ছবি পিটিআই।
পকেটে ‘কোভিড পজ়িটিভ’ সার্টিফিকেট নিয়ে বিমানে করে দিল্লি থেকে গুয়াহাটি ঘুরে কলকাতায় এসে হইচই ফেলে দিয়েছেন এক যাত্রী।
উত্তর ২৪ পরগনার জগদ্দলের বাসিন্দা ওই ব্যক্তির আপাতত ঠিকানা রাজ্যের কোয়রান্টিন কেন্দ্র। বিমানে আসা তাঁর সহযাত্রী, পাইলট ও বিমানসেবিকাদের গৃহ-পর্যবেক্ষণে পাঠানোর তোড়জোড় শুরু হয়েছে।
ঘটনার সূত্রপাত মঙ্গলবার দুপুরে। গুয়াহাটি থেকে কলকাতায় নামার পরে অন্য যাত্রীদের মতো ওই যুবকও মালপত্র নিয়ে হেঁটে বেরোচ্ছিলেন। বর্তমান করোনা পরিস্থিতিতে কলকাতায় আসা সব যাত্রীর দেহের তাপমাত্রা মাপা হচ্ছে। অ্যারাইভালে বসানো একটি যন্ত্রের সামনে দিয়ে যাত্রীরা যাওয়ার সময়ে তাতে ফুটে উঠছে তাঁদের দেহের তাপমাত্রা। তা ৯৯ ডিগ্রি ফারেনহাইটের বেশি থাকলে সংশ্লিষ্ট যাত্রীকে আলাদা করে পরীক্ষা করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন: কলকাতা পুলিশে এক দিনে ৩০ জন করোনায় আক্রান্ত
কলকাতা বিমানবন্দর সূত্রের খবর, ওই যুবকের দেহের তাপমাত্রা ৯৮.৩ থাকায় তাঁকে প্রথমে আটকানো হয়নি। কিন্তু তিনি বেরিয়ে না-গিয়ে সেখানে উপস্থিত রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের অফিসারদের বলেন, তিনি কোয়রান্টিনে যেতে চান। অফিসারেরা জানান, কোনও যাত্রীর দেহে সংক্রমণের আভাস পাওয়া না-গেলে তাঁকে কোয়রান্টিনে পাঠানো হচ্ছে না। তখন ওই যুবক বলেন, তাঁর শুকনো কাশি হচ্ছে।
দ্বিতীয় বার তাঁর দেহের তাপমাত্রা মেপে দেখা যায়, সেটাও স্বাভাবিক। তখন অফিসারেরা ওই যুবককে বলেন, শুকনো কাশি অন্য কারণেও হতে পারে। তিনি যেন বাড়ি গিয়ে চিকিৎসকের পরামর্শ নেন। কিন্তু সে কথা না-শুনে যুবকটি কোয়রান্টিনে যাওয়ার জন্য জোরাজুরি করতে থাকেন। স্বাস্থ্য দফতরের অফিসারেরা রাজি না-হওয়ায় শেষমেশ তিনি ব্যাগ থেকে একটি কাগজ বার করে বলেন, ‘‘এই দেখুন, আমার কোভিড পজ়িটিভ রিপোর্ট এসেছে।’’
আরও পড়ুন: দূর থেকে এসেও পরিষেবা মিলল না শম্ভুনাথ পণ্ডিতে
সেই সার্টিফিকেট দেখেই শুরু হয়ে যায় হইচই। কোভিড পজ়িটিভ এক যাত্রীকে এ ভাবে ঘুরে বেড়াতে দেখে অন্যদের মধ্যেও সংক্রমণের আশঙ্কা তৈরি হয়। জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, ওই যুবক আদতে আসছেন দিল্লি থেকে। এখন দিল্লি থেকে কলকাতার সরাসরি উড়ান বন্ধ থাকায় তিনি এ দিন সকালে প্রথমে গুয়াহাটি যান। সেখান থেকে দুপুরের উড়ানে কলকাতায়। দিল্লি থেকে উড়ান ধরার দু’দিন আগে তাঁর নমুনা পরীক্ষার রিপোর্ট পজ়িটিভ আসে। অভিযোগ, সেই তথ্য চেপে গিয়েছিলেন ওই যুবক।
বিমানবন্দরের অধিকর্তা কৌশিক ভট্টাচার্য জানিয়েছেন, কেন্দ্রের নিয়মানুযায়ী টিকিট কাটা এবং ওয়েব চেক-ইন করার সময়ে যাত্রীদের কেউ সংক্রমিত কি না, তা জানতে চাওয়া হচ্ছে।
সংক্রমণ না-থাকলেই তাঁকে টিকিট বা বোর্ডিং পাস দেওয়া হচ্ছে। অফিসারদের অনুমান, টিকিট কাটার সময়ে ওই যুবক সংক্রমণের কথা জানতেন না। কিন্তু প্রশ্ন উঠেছে, বোর্ডিং পাস পাওয়ার আগে তো তিনি করোনা-পরীক্ষার রিপোর্ট পেয়ে গিয়েছিলেন। সেই তথ্য গোপন করলেন কেন? এমনকি বিমানে ওঠার আগে প্রতিটি যাত্রীর মোবাইলে যে আরোগ্য সেতু অ্যাপ থাকা বাধ্যতামূলক, সেখানে তথ্য গোপন করলে কেউ সংক্রমিত কি না জানা সম্ভব নয়। সন্দেহ, ওই যাত্রী যে ভাবেই হোক কলকাতায় ফিরতে চাইছিলেন। তাই দিল্লিতে বিমানে ওঠার আগে ঠিক তথ্য দেননি।
উড়ান সংস্থা সূত্রের খবর, পুরো ঘটনাটি দিল্লিতে সদর দফতরে জানানো হয়েছে। দিল্লি-গুয়াহাটি এবং গুয়াহাটি-কলকাতা রুটের বিমানসেবিকা ও পাইলটদের কোয়রান্টিনে পাঠানোর ব্যবস্থা করা হচ্ছে। ওই যাত্রী দুই উড়ানে যে আসনে বসে এসেছিলেন, তার আশপাশে থাকা যাত্রীদের সঙ্গেও যোগাযোগ করার চেষ্টা হচ্ছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy