Advertisement
২৩ ডিসেম্বর ২০২৪
Coronavirus

বাতিল প্রতিমার বরাত, ক্ষতির আশঙ্কা কুমোরটুলিতে

প্রতি বছর বাসন্তীর তুলনায় অন্নপূর্ণা প্রতিমা গড়ার বায়না বেশি পায় কুমোরটুলি। কুমোরটুলির মৃৎশিল্পীরা জানাচ্ছেন, লকডাউনের জেরে দু’টি পুজোরই প্রতিমার অর্ধেক বায়না বাতিল করেছেন উদ্যোক্তারা।

প্রতীকী ছবি

প্রতীকী ছবি

মেহবুব কাদের চৌধুরী
শেষ আপডেট: ২৬ মার্চ ২০২০ ০২:২৬
Share: Save:

করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে গোটা দেশে চলছে লকডাউন। স্বাভাবিক ভাবেই বন্ধ কলকাতাও। এমন অবস্থায় ৩১ মার্চ বাসন্তী পুজো এবং ১ এপ্রিল অন্নপূর্ণা পুজো হওয়ার কোনও সম্ভাবনাই নেই। ফলে মাথায় হাত পড়েছে কুমোরটুলির শিল্পীদের। কারণ, বহু প্রতিমা যখন প্রায় শেষের মুখে, তখনই একের পর এক বায়না বাতিল করতে ফোন আসছে।

প্রতি বছর বাসন্তীর তুলনায় অন্নপূর্ণা প্রতিমা গড়ার বায়না বেশি পায় কুমোরটুলি। কুমোরটুলির মৃৎশিল্পীরা জানাচ্ছেন, লকডাউনের জেরে দু’টি পুজোরই প্রতিমার অর্ধেক বায়না বাতিল করেছেন উদ্যোক্তারা।

এখন যা পরিস্থিতি, তাতে শিল্পীদের তৈরি প্রতিমা আর বিক্রি হবে না। ফলে বিপুল ক্ষতির মুখে পড়তে চলেছেন বলে আশঙ্কা ঘিরে ধরছে কুমোরটুলির প্রায় ৬০০ শিল্পীকে।

চলতি বছরেই এখানে অন্নপূর্ণা প্রতিমা তৈরি হয়ে গিয়েছে প্রায় পাঁচশোটি। বাসন্তী প্রতিমা ৫০টির মতো তৈরি হয়ে আছে। শিল্পীরা জানাচ্ছেন, প্রতিমা তৈরি করতে রং, মাটি, খড় ছাড়াও গয়না প্রয়োজন হয়। এ সব যথেষ্ট খরচসাপেক্ষ। পাশাপাশি শ্রমিকদের খরচ তো রয়েছেই। শিল্পীরা বলছেন, অন্নপূর্ণা ও বাসন্তী পুজো বাতিল করায় যে প্রবল ক্ষতি হল, সেই বোঝা কত দিনে তাঁদের উপর থেকে নামবে জানা নেই।

কুমোরটুলির এক শিল্পী সুজিত পাল বলছেন, ‘‘আমার ১৫টি অন্নপূর্ণা প্রতিমার বায়না বাতিল হয়েছে। এই প্রতিমা তৈরি করে যে লাভ হয়, সেই টাকায় দুর্গার কাঠামো তৈরি শুরু করি। এখন যা পরিস্থিতি, পুরো পদ্ধতিটাই ভেস্তে গেল।’’ আক্ষেপ করছিলেন কুমোরটুলি মৃৎশিল্প সংস্কৃতি সমিতির সাধারণ সম্পাদক বাবু পাল। তাঁর কথায়, ‘‘করোনা আমাদের সব দিক দিয়ে সর্বস্বান্ত করে দিল। আমার দশটি অন্নপূর্ণা ও চারটি বাসন্তী প্রতিমার বায়না বাতিল হয়ে গিয়েছে। জানি না এই ক্ষতি কী ভাবে, কবে পূরণ হবে।’’

করোনাভাইরাসের জেরে পরিস্থিতি যে এতটা ভয়ঙ্কর হবে তা এখনও ভাবতে পারছেন না সমিতির সম্পাদক কার্তিক পাল। তিনি বলেন, ‘‘৪০ হাজার টাকার একটি অন্নপূর্ণা প্রতিমার বায়না এসেছিল সোদপুর থেকে। দিন তিনেক আগে উদ্যোক্তাদের তরফে জানানো হয়েছে, তাঁরা এ বার পুজো করছেন না। ওঁরা আগাম আমাকে পাঁচ হাজার টাকা দিয়েওছিলেন। কাজ প্রায় শেষ হয়ে গিয়েছিল। বাকি টাকা তো পাবই না, প্রতিমা তৈরির পুরো টাকা-শ্রমও জলে গেল।’’

মৃৎশিল্পী মিন্টু পালের কথায়, ‘‘দুর্গাপুজোর মরসুম ছাড়া অন্নপূর্ণা প্রতিমা গড়ে এখানে বহু শিল্পীর সংসার চলে। করোনার ধাক্কায় সকলের মতোই ক্ষতির গ্রাসে কুমোরটুলি। দশটি বায়না বাতিল হয়েছে। অন্নপূর্ণা প্রতিমা গড়তে এখানে বহু শিল্পী বিভিন্ন জেলা থেকে আসেন। এই অবস্থায় তাঁদের বাড়ি ফিরিয়ে দিয়েছি।’’

এই কঠিন সময়ে রাজ্য সরকারের সহযোগিতা চাইছেন কুমোরটুলির শিল্পীরা।

অন্য বিষয়গুলি:

Coronavirus Kumortuli
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy