পুরসভার গেট দিয়ে ঢুকছে অ্যাস্টন মার্টিন। নিজস্ব চিত্র
পুরভোট নিয়ে নয়, সোমবার একটি ‘স্পোর্টস কার’ নিয়ে তোলপাড় হল কলকাতা পুরসভার সদর দফতর। কেউ তুললেন নিজস্বী, কেউ আবার সমালোচনায় মুখর। সৌজন্যে অ্যাস্টন মার্টিন!
লাল টুকটুকে রঙের বহুমূল্যের ওই গাড়িটি পুরসভার গেট দিয়ে ঢোকার সময়েই চোখ ছানাবড়া হয়ে গিয়েছিল কর্মীদের।পুরসভার এক কর্মাী গাড়িটি ঢুকতে দেখে বলেই ফেললেন, ‘‘এ তো জেমস বন্ডের গাড়ি। এ গাড়ি এ খানে কী করছে।’’ পরে জানা গেল, অ্যাস্টন চড়ে এসেছেন বন্দর এলাকার তৃণমূল যুব নেতা তথা কাউন্সিলর সামস ইকবাল। এর আগে এত দামি গাড়ি করে কেউ পুরসভায় এসেছেন কি না, তা মনে করতে পারছেন না কর্মীরা। কয়েক জন কাউন্সিলরকেও দেখা গেল উঁকিঝুঁকি মেরে গাড়িটি দেখতে।
এক বর্ষীয়ান কংগ্রেস কাউন্সিলর উত্তেজনা চেপে রাখতে না পেরে বলেই ফেললেন, ‘‘কার গাড়ি রে বাবা? গাড়িটির কী নাম?’’ অল্প সময়ের মধ্যে হইচইও পড়ে যায়। তখন অবশ্য পুরসভায় নিজের কাজে ব্যস্ত সামস। এক দিকে যখন বরো ভিত্তিক কাজের ‘রিভিউ মিটিং’ চলছে, তখন বাইরে একটাই আলোচনা গাড়িটি কার?
আরও পড়ুন: হাতের বদলে পায়ের মেডিক্যাল রিপোর্ট! কাঠগড়ায় নামী ডায়াগনস্টিক সেন্টার
গাড়ির নাম অ্যাস্টন মার্টিন। ভারতীয় বাজারে বিভিন্ন মডেলের দাম প্রায় সাড়ে তিন কোটির আশেপাশে। লাল টুকটুকে এই গাড়িটিকে দেখতে রীতি মতো ভিড় জমে যায় পুরসভায়। অনেকে আবার সেল্ফিও তুলতে শুরু করেন। শৌখিনতায় এই স্পোর্টস কারের তুলনা নেই। পোর্সা, ফেরারির মতো অ্যাস্টন মার্টিনও আভিজাত্যে ভরা। কলকাতায় হাতে গোনা কয়েক জনের কাছে রয়েছে অ্যাস্টন।
এই গাড়ি নিয়েই দিনভর চর্চা। নিজস্ব চিত্র
সামসের বাবা মুন্না ইকবাল। বরো চেয়ারম্যান ছিলেন। গাড়ির পাশে দাঁড়িয়ে এক পুরকর্মী নিজস্বী তুলতে গিয়ে বলেন, “ওঁদের নানা রকম ব্যবসা রয়েছে। সামস এই গাড়ি কিনবে না তো কে কিনবে!”
তবে অ্যাস্টন দেখে এক বাম কাউন্সিলর বললেন, “আমাদের ভাতা এই বেড়ে সবে ১০ হাজার হয়েছে। ট্যাক্সিতেই চড়তে পারি না, তায় আবার অ্যস্টিন মার্টিন। আমরা লড়াই-সংগ্রামেই ঠিক আছি। ও সব আমাদের মানায় না।” পাশে কাঁধে ঝোলা ব্যাগ নিয়ে দাঁড়িয়ে ছিলেন অন্য এক বাম কাউন্সিলর। তিনি বলে উঠলেন, “ভ্যাগ্যিস তুই নামটা বললি। আমি তো নামই জানতাম না।”
আরও পড়ুন: সিগারেট থেকে ঘরে আগুন, খিদিরপুরে পুড়ে মৃত্যু বৃদ্ধের
বাবা মুন্না ইকবাল প্রভাবশালী কাউন্সিলর ছিলেন। বরো চেয়ারম্যানের পদও সামলেছেন। হরিমোহন ঘোষ কলেজের নির্বাচনের দিন কলকাতা পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি চালনার ঘটনায় নাম জড়িয়ে যায় মুন্নার। তার পর পুরভোটে আর দাঁড়াননি। তবে ছেলেকে ভোটের ময়দানে নামিয়ে ১৩৪ নম্বর ওয়ার্ড থেকে জিতিয়ে এনেছেন। তিনিও নিজের প্রভাব ইতিমধ্যেই বিস্তার করেছেন এলাকায়। যাঁর গাড়ি নিয়ে এত হইচই সারা দিন, সেই সামস ইকবালের মোবাইল এ দিন টানা সুইচড অফ ছিল। গাড়িটি তাঁর নিজের কি না তা-ও জানা যায়নি। পরিবহণ দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, সামসের ওই গাড়িটি গুরমান অটো মোবাইলস প্রাইভেট লিমিটেড-এর নামে। হাওড়া আরটিও থেকে ৩১ জানুয়ারি, ২০১৯ সালে রেজিস্ট্রেশন হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy