প্রতীকী ছবি।
আবাসনের তেতলা থেকে পড়ে রহস্যজনক ভাবে মৃত্যু হল কোভিড আক্রান্ত এক বৃদ্ধের। বুধবার সকাল সওয়া ছ’টা নাগাদ ঘটনাটি ঘটেছে নারকেলডাঙা মেন রোডের একটি আবাসনে। পুলিশের অনুমান, ৭৩ বছরের ওই বৃদ্ধ আত্মঘাতী হয়েছেন। তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, ময়না-তদন্তের প্রাথমিক রিপোর্টে বলা হয়েছে, উপর থেকে পড়ে মৃত্যু হয়েছে বৃদ্ধের। তবে এটি আত্মহত্যা না দুর্ঘটনা, ফরেন্সিক পরীক্ষার পরে তা স্পষ্ট হবে।
পুলিশ সূত্রের খবর, ফুলবাগান থানা এলাকার ১০৮/ বি নারকেলডাঙা মেন রোডে একটি আবাসনের তেতলায় স্ত্রী ও দুই ছেলেকে নিয়ে থাকতেন ওই বৃদ্ধ। তাঁর মেয়ের বিয়ে হয়ে গিয়েছে। তিনি থাকেন রুরকিতে। এ দিন সকালে আবাসনের অন্য বাসিন্দারা রক্তাক্ত অবস্থায় বৃদ্ধকে আবাসন চত্বরে পড়ে থাকতে দেখে থানায় খবর দেন। পরে ঘটনাস্থলে আসেন কলকাতা পুলিশের ডিসি (এসইডি) অজয় প্রসাদও।
পরিবারের লোকজন পুলিশকে জানিয়েছেন, কিছু উপসর্গ থাকায় গত ২৭ জুলাই করোনা পরীক্ষা করান বৃদ্ধ। বাড়ির বাকি সদস্যদেরও করোনা পরীক্ষা হয়। তাঁদের রিপোর্ট নেগেটিভ এলেও বৃদ্ধের রিপোর্ট পজ়িটিভ আসে। চিকিৎসক তাঁকে গৃহ-পর্যবেক্ষণে থাকতে বলেন। পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলে পুলিশের অনুমান, করোনা রিপোর্ট পজ়িটিভ আসায় বৃদ্ধ অবসাদে ভুগছিলেন।
আরও পড়ুন: তৃতীয় লিঙ্গের জন্য বেসরকারি বাসে ‘ত্রি-ধারা’ আসন
পুলিশ আরও জেনেছে, সম্প্রতি ওই বৃদ্ধ দু’কোটি টাকা দিয়ে একটি ফ্ল্যাট কিনেছিলেন। কিন্তু সেটির টাকা মেটালেও কিছু জটিলতার জন্য ফ্ল্যাট হাতে পাননি। তা নিয়ে চিন্তায় ছিলেন তিনি। তার উপরে করোনা ধরা পড়া। সব মিলিয়ে হতাশা থেকেই তিনি ঝাঁপ দিয়ে আত্মঘাতী হয়েছেন বলে অনুমান।
এর আগে কলকাতা শহরে করোনা রোগীর অস্বাভাবিক মৃত্যু না-ঘটলেও সম্প্রতি করোনা আক্রান্ত এক রোগী কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল থেকে ঝাঁপ দিয়ে আত্মঘাতী হওয়ার চেষ্টা করেছিলেন। ভিন্ রাজ্যে, বিশেষত দিল্লিতে করোনা রোগীর ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যার ঘটনাও সামনে এসেছে। এর পিছনে এই রোগ নিয়ে সাধারণের সচেতনতার অভাবকেই দায়ী করেছেন অনেকে। মনোরোগ চিকিৎসকদের মতে, করোনা সম্পর্কে ভুল ধারণা থেকে অনেকে মানসিক ভাবে বিধ্বস্ত হয়ে পড়ছেন। করোনা হলে অনেক ক্ষেত্রে কোনও পরিবারকে একঘরে করে রাখা হচ্ছে। তার উপরে কোনও পরিবারে এক জন আক্রান্ত হলে তিনি ভয় পাচ্ছেন, তাঁর থেকে বাকিদের মধ্যেও সংক্রমণ ছড়াতে পারে। ফলে ভয় বা চিন্তা থেকে সেই ব্যক্তির মনে দেখা দিচ্ছে হতাশা। তখনই পরিবারের বাকিদের বাঁচানোর মানসিকতা থেকে তিনি আত্মহত্যার পথ বেছে নেওয়ার কথা ভাবছেন।
মনোরোগ চিকিৎসক প্রথমা চৌধুরী বলেন, ‘‘অবৈজ্ঞানিক চিন্তা-ভাবনা, আক্রান্ত ব্যক্তি বা পরিবারকে একঘরে করে রাখার প্রবণতা— সব মিলিয়ে সামাজিক চাপ তৈরি হচ্ছে আক্রান্তের উপরে। যা থেকে হতাশা গ্রাস করছে। কিন্তু এটাও অনেক ক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে, শরীরের অন্য অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের পাশাপাশি মস্তিষ্কেরও ক্ষতি করছে করোনা। সেটা থেকেও অবসাদ আসছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy