যাত্রীদের হাতে দেওয়া হচ্ছে ‘স্যানিটাইজর’ (বাঁ দিকে), মেট্রো রেকগুলিকে জীবাণুমুক্ত করা হচ্ছে (ডান দিকে)—নিজস্ব চিত্র।
ভিড় এড়িয়ে চলার পরামর্শ দিচ্ছে স্বাস্থ্য মন্ত্রক। রাজ্যের স্বাস্থ্য দফতরও একই আর্জি জানিয়েছে। বড় জমায়েত থেকে দূরে থাকতে বলা হচ্ছে। কিন্তু দৈনন্দিন কাজকর্মের জন্য বাস-ট্রাম-ট্রেন-মেট্রো এড়িয়ে চলাফেরা প্রায় অসম্ভব। সে জন্য গত কয়েক দিন ধরেই গণপরিবহণকে যতটা সম্ভব জীবাণুমুক্ত করতে উদ্যোগী হয়েছে কেন্দ্র এবং রাজ্য— দু’পক্ষই। মঙ্গলবার কলকাতায় দেখা গেল, রাজ্য পরিবহণ দফতর বাস-ট্রামের যাত্রীদের হাতে ‘স্যানিটাইজার’ দিচ্ছে। অন্য দিকে, মেট্রো রেকগুলিকে জীবাণুমুক্ত করার পাশাপাশি কর্মীদের দেখা গেল হাতে ‘গ্লাভস’ পরে টিকিট বিক্রি করতে।
ঘন ঘন সাবানজল অথবা অ্যালকোহলযুক্ত ‘স্যানিটাইজার’ দিয়ে হাত জীবাণুমুক্ত করতে বলছেন চিকিৎসকেরা। বাস-ট্রামে-মেট্রো-ট্রেনে চড়ার সময় হাত থেকেই জীবাণু ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা থাকে। সে কারণে এক দিকে যেমন বাস-ট্রামে জীবাণুনাশক স্প্রে করা হচ্ছে, তেমনই যাত্রীদের হাতে দেওয়া হচ্ছে ‘স্যানিটাইজর’। শহরের বিভিন্ন রুটে চলা সমস্ত সরকারি বাসেই এ দিন থেকে ওই স্যানিটাইজেশনের কাজ শুরু হয়েছে। শুধু যাত্রীরাই নয়, বাসচালক থেকে কন্ডাকটর, এমনকি ডিপোতে থাকা কর্মীদেরও ঘন ঘন হাত পরিষ্কার করতে বলা হয়েছে। রাজ্য পরিবহণ নিগমের ম্যানেজিং ডিরেক্টর রাজেনবীর সিংহ কপূর বলেন, “গণপরিবহণকে আমরা জীবাণুমুক্ত করার চেষ্টা করছি। যাত্রীদের হ্যান্ড স্যানিটাইজেশনের কাজও চলছে। বেশি ভিড় যাতে না হয়, সে জন্য বাসের সংখ্যাও বাড়ানো হচ্ছে।”
তবে বেসরকারি বাসের ক্ষেত্রে এমন কোনও উদ্যোগ এখনও পর্যন্ত দেখা যায়নি। যদিও বাস সংগঠনগুলির দাবি, নিয়মিত ভাবে বাসগুলি পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নের কাজ চলছে। হাত স্যানিটাইজেশনের বিষয়টিও বেসরকারি বাসে চালু করা যায় কি না তা-ও ভেবে দেখছে সংগঠনগুলি।
জয়েন্ট কাউন্সিল অব বাস সিন্ডিকেটের তরফে তপন বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘বাসচালক, কন্ডাকটরদের মাস্ক দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া বাস জীবাণুমুক্ত করতে স্প্রে-ও করা হচ্ছে। হ্যান্ড স্যানিটাইজেশনের বিষয়টি আমরা চালু করার কথা ভাবছি।’’
মেট্রো কর্মীদের হাতে গ্লাভস পরার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে—নিজস্ব চিত্র
মেট্রোর তরফে জানানো হয়েছে, প্রতিটি রেক কারশেডে পৌঁছনোর পর জীবাণুনাশক স্প্রে দিয়ে পরিচ্ছন্ন রাখার চেষ্টা চলছে। মেট্রো স্টেশনগুলিও পরিচ্ছন্ন রাখা হচ্ছে একই ভাবে। এর পাশাপাশি সম্প্রতি সিনিয়র ট্রান্সপোর্টেশন ম্যানেজার (কমার্শিয়াল) কৌশিক মিত্রের তরফে একটি নির্দেশিকা জারি করা হয়েছে কর্মীদের জন্য। সেখানে বলা হয়েছে, টিকিট বিক্রির সময়ে টাকাপয়সা লেনদেন অথবা টোকেন এবং স্মার্ট কার্ড দেওয়ার সময়ে যাত্রীদের সংস্পর্শে আসার সম্ভাবনা থাকে কর্মীদের। দু’পক্ষের সুরক্ষার জন্য মেট্রো কর্মীদের হাতে গ্লাভস পরার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। মেট্রো কর্তৃপক্ষের দাবি, গত কয়েক দিনে যাত্রী সংখ্যা কিছুটা কমেছে। গড়ে যাত্রী সংখ্যা দৈনিক দেড় লক্ষ কমেছে বলে জানিয়েছেন মেট্রোর এক আধিকারিক। কারণ হিসাবে তিনি বলেন, ‘‘স্কুল-কলেজ বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ। অনেক অফিসও কর্মীদের বাড়ি থেকে কাজ করতে বলেছে। ফলে যাত্রী সংখ্যা কমেছে কিছুটা।’’
আরও পড়ুন: করোনা-আতঙ্কে এ বার বন্ধ চিড়িয়াখানাও
শুধু বাস-ট্রাম-মেট্রো নয়, ফেরি পরিষেবার ক্ষেত্রেও গুরুত্ব দিচ্ছে সরকার। হাওড়া, ফেয়াররি, মিলেনিয়াম পার্ক, বেলুড়, দক্ষিণেশ্বর, বাগবাজার, কুঠিঘাট, কাশীপুর, রতনবাবুর ঘাটে লঞ্চে জীবাণুনাশক স্প্রে করা হচ্ছে। যাত্রীদের হাত ‘স্যানিটাইজেশন’-এর প্রক্রিয়া চলছে।
রাজ্য পরিবহণ দফতর বাস-ট্রামের যাত্রীদের হাতে ‘স্যানিটাইজার’ দিচ্ছে—নিজস্ব চিত্র
পরিবহণ দফতর সূত্রে খবর, ৩১টি সরকারি বাস রুটে বেশি ভিড় দেখা যায় কলকাতায়। ওই রুটগুলিতে বাসের সংখ্যা বাড়ানো হচ্ছে। ট্রেন যাত্রাও বিপম্মুক্ত করতে ইতিমধ্যে পদক্ষেপ করা হয়েছে দুরপাল্লার ট্রেনগুলিতে। এসি ক্যামরার তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি বালিশ, কম্বল এবং চাদর আপাতত দেওয়া হচ্ছে না। লোকাল ট্রেনগুলিতেও একই ভাবে পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখা হচ্ছে।
আরও পড়ুন: ট্রেন-মেট্রোয় শুরু সাফাই, অটো পিছিয়েই
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy