থমকে: সল্টলেকের একটি বিনোদন পার্কে বন্ধ হয়েই পড়ে রয়েছে রাইড। নিজস্ব চিত্র
করোনার সংক্রমণ উত্তরোত্তর বেড়ে চলেছে। এই পরিস্থিতিতে শহরের বিনোদন পার্কগুলি ফের কবে খুলবে, তা নিয়ে অনিশ্চয়তা ক্রমেই বাড়ছে। আর সেই সঙ্গে ওই সমস্ত বিনোদন পার্কে যাঁরা কাজ করেন, এমন কয়েক হাজার মানুষের ভবিষ্যৎ-ও ঘোরতর অনিশ্চয়তার মুখে। বিভিন্ন বিনোদন পার্কের কর্তারা জানালেন, ‘আনলক ৩’-এ বিনোদন পার্ক খোলার কথা বলেছিল কেন্দ্রীয় সরকার। কিন্তু করোনা সংক্রমণ এখন যে ভাবে ছড়াচ্ছে, তাতে বিনোদন পার্কের দরজা কবে খুলবে, তা নিয়ে সংশয়ে তাঁরা। এই লোকসানের বোঝা আর কত দিন টানা সম্ভব হবে, জানেন না এই ব্যবসায় যুক্ত মালিক বা আধিকারিকেরা। আপাতত পরিস্থিতি কবে স্বাভাবিক হবে, সেই অপেক্ষায় আছেন তাঁরা।
মার্চের শেষ থেকে শুরু করে প্রায় চার মাস ধরে বন্ধ রয়েছে শহরের সব ক’টি বিনোদন পার্ক। কয়েকটি বিনোদন পার্কের সামনে থাকা রেস্তরাঁ খুললেও ভিতরের সব রাইড বন্ধ। শহরের একটি নামী বিনোদন পার্কের এক আধিকারিক জানালেন, অন্যান্য বছর এই সময়ে বিনোদন পার্কে জনসমাগম ভালই হয়। বিশেষ করে গ্রীষ্ম ও বর্ষায় ওয়াটার পার্কগুলিতে ভিড় উপচে পড়ে। কিন্তু এ বার সব সুনসান।
সল্টলেকের একটি বিনোদন পার্কের ম্যানেজিং ডিরেক্টর তথা ‘ইন্ডিয়ান অ্যাসোসিয়েশন অব অ্যামিউজ়মেন্ট পার্কস অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ়’-এর পূর্বাঞ্চলের চেয়ারম্যান অভিজিৎ দত্ত বললেন, “ইতিমধ্যেই আমরা বিপুল ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছি। তাই সরকারের কাছে আবেদন জানিয়ে বলেছি, আমাদের বাৎসরিক যে বিদ্যুতের খরচ লাগে, তা মকুব করা হোক। জিএসটি-সহ কিছু বিনোদন করও মকুব করার আবেদন জানিয়েছি।” অভিজিৎবাবু জানান, বিনোদন পার্ক বন্ধ থাকলেও রক্ষণাবেক্ষণের কাজ করে যেতে হচ্ছে। সম্প্রতি আমপানে সল্টলেকের একটি বিনোদন পার্কে বেশ কয়েকটি গাছ ভেঙে পড়েছিল। সে সব পরিষ্কার করাতে হয়েছে। ভিতরে সুইমিং পুলের জলও পাল্টাতে হচ্ছে নিয়মিত। সঙ্গে রয়েছে কর্মীদের বেতন। সব মিলিয়ে বিপুল খরচ। অথচ, গত কয়েক মাস ধরে আয় একেবারে শূন্য। নিউ টাউনের ইকো পার্কের রাইডগুলিরও নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণ করতে হচ্ছে বলে জানান হিডকো-র চেয়ারম্যান দেবাশিস সেন। তিনি বলেন, “সরকারের নির্দেশ পেলে তবেই ইকো পার্ক খোলার ব্যাপারে ভাবনাচিন্তা করা হবে।”
আরও পড়ুন: করোনা-উপসর্গ থাকলেও তথ্য ‘মিলছে না’ বিমানযাত্রীদের
এই দেশে এবং রাজ্যে করোনার এখন যা পরিস্থিতি, তাতে অদূর ভবিষ্যতে বিনোদন পার্ক খোলার কোনও আশা দেখছেন না এই পেশায় জড়িত কর্মীরা। শহরের একটি বড় বিনোদন পার্কে কাজ করেন শুভেন্দু মজুমদার। তাঁর মতে, বর্তমানে করোনা যে ভাবে ছড়াচ্ছে, তাতে সাধারণ মানুষের মধ্যে বিনোদন পার্ক নিয়ে কোনও চিন্তা না আসাই স্বাভাবিক। স্কুল-কলেজ থেকে শুরু করে অনেক প্রয়োজনীয় পরিষেবাই এখন বন্ধ। মানুষ চিন্তিত সে সব জরুরি পরিষেবা নিয়ে। করোনার এই দুঃসময়ে বিনোদন পার্ক খুললেও কত জন মানুষ সেখানে যাবেন, সেটাও প্রশ্ন। শুভেন্দু বলেন, “আমরা কয়েক হাজার মানুষ, যাঁরা এই বিনোদন পার্কে বিভিন্ন রকম কাজ করি, তাঁদের আর্থিক অবস্থা ক্রমেই খারাপের দিকে যাচ্ছে। আমাদের ভবিষ্যৎ প্রবল অনিশ্চিত। সংসার চালাতে পারছি না। আমাদের কথা কে আর ভাবছে!”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy