বাড়িতে পড়ে ছায়া চট্টোপাধ্যায়ের দেহ। নিজস্ব চিত্র
নিজের বাড়িতে সংজ্ঞাহীন হয়ে প্রায় ৬ ঘণ্টা ধরে পড়ে রইলেন এক বৃদ্ধা। কিন্তু তারপরও তাঁকে তুলে চিকিৎসার ব্যবস্থা করার লোক পাওয়া গেল না। এগিয়ে এলেন না আত্মীয় থেকে শুরু করে পাড়া প্রতিবেশীরাও। কার্যত বিনা চিকিৎসায় ঘরের মেঝেতে পড়ে মৃত্যু হয় ওই ৭০ বছরের বৃদ্ধার। পরে খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে বৃদ্ধার দেহ উদ্ধার করে। পাড়ার বাসিন্দাদের একাংশের দাবি, বৃদ্ধা করোনাতে আক্রান্ত হয়ে থাকতে পারেন এই আতঙ্কেই কেউ তাঁকে উদ্ধার করতে যাননি।
রবিবার এমন ঘটনাই ঘটেছে উত্তর কলকাতার শ্যামপুকুর থানা এলাকার বৃন্দাবন পাল লেনে। বাড়ির একতলায় ভাড়া থাকতেন বৃদ্ধা ছায়া চট্টোপাধ্যায়। একাই থাকতেন ওই বৃদ্ধা। স্বামী অনুপ চট্টোপাধ্যায় অনেক বছর আগে মারা গিয়েছেন। ওই একই বাড়িতে থাকেন ছায়ার দেওর অমিত চট্টোপাধ্যায়।
পাড়ার বাসিন্দাদের একাংশ জানিয়েছেন, বৃদ্ধার পায়ে একটা সংক্রমণ ছিল। গত কয়েকদিন ধরেই তিনি অসুস্থ ছিলেন। এ দিন সকালে সাড়ে ৯টা নাগাদ অমিত বাবু ছায়া চট্টোপাধ্যায়কে সংজ্ঞাহীন অবস্থায় ঘরের মেঝেতে পড়ে থাকতে দেখেন। প্রতিবেশীরা অমিতবাবুর কাছ থেকেই জানতে পারেন ছায়াদেবী মেঝেতে পড়ে রয়েছেন। কিন্তু করোনা আক্রান্ত হতে পারেন ওই বৃদ্ধা, এই ভয়ে কেউ এগোননি বৃদ্ধাকে উদ্ধার করে চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যেতে। প্রতিবেশীদের একাংশের দাবি, তাঁরা স্থানীয় এক চিকিৎসককে খবর দিয়েছিলেন। কিন্তু সেই চিকিৎসক আসতে অস্বীকার করেন। এর পর পাড়ার বাসিন্দারা থানায় খবর দেন বলে দাবি করেছেন। কিন্তু এত কিছুর মধ্যে কেউ নিজেরা বৃদ্ধাকে উদ্ধার করতে এগোননি।
আরও পড়ুন: বিধানসভা ডাকতে ফের গহলৌতের চিঠি, এড়ালেন আস্থা-প্রসঙ্গ
পুলিশের দাবি, পৌনে ৩টে নাগাদ তাঁরা খবর পান। ৩টে নাগাদ তাঁরা ঘটনাস্থলে পৌঁছন। ততক্ষণে নিথর হয়ে গিয়েছে বৃ্দ্ধার দেহ। পুলিশ বৃদ্ধাকে নিয়ে যায় আরজিকর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। সেখানে চিকিৎসকরা জানান, অনেক আগেই মৃত্যু হয়েছে বৃদ্ধার। গোটা ঘটনার প্রাথমিক তদন্ত করার পর পুলিশের দাবি, সময় মতো চিকিৎসা করা গেলে হয়তো প্রাণ বাঁচানো যেত বৃদ্ধার। কিন্তু করোনা ভয়ে আতঙ্কিত এলাকার মানুষ থেকে শুরু করে তাঁর আত্মীয়রা সেই চেষ্টা করেননি। কার্যত বিনা চিকিৎসায় মৃত্যু হল বৃদ্ধার।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy