Advertisement
১৯ ডিসেম্বর ২০২৪
Coronavirus

জনতা কার্ফুর তাল কাটল ক্রিকেটে, পটকায়

বিকেলের এই উৎসবের সূচনা পর্বটি যেন দুপুরেই ফাঁকা শহরের কিছু জায়গায় শুরু হয়েছিল।

জনতা কার্ফুর মধ্যেই সি আর অ্যাভিনিউয়ে চুটিয়ে চলছে ক্রিকেট। তা দেখতে ভিড় স্থানীয়দের।  রবিবার। ছবি: দেবস্মিতা ভট্টাচার্য

জনতা কার্ফুর মধ্যেই সি আর অ্যাভিনিউয়ে চুটিয়ে চলছে ক্রিকেট। তা দেখতে ভিড় স্থানীয়দের। রবিবার। ছবি: দেবস্মিতা ভট্টাচার্য

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৩ মার্চ ২০২০ ০২:৪৩
Share: Save:

রবিবারের বিকেল। পাঁচটা বাজতে না বাজতেই জরুরি পরিষেবার সঙ্গে যুক্তদের অভিবাদন জানানোর নামে কলকাতায় যে উৎসব শুরু হল, তা বড়সড় প্রশ্ন তুলে দিল শহরের সুরক্ষা নিয়েই। চিকিৎসকদের অনেকেই বলছেন, সারাদিন তবে বাড়িতে থেকে লাভ কী হল?

জাতির উদ্দেশে বক্তৃতায় ‘জনতা কার্ফুর’ আহ্বান জানানোর পাশাপাশি এই পরিস্থিতির মধ্যেও যাঁরা জরুরি পরিষেবার সঙ্গে যুক্ত থেকে কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন, তাঁদের অভিবাদন জানানোর জন্য বলেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। এ জন্য বিকেল পাঁচটা নাগাদ বাড়ির জানলা খুলে রেখে বা বারান্দায় দাঁড়িয়ে হাততালি দিতে বা ঘণ্টা বাজাতে বলেছিলেন তিনি। যাঁরা বাদ্যযন্ত্র বাজাতে পারেন তাঁদের তা বাজানোর জন্যও অনুরোধ করা হয়েছিল। কিন্তু এ দিন বিকেলে ঠিক পাঁচটা বাজতেই জায়গায় জায়গায় জড়ো হতে শুরু করেন অনেকে। কেউ সঙ্গে এনেছিলেন কাঁসর-ঘণ্টা। কেউ আবার হাতা-খুন্তি সহযোগে হাঁড়ি বা গামলা। তফাতে দাঁড়িয়ে সে সব বাজানো তো দূর, অনেককেই দেখা গিয়েছে, সে সব বাজাতে বাজাতে একে অন্যের গায়ে ঢলে পড়ছেন আনন্দে। সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার কথা বলা হচ্ছে যেখানে, সেখানে এই স্পর্শ কতটা নিরাপদ?

কয়েকটি আবাসনে আবার বিতর্ক আরও এক ধাপ বাড়িয়ে পুজোর সময়ে জমিয়ে রাখা শব্দ-বাজিও ফাটানো হয়েছে বলে অভিযোগ। সলতেয় আগুন দিয়ে বাগমারি পার্কের আবাসনের এক তরুণীকে বলতে শোনা যায়, ‘‘আসছে বছর আবার হবে।’’ পাশে দাঁড়ানো প্রতিবেশীদের হাততালি দেওয়ার দৃশ্য প্রশ্ন তুলে দিয়েছে, মারণ রোগ নিয়ে শহরের সচেতনতা কি আসলে তলানিতেই?

ই এম বাইপাস লাগোয়া যে আবাসনে রাজ্যের প্রথম করোনা-আক্রান্ত থাকেন তার পাশের একটি আবাসন থেকে আবার খবর এসেছে, একসঙ্গে অনেকে মিলে সেখানে জড়ো হয়ে বক্সে ‘উই শ্যাল ওভার কাম’ বাজিয়েছেন। একসঙ্গে জমায়েত করে এ হেন ‘কর্মসূচি’কে সমর্থন করতে পারছেন না কেউই।

তবে বিকেলের এই উৎসবের সূচনা পর্বটি যেন দুপুরেই ফাঁকা শহরের কিছু জায়গায় শুরু হয়েছিল। বহু রাস্তার মোড়ে মোড়ে চলেছে ক্রিকেট খেলা। কোথাও আবার ফাঁকা মাঠে ক্রিকেট না ফুটবল চলবে তাই নিয়েও তর্ক হয়েছে। দুপুরে উল্টোডাঙা মোড়ে দেখা গেল, জনা তিরিশ যুবক রাস্তার মাঝে ক্রিকেট খেলছেন। কলকাতা পুলিশের গার্ডরেল টেনে নিয়ে তৈরি হয়েছে ‘মাঠের সীমানা’। কয়েক দফা খেলা চলার পরে দ্রুতগতিতে আসা একটি অ্যাম্বুল্যান্স রাস্তা আটকে দাঁড়ায়। তত ক্ষণে অ্যাম্বুল্যান্স ঘিরে ধরা যুবকদের উদ্দেশে চালক বলেন, ‘‘আমরা খেটে মরছি, আর তোমরা বাড়ি না থেকে খেলতে নেমেছ?’’ যুবকদের একসুরে চিৎকার, ‘‘ভাইরাস বুঝে নেব। আগে চলো।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Coronavirus Health Janata Curfew
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy