নতুন খাতা সাজিয়ে রাখছেন এক বিক্রেতা। বৌবাজারে। নিজস্ব চিত্র
বাংলা নববর্ষ বলতেই ভেসে ওঠে লাল শালু মোড়ানো হিসেবের খাতা। প্রযুক্তির ভিড়ে যা কিছুটা জৌলুস হারিয়েছিল। লকডাউনের জেরে এ বার পুরোপুরিই কমে গেল লাল রঙা সেই খাতার চাহিদা!
১৫ এপ্রিল বাংলা নববর্ষ। লকডাউন ১৪ এপ্রিল শেষ হলেও অধিকাংশ মানুষই মনে করছেন, ওই মেয়াদ বাড়তে পারে। সে ক্ষেত্রে দোকানগুলিতে এ বছর ঘটা করে হালখাতা উৎসব করা কার্যত অসম্ভব। এই বিপর্যয়ে মাথায় হাত পড়েছে বড়বাজারের হালখাতা বিক্রেতা থেকে পাড়ার ছোট-বড় দোকানদারদের।
এমন কিছু যে হতে পারে তা আঁচ করতে পারেননি হালখাতার পাইকারি ব্যবসায়ী গোবিন্দ সাহা। বড়বাজারে সোনাপট্টির এম জি রোডে প্রায় একশো বছরের পারিবারিক ব্যবসা তাঁদের। “বছর পাঁচেক ধরে কম্পিউটারের দৌলতে আমাদের ব্যবসা কিছুটা মার খেলেও চৈত্রের দিকে চেয়ে থাকতাম। চাহিদা কমে গেলেও গত বছর এই সময়ে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে দোকানে হালখাতা কিনতে এসেছিলেন অসংখ্য মানুষ। লকডাউন সব কিছু শেষ করে দিল।” একই হাল বড়বাজারের অন্য ব্যবসায়ীদের। এক ব্যবসায়ী রমেন দত্তের কথায়, “হালখাতা উপলক্ষে অনেকেই খাতা কিনতে আসতেন। এ বার পরিস্থিতিটাই সব কিছু বদলে দিল।”
আরও পড়ুন: পথকুকুরদের খাবার দিতে বাজার করছেন স্কুলশিক্ষক
হিসেবের এই খাতা তৈরির কয়েকটি ছাপাখানা রয়েছে শিয়ালদহের বৈঠকখানা রোডে। সেখানে প্রায় পঞ্চাশ বছর ধরে কারখানা চালাচ্ছেন মোতিয়ার রহমান। তিনি বলেন, “প্রতি বছর হালখাতা উৎসব উপলক্ষে খাতা তৈরির প্রচুর বরাত আসে। করোনার জন্য ব্যবসায় কয়েক লক্ষ টাকার ক্ষতি হল। আমার এখানে পাঁচ জন কর্মী আছেন। তাঁদের বেতন কী ভাবে দেব, এখন সেটাই বড় চিন্তা।”
এই সঙ্কটে রাতের ঘুম ছুটেছে পাড়ার ছোট-বড় ব্যবসায়ীর। উল্টোডাঙার এক কাপড়ের দোকানের মালিক রাম চক্রবর্তীর কথায়, “প্রতি বছর হালখাতা করি। কিন্তু এ বার মনে হচ্ছে দোকানই খুলতে পারব না। এটা ভাবতেই কষ্ট হচ্ছে।” মন খারাপের এই ছবি ঘুরছে শহরের উত্তর থেকে দক্ষিণের বাজার এলাকায় ব্যবসায়ীদের।
নতুন বছর আবাহনের আনন্দ বিষাদে বদলে দিচ্ছে করোনা বিপর্যয়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy