কাজের সময়ে মিটিং-মিছিল নিয়ে কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির ক্ষোভ প্রকাশের দিনেই খোদ শাসক দলের মিছিলে কার্যত স্তব্ধ হয়ে গেল শহরের প্রাণকেন্দ্র।
পুরভোটের গণনা পিছনোর প্রতিবাদে মঙ্গলবার কলেজ স্ট্রিট থেকে ধর্মতলার ডোরিনা ক্রসিং পর্যন্ত মিছিল করে তৃণমূল। তার জেরে যথারীতি নাকাল হন মানুষ। এ দিনই একটি জনস্বার্থ মামলার শুনানিতে হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি মঞ্জুলা চেল্লুর প্রশ্ন তোলেন, ‘‘মিটিং-মিছিলের জন্য সাধারণ মানুষ কেন ভুগবে?’’ তিনি এ-ও জানান, মিছিলের জেরে সোমবার তুমুল যানজটের সাক্ষী তিনি নিজেই।
পুলিশ জানায়, এ দিন দুপুর ২টো নাগাদ শুরু হয়ে ৩টে নাগাদ মিছিল ডোরিনা ক্রসিং পৌঁছয়। পুলিশ জানায়, মিছিল শুরুর আগেই ওয়েলিংটন থেকে কলেজ স্ট্রিট-মুখী রাস্তায় যান চলাচল সাময়িক ভাবে বন্ধ ছিল। ফলে থমকে যায় লেনিন সরণি, এস এন ব্যানার্জি, চিত্তরঞ্জন অ্যাভিনিউ, গণেশচন্দ্র অ্যাভিনিউ, বেন্টিঙ্ক স্ট্রিট, জওহরলাল নেহরু রোড, রানি রাসমণি অ্যাভিনিউ-সহ বেশ কিছু রাস্তা। যানজট ছড়ায় পার্ক স্ট্রিট পর্যন্ত। ট্রামে-বাসে আটকে ভ্যাপসা গরমে তুমুল নাকাল হন মানুষ। অনেককে বলতে শোনা যায়, ‘‘যে দল বড় মুখ করে বলে বন্ধ, মিটিং-মিছিল করে মানুষের ভোগান্তি হতে দেবে না, তারাই কাজের দিনে মিছিল করছে!’’
এ দিন প্রধান বিচারপতির ক্ষোভের অন্যতম কারণ রাজনৈতিক দলগুলির ওই মামলায় যুক্ত না হওয়া। আগের শুনানিতে মামলার আবেদনকারীর আইনজীবী শ্রীকান্ত দত্তকে তিনি নির্দেশ দিয়েছিলেন, রাজনৈতিক দলগুলিকে মামলায় যুক্ত করতে। ওই আইনজীবী এ দিন জানান, জাতীয়, রাজ্য ও আঞ্চলিক মিলিয়ে ৩৮টি রাজনৈতিক দলের মধ্যে ৩০টির কার্যালয়ে মামলার নথি দিয়ে এসেছেন তিনি। বাকি আটটির কার্যালয় খুঁজে পাননি। এ-ও জানান, তৃণমূলের কার্যালয় মামলার নথি গ্রহণই করেনি। তা জেনে প্রধান বিচারপতি মন্তব্য করেন, ‘‘পুলিশকে বলব, যেন কোনও মিটিং-মিছিলের অনুমতি না দেয়। তা হলেই রাজনৈতিক দলগুলো আদালতে ছুটে আসবে।’’ এ দিন আদালতে ছিলেন রাজ্যের এজি জয়ন্ত মিত্র। প্রধান বিচারপতি তাঁকে রাজ্যের তিনটি সংবাদপত্রে বিজ্ঞপ্তি দিয়ে রাজনৈতিক দলগুলিকে মামলায় যুক্ত হওয়ার অনুরোধ করতে বলেন। মামলার পরবর্তী শুনানি ২১ নভেম্বর।
প্রধান বিচারপতির মন্তব্য নিয়ে প্রশ্ন করা হলে তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘আমরা বিচারালয়ের মন্তব্য শুনেছি। এই বিষয়ে দলে আলোচনা করে জানাব। আদালত কী রায় দিয়েছে, তা ভাল করে না জেনে বলতে পারব না।’’ কিন্তু এ দিন তাঁরা কেউ আদালতে যাননি কেন? পার্থবাবু বলেন, ‘‘গণতন্ত্রকে বাঁচানোর লক্ষ্যে, অবরোধ, অবক্ষয়ের রাজনীতি যারা করছে, তাদের বিরুদ্ধে কর্মসূচিতে ব্যস্ত ছিলাম।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy