কোনও পুজোর সুরে ফুটিয়ে তোলা হচ্ছে আমপানের সময়ে সাধারণ মানুষের জীবনযুদ্ধ। কোনও পুজো কমিটির থিম সং আবার বার্তা দিচ্ছে, এই গভীর অসুখকে সরিয়ে এক দিন ফের করোনামুক্ত হবে এই পৃথিবী। এ বারের দুর্গাপুজোয় করোনা এবং আমপানের সঙ্গে মানুষের লড়াইয়ের গল্প এ ভাবেই উঠে আসছে শহরের বেশ কয়েকটি পুজোর থিম মিউজ়িকে।
যেমন গৌরীবেড়িয়ার একটি পুজোর থিমের গান গাইবেন এক করোনাজয়ী। ওই পুজো কমিটির কর্মকর্তারা জানাচ্ছেন, তাঁদের এ বারের থিম ‘লড়াই’— আর এ বছর তো মানুষের লড়াই কোভিডের সঙ্গেই। ওই পুজো কমিটির যুগ্ম সম্পাদক মান্টা মিশ্র বলেন, “এক করোনাজয়ী আমাদের পুজোর থিম সং গাইছেন। তাঁর সঙ্গে আছে পাড়ার ছেলেমেয়েরা। কী ভাবে তিনি করোনা-জয় করে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে এলেন, গানে থাকছে সেই কথাই। মণ্ডপে আসা দর্শনার্থী তাঁর গান শুনে উদ্বুদ্ধ হবেন।”
শুধু কোভিডই নয়, এ বারের পুজোয় আমপান-বিধ্বস্ত মানুষ ও তাঁদের লড়াইয়ের কথাও ফুটে উঠবে বেশ কিছু পুজো কমিটির গানে। বেলগাছিয়ার একটি পুজোর মণ্ডপে এ বারে বাঁশির সুরে আমপানে মানুষের কষ্টের কথা ফুটিয়ে তুলবেন এক শিল্পী।
ওই পুজো কমিটির যুগ্ম সম্পাদক জয়দীপ সাহা বলেন, ‘‘যে শিল্পী এই বাঁশি বাজাবেন তাঁর বাড়ি কাকদ্বীপে। তবে তিনি থাকেন উল্টোডাঙায়। আমপানে তাঁর নিজের বাড়িও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তাই আমপানের কারণে কাকদ্বীপে তাঁর এবং তাঁর প্রতিবেশীদের যা ক্ষতি হয়েছে, সেই অনুভূতিটুকুই ফুটিয়ে তুলেছেন বাঁশির করুণ সুরে। মণ্ডপে সেই বাঁশি শোনার সঙ্গে সঙ্গে ওই শিল্পীকেও দেখতে পাবেন দর্শনার্থীরা।” তবে পুজোর কর্মকর্তারা জানালেন, বাঁশিতে শুধু বিষাদই নয়, আমপানের তাণ্ডবে ভেঙে যাওয়া বাড়িঘর ফের নতুন করে গড়ে তোলার লড়াইও ফুটে উঠবে। কারণ তাঁদের এ বারের পুজোর থিমও হল লড়াই।
ঠাকুরপুকুরের একটি ক্লাবের কর্মকর্তারা জানাচ্ছেন, করোনা পরিস্থিতির মধ্যে এ বারের পুজোমণ্ডপে গান বাজানোর মতো মানসিকতা তাঁদের নেই। তাই মণ্ডপে থিম সঙের বদলে হবে থিম ভাষ্যপাঠ। ওই পুজো কমিটির এক কর্তা সঞ্জয় মজুমদার বলেন, “আমাদের পুজোর থিম জীবনযুদ্ধ। তাই ভাষ্যপাঠেও জীবনযুদ্ধকে ফুটিয়ে তোলা হবে। এক খ্যাতনামা শিল্পী আমাদের পুজোর ভাষ্যপাঠ করবেন। সেটাই বাজানো হবে পুজোমণ্ডপে।” করোনা আবহে পরিযায়ী শ্রমিক, রাজমিস্ত্রি এমনকি কম বেতনে কাজ করা নাট্যকর্মীদের জীবনযুদ্ধের কথাই উঠে আসবে তাঁদের পুজোমণ্ডপের ওই ভাষ্যপাঠে।
তেঘরিয়ার একটি পুজো কমিটি আবার জানাচ্ছে, প্রথাগত থিম মিউজ়িকের বাইরে বেরিয়ে এ বার পুজোমণ্ডপে অ্যানিমেশনের সাহায্যে করোনা নিয়ে সচেতনতার বার্তা দেবেন তাঁরা। ওই পুজোর উদ্যোক্তাদের মতে, করোনার সঙ্গে এখনও অনেক দিনই হয়তো আমাদের ‘ঘর’ করতে হবে। তাই ভবিষ্যতেও সকলকে সচেতন থাকতে হবে। পুজোমণ্ডপে সেই সচেতনতার বার্তাই অ্যানিমেশনের সাহায্যে দেবেন তাঁরা।
চক্রবেড়িয়ার একটি পুজোর থিম মিউজ়িকেও থাকছে বাঁশির সুর। ওই পুজোর এক কর্মকর্তা তিমির সরকার জানান, মণ্ডপসজ্জার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে করোনা পরিস্থিতির মধ্যেই আলোয় ফেরার গল্পই বলবে তাঁদের এ বারের থিম মিউজ়িক।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy