প্রতীকী ছবি
করোনা সংক্রমণের মোকাবিলায় দেশে চলছে তৃতীয় দফার লকডাউন। এর সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে ঘরে ঘরে বিকল হয়ে পড়ে থাকা মোবাইল, ল্যাপটপ, চার্জার জাতীয় বৈদ্যুতিন সামগ্রীর সংখ্যা। কন্টেনমেন্ট জ়োন ছাড়া অন্য এলাকায় কিছু সময়ের জন্য মোবাইল, ল্যাপটপের দোকান খোলা যাবে বলে নির্দেশিকা জারি করেছে রাজ্য সরকার। কিন্তু লকডাউন চলাকালীন এত মোবাইল ও ল্যাপটপ খারাপ হয়েছে যে সে সব সারাতে গিয়ে হিমশিম খেতে হচ্ছে দোকানদারদের।
কলকাতায় চাঁদনি চকের মতো পাইকারি বাজারগুলি বন্ধ থাকায় ল্যাপটপ, মোবাইলের যন্ত্রাংশ সরবরাহ এখনও বন্ধ। দীর্ঘদিন ধরে বাজার বন্ধ থাকায় যন্ত্রাংশের অভাবে ল্যাপটপ, মোবাইল সারাইয়ের দোকান খুলতে পারেননি অনেকেই। বারাসতের চাঁপাডালি এলাকার এক ব্যবসায়ীর কথায়, ‘‘দোকান খুললে তো লোকে ল্যাপটপ, মোবাইল সারাতে আনবেন। তার জন্য বিভিন্ন জিনিসপত্র লাগে। সে সব কলকাতা থেকে আনব কী ভাবে, যাবই বা কী ভাবে? তা ছাড়া কলকাতায় দোকানও বন্ধ।’’
এ রাজ্যের মোবাইল বিক্রেতাদের সংগঠন, ‘মোবাইল ট্রেডার্স অ্যাসোসিয়েশন’-এর দাবি, পশ্চিমবঙ্গে প্রায় পাঁচ কোটি মানুষ মোবাইল ফোন ব্যবহার করেন। রাজ্যে প্রতি মাসে গড়ে ১০ লক্ষ মোবাইল এবং এক লক্ষ ল্যাপটপ বিক্রি হয়। সংগঠনের দাবি, দেড় মাসেরও বেশি সময় ধরে লকডাউন চলায় এখন গোটা রাজ্যে বিকল হয়ে পড়া মোবাইল, ল্যাপটপ, চার্জারের সংখ্যা দাঁড়াতে পারে প্রায় ৫০ হাজারে।
দোকান বন্ধ থাকায় সমস্যায় পড়েছেন স্মার্টফোন এবং ইন্টারনেট ব্যবহারকারীরাও। লকডাউনে ঘরে বসে কাজ করছেন অনেকেই। কিন্তু হঠাৎ মোবাইল বা ল্যাপটপ বিকল হওয়ায় থমকে যাচ্ছে কাজকর্ম। ‘মোবাইল ট্রেডার্স অ্যাসোসিয়েশন’-এর এক সদস্য সৈকত সাধুখাঁ বলেন, ‘‘এত দিন ধরে বৈদ্যুতিন যন্ত্রের বিক্রি বন্ধ থাকায় আমাদের আর্থিক ক্ষতি যেমন হয়েছে তেমনই সাধারণ মানুষের কাজেও বিঘ্ন ঘটছে। এই অবস্থায় অনলাইনে কেউ মোবাইল কিনতে চাইলে আমরা কিছু জিনিস সরবরাহ করার চেষ্টা করেছি।’’ তিনি জানান, চার্জার কাজ না করায় ব্যবহার করা যাচ্ছে না বহু মোবাইল, ল্যাপটপ।
সম্প্রতি নিউ টাউনের এক তথ্যপ্রযুক্তি কর্মীর ল্যাপটপ কাজ না-করায় বিপদে পড়েন তিনি। মৃত্যুঞ্জয় দে নামে ওই কর্মীর কথায়, ‘‘এখন বাড়িতে বসেই কাজ করছি। হঠাৎ ল্যাপটপ বিগড়ে যায়। কোথাও ল্যাপটপ সারানোর ব্যবস্থা করতে পারিনি। নতুন যে কিনব, তার উপায়ও নেই। অফিসের সমস্ত কাজকর্ম বন্ধ হয়ে গিয়েছে।’’ বারাসতের বাসিন্দা, বিমা সংস্থার এক কর্মী সঞ্জয় বসুর মোবাইলটি খারাপ হয়ে যায় দিন কয়েক আগে। অফিসের কাজ না করতে পারায় চাকরি নিয়ে আশঙ্কায় রয়েছেন ওই কর্মী।
একই ভাবে সমস্যায় পড়েছে ছাত্রছাত্রীরা। বহু স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ে এখন চলছে অনলাইন ক্লাস। ল্যাপটপ বা মোবাইল খারাপ হয়ে যাওয়ায় সেই ক্লাসে যোগ দিতে পারছে না কোনও কোনও পড়ুয়া।
লকডাউনে কোনও অসুবিধা হলে আরোগ্য সেতু অ্যাপ এবং হেল্পলাইন ব্যবহারের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে। মোবাইল খারাপ হয়ে যাওয়ায় তা-ও করতে পারছেন না বলে জানাচ্ছেন অনেকে।
(অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy