রাজা বসন্ত রায় রোডের কন্টেনমেন্ট জ়োনের সামনে স্প্রে ছড়িয়ে জীবাণুনাশের কাজ চলছে। ছবি: সুমন বল্লভ
কোথাও দিন দশেক, কোথাও আবার সপ্তাহ দুয়েক আগে কোভিডে আক্রান্ত হয়েছিলেন বাড়ি বা আবাসনের বাসিন্দারা। অভিযোগ, এত দিন পরে সেই সমস্ত বাড়ির সামনের রাস্তাগুলি কন্টেনমেন্ট জ়োন হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। শহরে গত দু’দিনে নতুন করে তিনটি এলাকা কন্টেনমেন্ট জ়োন হওয়ার পরে এমন তথ্যই সামনে এসেছে। সোমবারও এলগিন রোডের একটি বহুতলের সামনের অংশকে কন্টেনমেন্ট জ়োন ঘোষণা করেছে কলকাতা পুরসভা ও পুলিশ।
পুরসভার স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, ৮৭ নম্বর ওয়ার্ডের অন্তর্গত রাজা বসন্ত রায় রোডের একটি আবাসনে দু’জনের করোনা পরীক্ষার রিপোর্ট পজ়িটিভ এসেছে। আবার বালিগঞ্জ সার্কুলার রোডের ৬৯ নম্বর ওয়ার্ডের একটি বহুতলে ১২ জন করোনায় আক্রান্ত বলে খবর। একই ভাবে পাটুলির একটি বহুতল বাড়িতে সাত জন বাসিন্দা করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন বলে জানা গিয়েছে। এলগিন রোডের একটি বহুতলে ১৬ জন করোনায় আক্রান্ত বলে খবর পাওয়া গিয়েছে।
৮৭ নম্বর ওয়ার্ডের পুর কোঅর্ডিনেটর, বিজেপি-র সুব্রত ঘোষের অভিযোগ, “রাজা বসন্ত রায় রোডের আবাসনে যে দু’জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন, নভেম্বর মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহেই তাঁদের রিপোর্ট পজ়িটিভ এসেছিল। ১৯ নভেম্বর তাঁদের করোনা রিপোর্ট নেগেটিভ এসেছে। এত দিন পরে ওই বাড়ির সামনে কন্টেনমেন্ট জ়োন করার অর্থ কী?” একই অভিযোগ করেছেন পাটুলির ভ্যালি পার্কের একটি আবাসনের বাসিন্দা মানস ভট্টাচার্য। তাঁর দাবি, “গত ১৪ নভেম্বর আমাদের আবাসনের ১৩ জন বাসিন্দার নমুনা পরীক্ষার জন্য সংগ্রহ করা হয়। পরে জানা যায়, তাঁদের মধ্যে সাত জনেরই কোভিড হয়েছে। এত দিন পরে যখন সবাই সুস্থ হয়ে উঠেছেন, তখন এই এলাকা কন্টেনমেন্ট জ়োন করাটা তো অর্থহীন।’’ মানসবাবু বলেন, “আমাদের আবাসনের নিজস্ব গেটই ব্যারিকেডের কাজ করছে। বাসিন্দারা কেউ বাইরে বেরোচ্ছেন না।’’
ঘেরাটোপ: এলগিন রোডে ওই বহুতলের সামনে প্রবেশ নিষেধের বোর্ড লাগাচ্ছে পুলিশ। সোমবার। ছবি: সুমন বল্লভ
কলকাতা পুরসভার ৭০ নম্বর ওয়ার্ডের পুর কোঅর্ডিনেটর অসীম বসু বর্তমানে ৬৯ নম্বর ওয়ার্ডেরও দেখভাল করছেন। তিনি বলেন, “দু’-তিন দিন আগে বালিগঞ্জ সার্কুলার রোডের একটি বহুতলে ১২ জন আক্রান্ত হয়েছেন। তা ছাড়া, আমার ওয়ার্ডেও এ দিন এলগিন রোডের একটি বহুতলে কয়েকটি ফ্ল্যাট মিলিয়ে ১৬ জন বাসিন্দার কোভিডে আক্রান্ত হওয়ার খবর পাওয়া গিয়েছে।’’
প্রশ্ন উঠেছে, সংক্রমণের খবর পাওয়ার এত দিন পরে প্রশাসনের তরফে কন্টেনমেন্ট জ়োন ঘোষণা করা হচ্ছে কেন? পুরসভার প্রশাসকমণ্ডলীর সদস্য এবং স্বাস্থ্য দফতরের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রাক্তন ডেপুটি মেয়র অতীন ঘোষ বলেন, “এই অভিযোগ কতটা ঠিক, তা খতিয়ে দেখা প্রয়োজন। প্রতিদিনই যে সমস্ত ওয়ার্ড থেকে সংক্রমণের খবর আসছে, সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ড কোঅর্ডিনেটরদের সেই তালিকা পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে। বিষয়টি তাঁদেরও নজরে আনা প্রয়োজন।’’
পুলিশ কন্টেনমেন্ট জ়োন কেন ঘিরছে না, তা নিয়েও অভিযোগ উঠেছে। অতীনবাবু বিষয়টি খতিয়ে দেখবেন বলে আশ্বাস দেন। পুলিশ জানিয়েছে, কন্টেনমেন্ট জ়োন ঘোষণা করতে হবে, এমন নির্দেশ পেলে তবেই তারা সেখানে যাচ্ছে। তাদের দাবি, গার্ডরেল দিয়ে ব্যারিকেড দেওয়ার ব্যাপারে প্রশাসনের তরফে কোনও নির্দেশ আসেনি। শুধুমাত্র এলগিন রোডের আবাসনের সামনেই পুলিশ গার্ডরেল বসিয়েছে।
এ দিন রাজা বসন্ত রায় রোডের আবাসনে গিয়ে দেখা গেল, সেখানে পুরসভার তরফে জীবাণুনাশের কাজ চলছে। বাইরের কাউকে প্রবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে না। বালিগঞ্জ সার্কুলার রোডের আবাসনে গিয়ে দেখা যায়, গেটে ঝুলছে ‘বহিরাগতের প্রবেশ নিষেধ’ লেখা বোর্ড। নীচের অফিসও বন্ধ। বাইরে থেকে খাবার নিয়ে এসে পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে বাসিন্দাদের। ওই আবাসনের বাইরেও অবশ্য পুলিশের কোনও গার্ডরেল চোখে পড়েনি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy