প্রতীকী ছবি।
বালিগঞ্জের বহুতল আবাসনের এক পরিচারকের দেহে করোনা-সংক্রমণ মেলায় আতঙ্কিত শহরের বিভিন্ন আবাসনের বাসিন্দারা। ওই পরিচারকের কথা জানার পরেই কলকাতার বিভিন্ন আবাসনের তরফে জরুরি ভিত্তিতে পরিচারক-পরিচারিকাদের নিয়ে বিধি-নিষেধ জারি করা হয়েছে।
বালিগঞ্জের পণ্ডিতিয়া রোডের আবাসনের বাসিন্দা এক যুবকের দেহে করোনাভাইরাস মেলার পরে তাঁর বাবা, মা এবং বাড়ির পরিচারকের দেহেও এই ভাইরাস পাওয়া গিয়েছে। রবিবার সন্ধ্যায় এই খবর ছড়িয়ে পড়ার পরেই শহরের বিভিন্ন আবাসন কমিটির তরফে জরুরি বৈঠক ডাকা হয়। শহরের প্রথম করোনা-আক্রান্ত যুবক ই এম বাইপাসের যে বহুতল আবাসনের বাসিন্দা, সেখানকার কমিটির সাধারণ সম্পাদক নীলাঞ্জন দাস বলেন, ‘‘রবিবারই আমাদের আবাসনের সমস্ত চিকিৎসকদের নিয়ে একটি জরুরি বৈঠক ডাকা হয়। সেই বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছে, আগামী ৩১ মার্চ পর্যন্ত পরিচারিকাদের ঢুকতে দেওয়া হবে না। তবে একাকী, প্রবীণ এবং অসুস্থদের দেখভাল করেন যাঁরা, তাঁদের শর্তসাপেক্ষে আবাসনে ঢোকার ছাড়পত্র মিলবে।’’
পণ্ডিতিয়া রোডের ওই আবাসনের তরফে বহিরাগতদের যাতায়াত পুরোপুরি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। আবাসনের এক বাসিন্দা বলেন, ‘‘শুনেছি, ওই পরিচারক এই তল্লাটেই থাকেন। তিনি একাধিক বাড়িতে কাজও করতেন বলে শুনেছি। এ ক্ষেত্রে তাঁর থেকে সংক্রমণ ছড়ানোর প্রবল আশঙ্কা রয়েছে।’’ দক্ষিণ কলকাতার সাউথ সিটি আবাসনের সম্পাদক এম ভি বিজু বলেন, ‘‘আমাদের আবাসনের ৯০ শতাংশ পরিচারিকাদের আসতে নিষেধ করেছি। বাকি দশ শতাংশ পরিচারক-পরিচারিকাদের উপরে আবাসনের প্রবীণ, অসুস্থ ব্যক্তিরা নির্ভরশীল। তাঁদের ক্ষেত্রে আবাসনে ঢোকার আগে নিরাপত্তারক্ষীরা ভাল করে হাতে স্যানিটাইজ়ার দিচ্ছেন। আবাসনে ঢোকার আগে পোশাক বদলাতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।’’ গড়িয়াহাটের এক বহুতল আবাসনের সম্পাদক অমিত বসুর কথায়, ‘‘আবাসনের সমস্ত পরিচারিকাদের সবেতন ছুটি দিতে আবাসিকদের কাছে আবেদন জানানো হয়েছে।’’ তিনি আরও জানান, আবাসনের বৃদ্ধ-বৃদ্ধাদের জন্য বিশেষ ছাড় রয়েছে। সে ক্ষেত্রে পরিচারিকারা আবাসনে ঢুকলেও সংক্রমণ ঠেকাতে মূল ফটকের বাইরে জলের সংযোগ করা হয়েছে। সেখানে সাবান, স্যানিটাইজ়ার রাখা আছে। আবাসনে ঢোকার আগে ভাল করে হাত ধুয়ে নিতে পরামর্শ দিচ্ছেন নিরাপত্তারক্ষীরা।
রাজারহাটের একটি বহুতল আবাসন কমিটির সাধারণ সম্পাদক অতুলচন্দ্র দাস বলেন, ‘‘পরিচারকদের নিয়ে সরকারি নির্দেশিকা থাকলে ভাল হয়। আবাসন কমিটির তরফে পরিচারিকাদের ঢোকা নিয়ে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হলেও অনেক আবাসিক আপত্তি করছেন।’’ দক্ষিণ কলকাতার বিবেকানন্দ পার্কের কাছে দু’টি বহুতল আবাসনে কাজ করেন ঢাকুরিয়ার বাসিন্দা বিভা নস্কর। বিভা বলেন, ‘‘ওই দুই বাড়ি থেকে আমাকে আগামী ৩১ মার্চ পর্যন্ত সবেতন ছুটি দেওয়া হয়েছে। বালিগঞ্জের আবাসনের পরিচারকের দেহে করোনাভাইরাস মেলায় আমার পরিচিত বেশ কয়েক জন আতঙ্কে কাজে যেতে চাইছেন না। তাদের আবার অনেকে কাজ থেকে ছাড়িয়ে দেওয়ার হুমকিও দিচ্ছেন। সরকার আমাদের নিরাপত্তার দিকটা খতিয়ে দেখুক।’’ পশ্চিমবঙ্গ গৃহ পরিচারিকা সমিতির সাধারণ সম্পাদক মিঠু সাহার আবেদন, ‘‘সমস্ত আবাসন, ফ্ল্যাট, বাড়ির মালিকদের কাছে আমাদের বিনীত আবেদন, এই পরিস্থিতিতে পরিচারিকাদের সবেতন ছুটি দেওয়া হোক।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy