প্রতীকী ছবি।
দরজায় কড়া নাড়ছে করোনা। অথচ, স্রেফ সমন্বয় এবং উদ্যোগের অভাবে উপসর্গহীন সংক্রমিতদের পরীক্ষা হচ্ছে না কলকাতা লাগোয়া দক্ষিণ শহরতলির পুরসভাগুলিতে।
গত কয়েক সপ্তাহ ধরে কলকাতা পুরসভা এলাকায় লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে করোনার সংক্রমণ। যা দেখে শঙ্কিত চিকিৎসক থেকে পুরকর্তাদের একাংশ। সংক্রমণের পাশাপাশি মৃত্যুর ঘটনাও ঘটেছে। কলকাতায় সংক্রমণ বৃদ্ধির অর্থ হল, অচিরেই তা ছড়িয়ে পড়বে দক্ষিণ শহরতলির রাজপুর-সোনারপুর, মহেশতলা, বজবজ ও বারুইপুর পুরসভা এলাকায়। কিন্তু অভিযোগ, ওই সমস্ত এলাকায় প্রশাসনের তরফে করোনা পরীক্ষার কোনও উদ্যোগ চোখে পড়ছে না। এর কারণ হিসেবে ওই পুরসভাগুলির কর্তারা জানাচ্ছেন, করোনা পরীক্ষার কিট-ই নাকি নেই। তাই ইচ্ছে থাকলেও পদক্ষেপ করতে পারছেন না তাঁরা। যদিও দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, করোনা পরীক্ষার কিট পর্যাপ্ত পরিমাণেই রয়েছে। পুরসভাগুলির তরফেই কিট চেয়ে কোনও আবেদন জানানো হয়নি। তাই চাহিদা না থাকায় কিট সরবরাহকরা হয়নি।
জেলা স্বাস্থ্য দফতরের আধিকারিকদের একাংশের বক্তব্য, কেন্দ্রীয় ও রাজ্য সরকারের তরফে মাসকয়েক আগে করোনা বিষয়ক সমস্ত নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ায় স্থানীয় প্রশাসনের (পুরসভা ও পঞ্চায়েত) কর্তাব্যক্তিরা এক রকম ধরেই নিয়েছিলেন যে, করোনার সংক্রমণ আর ফিরবে না। সেই কারণে একটা গা-ছাড়া মনোভাব তৈরি হয়েছিল। এখন সংক্রমণ ফের মাথাচাড়া দিয়েছে। কিন্তু তা ঠেকাতে যে পরিকাঠামো দরকার, এখন আর তা নেই বললেই চলে। সেই কারণেই উপসর্গহীনদের পরীক্ষা হচ্ছে না।
গত দু’বছরের পরিসংখ্যান বলছে, কলকাতায় যখনই সংক্রমণ বেড়েছে, সেই সংক্রমণ শহর লাগোয়া অন্যান্য জেলার পাশাপাশি ছড়িয়ে পড়েছে দক্ষিণ শহরতলিতেও। কারণ, ওই জেলা থেকে প্রতিদিন অসংখ্য মানুষ কর্মসূত্রে এ শহরে যাতায়াত করেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে বিভিন্ন সময়ে বাজার-দোকানও বন্ধ রাখতে হয়েছিল জেলার বিভিন্ন অংশে। বর্তমানে কলকাতায় যে হারে করোনা ছড়াচ্ছে, তাতে দক্ষিণ শহরতলিতে এই রোগের ছড়িয়ে পড়াটা স্রেফ সময়ের অপেক্ষা বলেই মনে করছেন চিকিৎসকেরা।
চিকিৎসকদের মতে, বর্তমানে পরিস্থিতি কিছুটা জটিল। তাঁদের ব্যাখ্যা, প্রতি বছরই এই সময়ে ঋতু পরিবর্তনের কারণে সর্দি-কাশি ও জ্বরের প্রকোপ দেখা যায়। তাই উপসর্গ থাকলে পরীক্ষা করিয়ে নেওয়াটাই কাম্য। তা ছাড়া, কোন এলাকায় সংক্রমণ কতটা ছড়িয়েছে, পরীক্ষা না করালে তা বুঝে ওঠা মুশকিল। দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক মুক্তিসাধন মাইতি বললেন, ‘‘করোনা পরীক্ষার জন্য পর্যাপ্ত সংখ্যক কিট মজুত রয়েছে। পুরসভা ও পঞ্চায়েতের তরফে আবেদন করলেই সরবরাহ করা হবে।’’
স্বাস্থ্য দফতরের আধিকারিকদের একাংশের বক্তব্য, ‘‘মাসকয়েক আগে সরকারের তরফে করোনা সংক্রান্ত সমস্ত নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া হলেও মাস্কের ব্যবহার বাধ্যতামূলক বলেই জানানো হয়েছিল। তা সত্ত্বেও সাধারণ নাগরিকেরা সচেতন হননি। করোনা চলে গিয়েছে ধরে নিয়ে অধিকাংশ মানুষই মাস্ক পরা পুরোপুরি ছেড়ে দিয়েছেন। শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখারও বালাই নেই কোথাও। মানুষের সচেতনতা না থাকলে নিষেধাজ্ঞা জারি করেও কোনও লাভ হয় না।’’
জেলা স্বাস্থ্য দফতরের এক কর্তার বক্তব্য, ‘‘উপসর্গহীন করোনা রোগীর সংখ্যা জানতে শহর লাগোয়া বিভিন্ন পুর এলাকায় পরীক্ষার সংখ্যা বাড়াতেই হবে। এই মুহূর্তে সংক্রমিতের সংখ্যা হয়তো কম নয়। কিন্তু পরীক্ষা না হওয়ায় তা ধরা পড়ছে না। স্থানীয় প্রশাসনকে সচেতন হতে হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy