প্রতীকী ছবি
আবার প্রকোপ বাড়তে পারে হাম, যক্ষ্মা, পোলিয়ো-র মতো রোগের! লকডাউনের জেরে শিশুদের টিকাকরণ বন্ধ থাকায় আগামী দিনে ওই সমস্ত রোগে কয়েক লক্ষ শিশু আক্রান্ত হতে পারে। এমনই আশঙ্কা করছেন শহরের একাধিক শিশু-রোগ চিকিৎসক। তাঁদের সকলের দাবি, লকডাউন চললেও ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে অবিলম্বে শিশুদের প্রাথমিক পর্যায়ের টিকাকরণ চালু করতে হবে।
তবে করোনার সংক্রমণ থেকে শিশুদের দূরে রাখতে টিকাকরণের সময়ে সামাজিক দূরত্ব-বিধি মানা ও মাস্ক পরা-সহ সব ধরনের সাবধানতা অবলম্বন করার পরামর্শই দিচ্ছেন চিকিৎসকেরা। কোনও শিশু জন্মানোর পরে হাসপাতালেই তাকে টিকা দেওয়া হয়। এর পরে প্রাথমিক পর্যায়ে দেড় মাস, আড়াই মাস ও সাড়ে তিন মাস বয়সে ডিপথেরিয়া, টিটেনাস, হুপিং কাশি, পোলিয়ো, ইনফ্লুয়েঞ্জা, হেপাটাইটিস বি-র মতো বিভিন্ন প্রতিষেধক দেওয়া হয়। আবার ছ’মাস বয়সের পরে ফ্লু এবং ন’মাস বয়সে হাম, রুবেলা, মামস্-এর প্রতিষেধক দেওয়া হয়। সরকারি বা বেসরকারি হাসপাতালে রুটিন মাফিক ওই প্রতিষেধক পেতে পারে শিশুরা।
শিশু-রোগ চিকিৎসক অপূর্ব ঘোষ বলেন, ‘‘জন্মের পরের প্রতিষেধক দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু লকডাউনের জেরে তার পরের টিকাকরণে সমস্যা হচ্ছে। তবে সরকার চিন্তাভাবনা করছে প্রাথমিক পর্যায়ের টিকাকরণ শুরু করতে।’’ একটি প্রতিষেধক নেওয়ার পরে তার পরবর্তী ডোজ়টি যদি নির্দিষ্ট সময়ে নেওয়া না হয়, তা হলে আগেরটির কার্যকারিতা কমে যায় বলেই মত অপূর্ববাবুর। ‘ইন্ডিয়ান অ্যাকাডেমি অব পেডিয়াট্রিক্স’ (আইএপি)-এর হাওড়া জেলা শাখার সভাপতি তথা চিকিৎসক রানা চট্টোপাধ্যায়ের কথায়, ‘‘করোনায় যত না মৃত্যু হবে, টিকাকরণ বন্ধ থাকায় আগামী দিনে ওই সমস্ত রোগে আক্রান্তেরসংখ্যা বেড়ে তাতে আরও বেশি মৃত্যু হতে পারে।’’
তাই টিকাকরণ প্রক্রিয়ায় যাতে কোনও ছেদ না পড়ে, তার জন্য টিকাকরণের সময়ে চিকিৎসকদের কিছু নিয়ম মেনে চলতে বলেছে আইএপি। শিশু-রোগ চিকিৎসকেরা জানাচ্ছেন, যে সব শিশু প্রতিষেধক নিতে আসবে, তাদের এক জনের সঙ্গে অপর জনের সময়ের একটা নির্দিষ্ট ব্যবধান রাখা উচিত। যাতে একে অপরের সংস্পর্শে আসতে না পারে। টিকাকরণের দিন চিকিৎসকদের চেম্বারে অন্য রোগে আক্রান্ত শিশুদের ডাকা উচিত নয়। চিকিৎসকদের পাশাপাশি শিশুর পরিজনদের জন্যও সাবধানতা অবলম্বন করার কথা বলছে আইএপি।
সংগঠনের সদস্য-চিকিৎসকেরা জানাচ্ছেন, শিশুকে চেম্বারে নিয়ে আসার সময়ে যাতে বয়স্ক কেউ সঙ্গে না আসেন, সে দিকে খেয়াল রাখতে হবে। কারণ, করোনায় বয়স্ক আক্রান্তদের সংখ্যাটাই সব চেয়ে বেশি। শিশুকে নিয়ে তার মা এবং আর এক জনই চিকিৎসকের কাছে আসতে পারবেন। শিশুর সঙ্গে যাঁরা আসবেন, তাঁরা অবশ্যই মাস্ক পরবেন। ওড়না কিংবা শাড়ির আঁচল দিয়ে শিশুটিকেও ঢেকে রাখতে হবে। চেম্বারে ঢোকার সময়ে স্যানিটাইজ়ার দিয়ে হাত ধুতে হবে।
মহামারি পরিস্থিতিতে অন্য টিকাকরণ ব্যাহত হলে অন্য রোগের প্রকোপ বাড়তে পারে বলেই জানাচ্ছেন আইএপি-র কার্যকরী কমিটির সদস্য, শিশু-রোগ চিকিৎসক পল্লব চট্টোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ‘‘পোলিয়ো পুরো নির্মূল হয়ে গিয়েছে। আর কয়েক বছরের মধ্যে দেশ থেকে যক্ষ্মাও পুরো দূর করার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছিল। কিন্তু টিকাকরণ বন্ধ থাকায় ফের ওই সব রোগ ফিরে আসার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। এই রোগগুলি ফিরে এলে আমরা আরও কয়েক বছর পিছিয়ে যাব।’’
আরও পড়ুন: শুধু নির্দিষ্ট বাড়ি হতে পারে রেড জ়োন
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy