ফাইল চিত্র।
করোনা অতিমারির এই সঙ্কটজনক পরিস্থিতিতে কোনও পড়ুয়া ফি দিতে না পারলেও তাকে স্কুল থেকে বহিষ্কার বা অনলাইন ক্লাস থেকে বঞ্চিত করা যাবে না। শুক্রবার কলকাতা হাইকোর্ট স্কুলের ফি সংক্রান্ত একটি মামলায় এই অন্তর্বর্তী নির্দেশ জারি করেছে।
সম্প্রতি বেশ কিছু স্কুল অভিযোগ করেছিল যে, বহু পড়ুয়া সারা বছর ধরে কোনও ফি-ই দেয়নি। যেমন, দিল্লি পাবলিক স্কুলের আইনজীবী জানিয়েছেন, ওই স্কুলের ২১ জন পড়ুয়া কোনও ফি না দেওয়ায় কর্তৃপক্ষের ১৬ লক্ষ টাকা বকেয়া রয়েছে।
হাইকোর্ট জানিয়েছে, করোনার কারণে দেশ এখন এক সঙ্কটজনক অবস্থার মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে। গত ২৪ থেকে ৪৮ ঘণ্টায় সারা দেশে তিন লক্ষেরও বেশি মানুষ কোভিড পজ়িটিভ হয়েছেন। করোনার দ্বিতীয় ঢেউ এমন ভাবে সারা দেশে আছড়ে পড়েছে যে, সাধারণ মানুষ সঙ্কটে রয়েছেন।
এই অবস্থায় কোনও ভাবেই কোনও পড়ুয়াকে অনলাইন ক্লাস থেকে বাদ দেওয়া যাবে না। তবে হাইকোর্টের এই নির্দেশের ফলে সুযোগের অপব্যবহার করে অভিভাবকেরা ফি একেবারেই মেটালেন না, এমনও যাতে না হয়, সেটাও দেখতে হবে। সেই সঙ্গেই হাইকোর্ট জানিয়ে দিয়েছে, গত ১৩ অক্টোবর তারা ফি সংক্রান্ত যে নির্দেশ দিয়েছিল, পরবর্তী নির্দেশ দেওয়ার আগে পর্যন্ত সেটাই বহাল থাকছে।
ফি সংক্রান্ত একটি মামলার শুনানিতে গত ১৩ অক্টোবর হাইকোর্ট নির্দেশ দিয়েছিল যে, অভিভাবকদের ৮০ শতাংশ ফি মিটিয়ে দিতে হবে। অতিমারির মধ্যে স্কুল যে সমস্ত পরিষেবা দিতে পারছে না, সে সবের জন্য ফি নেওয়া যাবে না। গত বছরের ৩০ নভেম্বরের মধ্যে ওই ৮০ শতাংশ বকেয়া ফি মিটিয়ে দেওয়ার কথা বলেছিল হাইকোর্ট। ওই সময়ের মধ্যে বকেয়া না মেটালে স্কুল নিজের মতো ব্যবস্থা নিতে পারবে, এমনটাও জানিয়েছিল আদালত।
বেশ কিছু বেসরকারি স্কুলের অধ্যক্ষেরা জানাচ্ছেন, তাঁদের স্কুলের পড়ুয়াদের একাংশ ৮০ শতাংশ ফি মেটানো তো দূরের কথা, গত বছরের মার্চ মাসে নতুন ক্লাসে ওঠার অ্যাডমিশন ফি বাদে সারা বছর ধরে আর কোনও ফি-ই মেটায়নি। অথচ, স্কুল কর্তৃপক্ষ খোঁজ নিয়ে দেখেছেন যে, ওই সমস্ত পড়ুয়ার অভিভাবকেরা যথেষ্টই অবস্থাপন্ন। তাঁরা হাইকোর্টের নির্দেশ মতো ৮০ শতাংশ ফি অনায়াসেই মেটাতে পারেন। একটি স্কুলের অধ্যক্ষা বললেন, “নতুন ক্লাসে ওঠার অ্যাডমিশন ফি বাদে অন্য কোনও ফি মেটায়নি, এমন পড়ুয়াদের বিরুদ্ধে আমরা কিন্তু কোনও ব্যবস্থা নিইনি। তাদের অনলাইন ক্লাসও করতে দিচ্ছি। তারা পরীক্ষা দিয়ে নতুন ক্লাসেও উঠেছে। কিন্তু এই সুযোগ অভিভাবকেরা নেবেন কেন? তা হলে যে সব পড়ুয়া ৮০ শতাংশ ফি দিচ্ছে, তারা যখন দেখবে, তারই কোনও বন্ধু কোনও রকম ফি না দিয়েই নতুন ক্লাসে উঠে গেল, তখন তার দেখাদেখি সে-ও ফি না দিতে চাইতে পারে। এই ভাবে ফি না দেওয়ার প্রবণতা বাড়লে একটা স্কুল চলবে কী করে?”
অভিভাবকদের তরফেও অবশ্য বিভিন্ন স্কুল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে প্রচুর অভিযোগ রয়েছে। তাঁদের সংগঠন ‘ইউনাইটেড গার্ডিয়ান্স অ্যাসোসিয়েশন’-এর তরফে সুপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, “আমরা অভিভাবকদের বলেছি, হাইকোর্টের নির্দেশ মতো ৮০ শতাংশ ফি মিটিয়ে দিন। কিন্তু বেশ কিছু স্কুল হাইকোর্টের নির্দেশকে অমান্য করে ৮০ শতাংশের বদলে পুরো ফি নিচ্ছে। দিতে না পারলে অনলাইন ক্লাস বন্ধ করে দেওয়ার উদাহরণও রয়েছে। এমনকি, এই শিক্ষাবর্ষে হাইকোর্টের নির্দেশ অমান্য করে করোনা অতিমারির মধ্যেও অস্বাভাবিক হারে ফি বৃদ্ধি করেছে বেশ কিছু স্কুল। আমরা এ বিষয়ে হস্তক্ষেপ চেয়ে রাজ্য সরকারের কাছে বার বার অনুরোধ জানিয়েছি।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy