Advertisement
E-Paper

কোয়রান্টিন কেন্দ্র দেরিতে, শহরে জাঁকিয়ে বসেছে করোনা?

মঙ্গলবার স্বাস্থ্য ভবনের প্রকাশিত সর্বশেষ তথ্য হল, রাজ্যে করোনায় আক্রান্ত ১৩৪৪ জনের মধ্যে শুধু কলকাতাতেই রয়েছেন ৭০০ জন।

ছবি পিটিআই।

ছবি পিটিআই।

সৌরভ দত্ত

শেষ আপডেট: ০৬ মে ২০২০ ০৩:৫৪
Share
Save

দু’সপ্তাহ আগেও আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ২৫০ এর নীচে। মাত্র দশ দিনের ব্যবধানে তা বেড়ে ৭০০। কলকাতায় করোনার এই বাড়বাড়ন্তের পিছনে সময়ে কোয়রান্টিন কেন্দ্র না গড়তে পারাই অন্যতম কারণ বলে মনে করছেন স্বাস্থ্য দফতরের আধিকারিকদের একটি বড় অংশ। আবার এই রোগ এবং তার মোকাবিলা পদ্ধতি সম্পর্কে জনমানসে তৈরি হওয়া ধারণাও সংক্রমণ রুখতে বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছে বলে মনে করা হচ্ছে।

মঙ্গলবার স্বাস্থ্য ভবনের প্রকাশিত সর্বশেষ তথ্য হল, রাজ্যে করোনায় আক্রান্ত ১৩৪৪ জনের মধ্যে শুধু কলকাতাতেই রয়েছেন ৭০০ জন। কলকাতায় মৃতের সংখ্যা ৪০ জন। সূত্রের খবর, এখন শহরে প্রতিদিন গড়ে অন্তত ২৫ জন নতুন করে আক্রান্ত হচ্ছেন। কলকাতা পুরসভা সূত্রের খবর, বেলগাছিয়া এবং নারকেলডাঙা এলাকায় নতুন করে সংক্রমণের খবর নেই। কিন্তু পুর কর্তৃপক্ষ বিশেষ ভাবে উদ্বিগ্ন বড়বাজার-সহ চার, সাত এবং ছ’নম্বর বরো নিয়ে।

স্বাস্থ্য ভবন এবং পুর আধিকারিকদের অনেকেই মনে করছেন, গোড়ায় আক্রান্তের সংস্পর্শে আসা ব্যক্তিদের চিহ্নিত করে পুরসভা প্রাতিষ্ঠানিক কোয়রান্টিনে পাঠানোয় সংক্রমণের হার কম ছিল। কিন্তু কোয়রান্টিন কেন্দ্রগুলি ভর্তি হয়ে যাওয়ার পরে নতুন কেন্দ্র খোঁজার পরামর্শ দিয়েছিল স্বাস্থ্য দফতর। সেই মতো বেহালার পর্ণশ্রীতে পলিটেকনিক কলেজ-সহ স্কুল, লেডিজ় হস্টেল, মাতৃসদন মিলিয়ে মোট ছ’টি জায়গা কোয়রান্টিন কেন্দ্রের জন্য বাছা হয়। ওই সব জায়গায় পরিকাঠামো নির্মাণের কাজ শুরু হলেও স্থানীয়দের চাপেই ওই পরিকল্পনা বাস্তবায়িত করা যায়নি।

আরও পড়ুন: সংক্রমণ বাড়ছে স্বাস্থ্যকর্মীদের, সর্বত্রই ধাক্কা খাচ্ছে পরিষেবা

পুর স্বাস্থ্য দফতরের আধিকারিকদের একাংশের বক্তব্য, ঘন বসতিপূর্ণ এলাকা এবং বস্তি অঞ্চলের মানুষের উপসর্গ দেখা দিলে তাঁদের সরকারি কোয়রান্টিন কেন্দ্রে নিয়ে যেতেই হবে। পুরসভার এক স্বাস্থ্য আধিকারিক জানান, রাজারহাটে সেন্ট্রাল ফরেন্সিক ল্যাবরেটরির একটি বাড়িতে কোয়রান্টিন কেন্দ্র তৈরি হচ্ছে। স্বাস্থ্য দফতরের এক আধিকারিকের কথায়, ‘‘কলকাতা এখন যে জায়গায় দাঁড়িয়ে, সংক্রমণ ঠেকানো মুশকিল। সন্দেহভাজনদের যত বেশি সম্ভব আইসোলেশনে রাখা প্রয়োজন।’’

পুর এলাকায় কর্মরত জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের দাবি, করোনা প্রভাবিত এলাকায় কোয়রান্টিন ব্যবস্থা নিয়ে ভীতি তৈরি হয়েছে। অনেকেই জানাচ্ছেন সাদা পোশাক (পিপিই) পরা লোকজন তাঁর প্রতিবেশীকে কোথায় নিয়ে যাচ্ছেন, তিনি কেমন থাকছেন, তার কোনও তথ্য পাওয়া যাচ্ছে না। ফলে ভয়ে অনেকেই উপসর্গ থাকলেও তথ্য গোপন করছেন।’’ চিকিৎসক-স্বাস্থ্যকর্মীদের একাংশের মধ্যেও আতঙ্ক কাজ করছে বলে পুরসভা সূত্রে খবর।

আরও পড়ুন: রাজ্য জুড়ে নজর রাখছেন ৬০ হাজার স্বাস্থ্যকর্মী, ফেসবুকে হিসাব দিলেন মমতা

স্বাস্থ্য ভবনের এক আধিকারিকের কথায়, ‘‘এখন দু’টি বিষয়ে অগ্রাধিকার দেওয়া প্রয়োজন। কন্টেনমেন্ট জ়োনের সন্দেহভাজনদের নমুনা সেখানেই পরীক্ষা করার ব্যবস্থা করতে হবে। পুর আধিকারিক, চিকিৎসক, স্বাস্থ্যকর্মীদেরও সামনে থেকে লড়তে হবে।’’ সোমবার একটি বৈঠকে এ সব নিয়েও আলোচনা করেন মেয়র ফিরহাদ হাকিম, ডেপুটি মেয়র অতীন ঘোষ। এ দিন অতীনবাবু জানান, আক্রান্তের আশি শতাংশ দশটি বরোর মধ্যে সীমাবদ্ধ হওয়ায় ওই বরোগুলিতে লোকাল হেড কোয়ার্টার্স তৈরির পরিকল্পনা রয়েছে। কন্টেনমেন্ট জ়োনের কাছে নমুনা পরীক্ষার কেন্দ্র তৈরির ব্যবস্থা করা হচ্ছে। তিনি বলেন, ‘‘কলকাতায় কোয়রান্টিন সেন্টার আমরা করব। কিন্তু সেখান থেকে সংক্রমণ ছড়াবে এই ধারণা মানুষকে দূর করতে হবে।’’

কেএমসি ডক্টর্স ফোরামের সভাপতি মানস সোম বলেন, ‘‘চিকিৎসক-স্বাস্থ্যকর্মীরা সামনে থেকেই কাজ করছেন। যাঁরা তা করছেন না ফোরামও তাঁদের সমর্থন করছে না। তবে পুরসভার চিকিৎসক-স্বাস্থ্যকর্মীদের সুচিকিৎসার বিষয়টি নিশ্চিত হলে এই সমস্যাও মিটে যাবে।’’

করোনা বিশেষজ্ঞ কমিটির সদস্য অভিজিৎ চৌধুরী বলেন, ‘‘সারা ভারতেই সময় এসেছে কোয়রান্টিন কেন্দ্রগুলিকে জেলখানা না বানিয়ে কমিউনিটি কেয়ার হোম তৈরি করা হোক। তা হলে মানুষও সেখানে যেতে ভয় পাবেন না।’’ কলকাতায় ‘ফিল্ড টেস্টিং’-এর কাজ দ্রুত শুরু হয়ে যাবে বলে জানিয়েছেন অভিজিৎবাবু।

(অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।)

Coronavirus in Kolkata Quarantine Center Health

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

এটি একটি প্রিন্ট আর্টিক্‌ল…

  • এমন অনেক খবরই এখন আপনার হাতের মুঠোয়

  • সঙ্গে রোজ পান আনন্দবাজার পত্রিকার নতুন ই-পেপার পড়ার সুযোগ

  • ই-পেপারের খবর এখন শুধুই ছবিতে নয়, টেক্সটেও

প্ল্যান সিলেক্ট করুন

মেয়াদ শেষে নতুন দামে আপনাকে নতুন করে গ্রাহক হতে হবে

Best Value
এক বছরে

৫১৪৮

১৯৯৯

এক বছর পূর্ণ হওয়ার পর আপনাকে আবার সাবস্ক্রিপশন কিনতে হবে। শর্তাবলী প্রযোজ্য।
*মান্থলি প্ল্যান সাপেক্ষে
এক মাসে

৪২৯

১৬৯

এক মাস পূর্ণ হওয়ার পর আপনাকে আবার সাবস্ক্রিপশন কিনতে হবে। শর্তাবলী প্রযোজ্য।