্থিতি অফিসে
পার্ক সার্কাসের একটি শপিং মল আবার মোবাইল অ্যাপের মাধ্যমে আগাম মলে ঢোকার ‘স্লট’ বুক করতে বলছে। মলের আধিকারিক সঞ্জীব মেহরার কথায়, ‘‘আমরা তিন হাজার লোককে ঢুকতে দিতে পারি। ভিড়ে দাঁড়াবেন কেন! এটা অনেকটা অনলাইনে টিকিট কাটার মতো।’’
কিন্তু এত নিয়মেও দূরত্ব থাকছে কই! শহরের প্রতিটি শপিং মলেই এ দিন যুগলের ভিড়। ফুড কোর্ট থেকে ‘সেলফি জ়োন’, কোথাওই দূরত্ব-বিধি মানার বালাই নেই তাঁদের। নাগেরবাজারের একটি মলে একসঙ্গে আসা আট যুগলের একটি দলকে আবার দেখা গেল, ফুড কোর্টেই জন্মদিন পালন করতে। ছোঁয়াচ বাঁচানোর চেষ্টাও নেই। দলের এক জন বললেন, ‘‘আর বারণ করবে কী করে! এত দিন ঘরবন্দি থেকে বুঝেছি, শপিং মলের মর্ম কী!’’
বাইপাসের একটি শপিং মলে মাস্কহীন এক তরুণীকে আবার দেখা গেল, ভিতরে ঢুকতে দেওয়ার জন্য কাতর অনুরোধ জানাচ্ছেন। তাঁর দাবি, ‘‘মাস্ক কিনতেই তো শপিং মলে এসেছি। ঢুকতে না-দিলে কিনব কী করে!’’ শেষে মাস্ক কিনে দেখিয়ে যাবেন, এই শর্তে, সঙ্গে থাকা রুমাল মুখে বেঁধে ভিতরে ঢোকার অনুমতি দেওয়া হল তাঁকে।
ওই সময়ে পাশ দিয়ে যাওয়া এক মধ্যবয়সি বললেন, ‘‘দিন দুই কেটে গেলে নিয়মের এই কড়াকড়ি থাকবে তো?’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy