যৌথ ভাবে ছাপাখানার ব্যবসা করার সময়, ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর ও মদনমোহন তর্কালঙ্কার দুজনেই বেশ কিছু বই লিখেছিলেন। তার মধ্যে ছিল তর্কালঙ্কারের শিশুসাথী-র তিনটি ভাগ। তাঁর মৃত্যুর পর বইগুলির গ্রন্থস্বত্ব দাবি করে তাঁর জামাতা যোগেন্দ্রনাথ বিদ্যাভূষণ বিদ্যাসাগরকে উকিলের চিঠি ধরিয়েছিলেন। কিন্তু তর্কালঙ্কারের পুরনো চিঠি থেকে প্রমাণিত হয়, তিনি বইগুলির স্বত্ব ছাপাখানাকে দিয়েছেন, তাঁর বা উত্তরসূরিদের তা প্রাপ্য নয়। সে সময় মিটে গেলেও, পরে শ্বশুরমশাইয়ের জীবনীতে বিদ্যাসাগরকে ‘পরস্বহারী’ অপবাদ দেন যোগেন্দ্রনাথ। অনেকে সে কথা বিশ্বাসও করায়, আত্মপক্ষ সমর্থনে পুস্তিকা ছাপিয়ে পুরো ঘটনা সামনে এনেছিলেন ঈশ্বরচন্দ্র, ১৮৮৮ সালে।
বাগবাজারের উকিল দীননাথ বসু বিদ্যাসাগরকে যে নোটিস পাঠিয়েছিলেন, তার ভিত্তি ছিল ১৮৪৭-এর ‘কপিরাইট’ সংক্রান্ত আইন। কোম্পানি আমলের সেই আইনে লেখকের জীবৎকালে প্রকাশিত বইয়ের গ্রন্থস্বত্ব বলবৎ থাকত তাঁর মৃত্যুর সাত বছর পর্যন্ত, সব মিলিয়ে প্রকাশের ৪২ বছর পর্যন্ত। এর পর ইংল্যান্ডে নতুন কপিরাইট আইন আসে, সামান্য হেরফের করে ভারতে তা চালু হয় ১৯১৪ সালে। এই আইনে গ্রন্থস্বত্বের মেয়াদ বাড়িয়ে লেখকের মৃত্যুর পর ৫০ বছর পর্যন্ত করা হয়।
১৯৩৪ সালে বঙ্কিমচন্দ্রের বইয়ের গ্রন্থস্বত্ব নিয়ে তাঁর দৌহিত্রদের মধ্যে মামলা হয় সেই আইনের আওতায়। বঙ্কিমজায়া রাজলক্ষ্মী দেবী নিজের অবর্তমানে বঙ্কিমের বইয়ের কপিরাইট দান করে যান কন্যা শরৎকুমারী দেবীকে। সেই অনুযায়ী শরৎকুমারীর একমাত্র পুত্র ব্রজেন্দ্রসুন্দর বন্দ্যোপাধ্যায় ‘বসুমতী সাহিত্য মন্দির’-এর সতীশচন্দ্র মুখোপাধ্যায়কে সেই সব বই ছাপা ও বিক্রির অনুমতি দেন। কিন্তু বঙ্কিমচন্দ্র নিজের ইচ্ছাপত্রে নির্দিষ্ট ভাবে রাজলক্ষ্মী দেবীকে গ্রন্থস্বত্ব দিয়ে যাননি, রাজলক্ষ্মী তাই আইনত সেই বইয়ের স্বত্ব কোনও ‘এক’ কন্যাকে দিতে পারেন না— যুক্তি দেখিয়ে বঙ্কিমের অন্য কন্যা নীলাব্জকুমারী দেবীর তিন পুত্র, নীলাদ্রিনাথ, হিমাদ্রিনাথ ও বিন্ধ্যাদ্রিনাথ মুখোপাধ্যায় উত্তরাধিকার সূত্রে সেই গ্রন্থস্বত্বের অংশ দাবি করে মামলা করেন ব্রজেন্দ্রসুন্দর ও সতীশচন্দ্রের বিরুদ্ধে। মামলা জিতে মুখোপাধ্যায় ভাইরাও বঙ্কিমের বইয়ের গ্রন্থস্বত্বের তিন ভাগের অধিকারী হন।
স্বাধীনতার পর ১৯৫৭-তে নতুন ‘কপিরাইট অ্যাক্ট’ চালু হয় দেশে। সময়ের সঙ্গে তাল মেলাতে, বিশেষত বিভিন্ন আন্তর্জাতিক বাণিজ্য চুক্তিতে ভারত স্বাক্ষরকারী হওয়ায়, একাধিক বার সংশোধিত হয়েছে এই আইনও।
বই পড়া, প্রকাশনা ও গ্রন্থস্বত্বের গুরুত্বকে তুলে ধরতে প্রতি বছর আজকের দিনে পালিত হয় ‘বিশ্ব বই ও গ্রন্থস্বত্ব দিবস’, সেই আবহে বাংলা বই আর তার গ্রন্থস্বত্বের যাত্রার নানা বাঁক বদলকে ফিরে দেখা। ছবিতে এ কালের কলেজ স্ট্রিট, রেলিংয়ের ফাঁকে ফাঁকে বইয়ের ঠাঁই।
পুরোধা স্মরণে
সিন্ধু সভ্যতা, মহেঞ্জোদড়ো আবিষ্কার ছাড়াও সামগ্রিক ভাবেই দেশের পুরাতত্ত্ব ও ইতিহাস চর্চাকে গভীর ভাবে প্রভাবিত করেছেন রাখালদাস বন্দ্যোপাধ্যায় (ছবিতে)। হরপ্পা-গবেষণার শতবার্ষিকী ও ১২ এপ্রিল রাখালদাসের জন্মদিন উদ্যাপনের অঙ্গ হিসেবে কলকাতার ভারতীয় জাদুঘরের উদ্যোগে ১২-১৩ এপ্রিল হয়ে গেল দু’দিন ব্যাপী অনুষ্ঠান। ‘রাখালদাস বন্দ্যোপাধ্যায় স্মারক বক্তৃতা’-য় হরপ্পা সংস্কৃতি-গবেষণার শতবর্ষী যাত্রা নিয়ে বললেন পুণে ডেকান কলেজের প্রাক্তন উপাচার্য বসন্ত শিন্ডে, জাদুঘরের সংগ্রহে থাকা হরপ্পার প্রত্ননিদর্শনের প্রদর্শনী উদ্বোধন করেন কেন্দ্রীয় সংস্কৃতি মন্ত্রকের যুগ্মসচিব লিলি পাণ্ডেয়। পুরাতত্ত্ব চর্চায় রাখালদাসের ভূমিকা নিয়ে বললেন ভারতীয় পুরাতত্ত্ব সর্বেক্ষণের প্রাক্তন অধিকর্তা গৌতম সেনগুপ্ত ও সংস্থার প্রাক্তন আঞ্চলিক নির্দেশক ফণীকান্ত মিশ্র।
যাত্রা শুরু
বাংলা বই নিয়ে নতুন একটি পত্রিকার যাত্রা শুরু শহরে— বইকথা। কবিতা গদ্য প্রবন্ধগ্রন্থ অনুবাদবইয়ের আলোচনা করেছেন অগ্রজ ও তরুণ লেখকেরা। সম্পাদকদের বাছাই সর্বদা চোখের সামনে না-থাকা বই; রয়েছে শঙ্খ ঘোষ ও মিহির সেনগুপ্তের স্মরণ, বাণী বসুর নিজের বই নিয়ে কথা। অনিতা অগ্নিহোত্রী যশোধরা রায়চৌধুরী সেবন্তী ঘোষ তৃষ্ণা বসাক মহাশ্বেতা রায়ের একত্র এই উদ্যোগে গতকাল ২২ এপ্রিল সন্ধে সাড়ে ৫টায় রোটারি সদন প্রেক্ষাগৃহে উন্মোচন হল পত্রিকার, ছিলেন সাধন চট্টোপাধ্যায় সুধীর দত্ত সোমেশ্বর ভৌমিক রাজশ্রী ভট্টাচার্য প্রমুখ। প্রবন্ধ ও উপন্যাসের জন্য সম্মানিত হলেন তরুণ দুই লেখক শঙ্খদীপ ভট্টাচার্য ও পলাশ দে— ‘নমিতা চট্টোপাধ্যায় সাহিত্য সম্মান’ পড়ল অষ্টম বছরে।
মননের অঙ্গন
