Advertisement
E-Paper

Circus: ধাক্কা খেয়েও অদম্য সার্কাসের দৌড়

বন্য প্রাণী সংক্রান্ত নানা বিধিনিষেধ, শ্রম আইনের কড়াকড়ির পরে এ বার অতিমারির ধাক্কা।

পুনরায়: এক দিন বন্ধ থাকার পরে ফের খুলল সার্কাসের তাঁবুর দরজা। শনিবার, সিঁথিতে। নিজস্ব চিত্র

পুনরায়: এক দিন বন্ধ থাকার পরে ফের খুলল সার্কাসের তাঁবুর দরজা। শনিবার, সিঁথিতে। নিজস্ব চিত্র

ঋজু বসু

শেষ আপডেট: ০৯ জানুয়ারি ২০২২ ০৬:৪৪
Share
Save

পুরনো পেশায় ফেরা যাবে! ২০২১-এর শেষে আশায় বুক বাঁধছিলেন রাহুল ও সীতা সরকার। সেজেগুজে গোলাকার লোহার খাঁচায় মোটরবাইকে একসঙ্গে চক্কর দিতে তৈরি হচ্ছিলেন তাঁরা।

সব কিছু চলছিলও ঠিকঠাক। কিন্তু ধাক্কাটা এল ২০২২-এর শুরুতেই। তবু গতি আর ভারসাম্যের বোঝাপড়াটা ছাড়া জীবন পানসে মনে হয়! শনিবার দুপুরে সিঁথির অজন্তা সার্কাসের শো শেষে বলছিলেন রাহুল।

বন্য প্রাণী সংক্রান্ত নানা বিধিনিষেধ, শ্রম আইনের কড়াকড়ির পরে এ বার অতিমারির ধাক্কা। একদা বাঙালির শীতের সঙ্গে ওতপ্রোত ভাবে জড়িত সার্কাসের মৃত্যুঘণ্টা কার্যত আগেই বেজে গিয়েছে। তবু ঘুরে দাঁড়ানোর নাছোড় জেদে সিঁথিতে ফিরেছিল অজন্তা সার্কাস। কিন্তু ২৪ ডিসেম্বর সার্কাস শুরুর সময়েও বোঝা যায়নি, কোভিডের তৃতীয় ঢেউ কতটা মহা সমারোহে আসতে চলেছে।

অজন্তার কর্ণধার রবিউল হকের দাবি, “সিঁথির মাঠে ৩০০০ লোকের বসার জায়গা। বড়দিন বা নতুন বছরে সার্কাস দেখতে আসছেন খুব বেশি হলে ১৫০-২০০ জন। পারস্পরিক দূরত্ব বজায় রাখতে তাই সমস্যা নেই।” তা ছাড়া, সার্কাসের তাঁবু রোজ সকালে হাওয়া চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হয়। সিনেমা হলের মতো বদ্ধ পরিবেশ নয় বলে আশ্বাস দিচ্ছেন রবিউল।

অতিমারির কড়াকড়ি শুরু হওয়ার পরে মাঝে এক দিনের জন্য সার্কাস বন্ধ করে দিয়েছিল স্থানীয় পুলিশ। এর পরেই ‘ভুল বোঝাবুঝি’ কেটেছে। সার্কাসও আগের মতোই চলছে। এ দেশে সার্কাস-মানচিত্রে বাংলা ও দক্ষিণ ভারতেরই সব থেকে গৌরবের অধ্যায়। কিন্তু কয়েক বছরে ধুঁকছে বা কার্যত বন্ধ হয়ে গিয়েছে বহু সার্কাস। অলিম্পিক, ফেমাস, নটরাজ, এম্পায়ার, সম্রাট বা কোহিনুরের এই শীতে দেখা নেই। অলিম্পিক ও ফেমাস সার্কাসের কর্ণধার চন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায় বলছেন, ‘‘সঙ্কটজনক পরিস্থিতির জন্য এখন শো চালুর কথাই ভাবছি না! সময় পাল্টালে ফের ভেবে দেখব।” তবে রবিউল বলছিলেন, সিঁথিতে তাঁবু ফেলার আগে পান্ডুয়ায় ছোট জায়গায় মহড়া দিয়ে ওঁরা তৈরি হচ্ছিলেন। এখন সার্কাসে পশুপাখি বলতে কিছু ম্যাকাও পাখি ও কুকুর। বিদেশি জিমন্যাস্টরা নেই। মূল আকর্ষণ মণিপুরের জিমন্যাস্ট, অ্যাক্রোব্যাটদের উড়ানে নিয়ে আসা হয়েছে। জমে উঠেছে রকমারি ব্যালেন্সের খেলা। খেলোয়াড়, কর্মকর্তাদের মধ্যে অসমের উত্তর লখিমপুরের ট্র্যাপিজ় খেলুড়ে সুমন্ত বেরা, মালয়ালি ম্যানেজার টি জয়রাজেরা রয়েছেন। সার্কাসের খেলোয়াড়েরা অনেকেই পেশা ছেড়ে রাজমিস্ত্রি, টোটো বা রিকশা চালানো বা চাষবাসের জীবন বেছে নিয়েছিলেন।

তাঁবুতে পড়ে থাকা ১২০-২৫ জন সার্কাসকর্মী তাই প্রশ্ন তুলছেন, বার বার নিজেদের পাল্টেও সার্কাসকে আর কত অগ্নিপরীক্ষার মধ্যে দিয়ে যেতে হবে? মোটরসাইকেলের খেলুড়ে রাহুল মালঞ্চে তাঁর বাড়ির কাছে ইটভাটায় গাড়িতে বালি বয়ে নিয়ে যেতেন। এখন তিন ছেলেমেয়ে নিয়ে সস্ত্রীক তাঁবুতে। রাহুলের কথায়, “যা-ই করি, সার্কাসের তাঁবু ছাড়া নিজেদের জলহীন মাছের মতো লাগে। শান্তিতে খেলা দেখানোর সুযোগ পেলে অনেক হাইটেক বিনোদনকেও সার্কাস ঠিক ছাপিয়ে যেতে পারবে।”

Circus Coronavirus COVID19

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

এটি একটি প্রিন্ট আর্টিক্‌ল…

  • এমন অনেক খবরই এখন আপনার হাতের মুঠোয়

  • সঙ্গে রোজ পান আনন্দবাজার পত্রিকার নতুন ই-পেপার পড়ার সুযোগ

  • ই-পেপারের খবর এখন শুধুই ছবিতে নয়, টেক্সটেও

প্ল্যান সিলেক্ট করুন

মেয়াদ শেষে নতুন দামে আপনাকে নতুন করে গ্রাহক হতে হবে

Best Value
এক বছরে

৫১৪৮

১৯৯৯

এক বছর পূর্ণ হওয়ার পর আপনাকে আবার সাবস্ক্রিপশন কিনতে হবে। শর্তাবলী প্রযোজ্য।
*মান্থলি প্ল্যান সাপেক্ষে
এক মাসে

৪২৯

১৬৯

এক মাস পূর্ণ হওয়ার পর আপনাকে আবার সাবস্ক্রিপশন কিনতে হবে। শর্তাবলী প্রযোজ্য।