সারা দেশের ও আন্তর্জাতিক নাট্যব্যক্তিত্বদের দুর্লভ সব লেখায় খচিত অঙ্গন। বাদল সরকার প্রবর্তিত ‘থার্ড থিয়েটার’-এর এই নাট্যপত্রটির ২৮টি সংখ্যা একত্রে সঙ্কলিত হল সদ্য, ১৯৮৬-র প্রথম সংখ্যা থেকে ১৯৯৩ সালে প্রকাশিত ‘শতাব্দীর ২৫ বছর’ সংখ্যা পর্যন্ত— বাদল সরকার নাট্যচর্চা কেন্দ্রের উদ্যোগে, মীরা প্রকাশন থেকে দেবাশিস চক্রবর্তীর সম্পাদনায়। নাটক-সাক্ষাৎকার-প্রবন্ধের সমাহারে পাঠকের চিন্তার অনন্য রসদ। শুরুতে শমীক বন্দ্যোপাধ্যায় লিখেছেন: “যে ইতিহাসবোধে ও ইতিহাসপাঠে গভীর প্রত্যয় ও দায়পালনের অঙ্গীকারে আমরা সেদিনও যেমন আজও তেমনই এই থিয়েটার আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত... অঙ্গন নাট্যপত্র-এর লক্ষ্যকল্পের পুনরুজ্জীবন... নতুন করে প্রাসঙ্গিক হয়ে উঠেছে।” বাদল সরকারের নাট্যচিন্তা ও দর্শন নিয়ে নির্মিত তথ্যচিত্র পাখিরা দেখানো হবে ২৭ এপ্রিল বিকেল ৫টায়, কফি হাউস বই-চিত্র সভাঘরে, সঙ্গে বলবেন শমীক বন্দ্যোপাধ্যায় ও অশোক বিশ্বনাথন।
কলকাতা-কথা
একটি পত্রিকার সঙ্গে যখন জড়িয়ে থাকেন বিশিষ্ট লেখক- সংগ্রাহক, ইতিহাস-সংস্কৃতিপ্রেমী তথা কলকাতাপ্রেমী মানুষেরা, তখন তার পাতায় শহরের অচর্চিত বা বিস্মৃত ইতিহাসের নানা দিক ও আঙ্গিক উঠে আসতে বাধ্য। কলকাতা কথকতা (সম্পাদক: চন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায়) পত্রিকার সাম্প্রতিক সংখ্যাটি সমৃদ্ধ বিচিত্র বিষয়ে: বাঙালির সুগন্ধ-চর্চা, কলকাতার গোরার বাদ্যি, বৌবাজারে ভুলু পালের ঠাকুরবাড়ি, ‘সুলেখা’ ও কলকাতার অন্যান্য কালি, আলোকচিত্র-চর্চা, ব্যাঙ্কশাল কোর্ট ও হারিয়ে যাওয়া বরফঘর, কলকাতার টাঁকশালে অস্ট্রেলীয় পেনি তৈরির ইতিহাস, সেকেলে শহরের জল-কথা, আরও কত কী। পুরনো বিজ্ঞাপনচিত্র, পিকচার পোস্টকার্ড ও দেশলাইবাক্সের লেবেল-ছবি— টুকরো ইতিহাস সব।
প্রতিরোধচিত্র
স্বাধীনতার পঁচাত্তর পূর্তি স্মরণে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য লেখ্যাগারের উদ্যোগে ১৯ এপ্রিল থেকে শুরু হয়েছে লেখ্যাগার সপ্তাহ উদ্যাপন ও প্রদর্শনী ইমেজেস অব রেজ়িস্ট্যান্স— প্রায় দু’শতকে ভারতীয় জনজাতি, স্থানীয় ও গণ আন্দোলনের খণ্ডচিত্র। তিতুমিরের প্রতিরোধ, সাঁওতাল বিদ্রোহ, ১৮৫৭-র মহাবিদ্রোহ, নীল বিদ্রোহ থেকে জাতীয়তাবাদী আন্দোলন— বঙ্গভঙ্গ, সশস্ত্র বিপ্লববাদ, মহাত্মা গান্ধীর নেতৃত্বে আন্দোলনের বিস্তার বা নেতাজির ভিন্ন পথ, বামপন্থী আন্দোলন— উঠে এসেছে ছবিতে; তুলে ধরা হয়েছে মেয়েদের ভূমিকাও। সমস্ত তথ্যের উৎস ব্রিটিশ প্রশাসনিক নথি। ইতিহাসের ছাত্র গবেষক থেকে সাধারণ মানুষ, সকলেই চিন্তার রসদ এই প্রদর্শনীতে। ৪৩ নং শেক্সপিয়র সরণির প্রদর্শনীকক্ষে ২৭ এপ্রিল পর্যন্ত, সকাল ১১টা-সন্ধ্যা ৬টা।
উপেক্ষিত
কলকাতার পূর্ব সীমানা নির্দেশ করতে গিয়ে রূপচাঁদ পক্ষীর উক্তি ‘পুবে বাদাচিংড়িহাটা পদ্মা নদী তদুত্তর’। এই সীমানার কথা তেমন ভাবে উঠে আসেনি কলকাতা-চর্চায়, অথচ এখানেই লুকিয়ে কলকাতার প্রাচীনত্বের অন্যতম সূত্র। ঔপনিবেশিক যুগ থেকে স্বাধীনতা-উত্তর সময়ে শহরের এই পুবমুখী বিস্তার পূর্ব কলকাতার জলাভূমির মূল্যেই; নগরায়ণের ফলে (নীচে ছবিতে) সঙ্কুচিত হয়েছে জলাভূমি, হারিয়ে গিয়েছে বহু নিদর্শন, যার সঙ্গে যুক্ত ছিল শহরের প্রাচীন সংস্কৃতি, বাণিজ্য, স্বাধীনতা সংগ্রামেরও স্মৃতি। ‘দেশকাল’, ‘গ্রিন পিপল’স সোসাইটি’ ও ‘দমদম হেরিটেজ প্রিজ়াভের্শন সোসাইটি’-র উদ্যোগে শহরের পূর্ব প্রান্তের স্থাবর-অস্থাবর ঐতিহ্য নিয়ে ক্ষেত্রসমীক্ষা ভিত্তিক কাজ চলছে, সেই নিয়েই গত ১৪ এপ্রিল, লেকটাউন শ্রীভূমির গান্ধী সেবা সঙ্ঘে হয়ে গেল আলোচনা— ইতিহাসবিদ, গবেষক, পুরাতত্ত্ব সর্বেক্ষণ আধিকারিক, পরিবেশবিজ্ঞানীদের উপস্থিতিতে। এই কাজের ভিত্তিতে পূর্ব শহরতলি ও সল্টলেক উপনগরী এবং রাজারহাট-নিউটাউনের ইতিহাস ও ক্রমবিকাশ নিয়ে বেরোবে বইও।
শিল্পের স্বাক্ষর
শুক্তিশুভ্রা ও নিরঞ্জন প্রধান শিল্পী দম্পতি। কলকাতার সরকারি চারু ও কারুকলা মহাবিদ্যালয়ের প্রাক্তনী এই যুগল, শিক্ষক হিসাবে পেয়েছিলেন চিন্তামণি কর, ধীরেন ব্রহ্ম, গোপাল ঘোষ প্রমুখ দিকপাল শিল্পীদের, পরবর্তী কালে দু’জনেই শিক্ষকতা করেছেন এই ঐতিহাসিক শিল্পশিক্ষা প্রতিষ্ঠানেই। শুক্তিশুভ্রা চর্চা করেছেন ভারতীয় রীতিতে ছবি আঁকার, প্রকৃতি ও নারী তাঁর মূল বিষয়। পাশাপাশি ভাস্কর্য চর্চায় বলিষ্ঠ স্বাক্ষর রেখেছেন নিরঞ্জন প্রধান— রাজা রামমোহন রায়ের ব্রিস্টলে স্থাপিত পূর্ণাবয়ব ব্রোঞ্জ মূর্তি তাঁরই শিল্পকৃতি। শিল্পজগতে ভাস্কর হিসাবে বেশি সমাদৃত হলেও, নিয়মিত ছবি এঁকেছেন তিনি (ছবিতে তারই একটি)। দু’জনেরই চিত্রকৃতি নিয়ে এ বার প্রদর্শনী নেচার অ্যান্ড বিয়ন্ড, মায়া আর্ট গ্যালারিতে, আজ সন্ধ্যা ৬টায় উদ্বোধন। চলবে ১ মে অবধি, দুপুর ২টো থেকে রাত ৮টা।
বড় পর্দায়
“চিত্রভাষার দিক দিয়ে আমার মতে অরণ্যের দিনরাত্রি আমার অন্যতম শ্রেষ্ঠ ছবি, যদিও এদেশে বিশেষ সমাদর পায়নি।” সত্যজিতের খেদ কতটা মেটাবে নতুন প্রজন্ম, জানা যাবে ২৫ এপ্রিল। ২৭তম কলকাতা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবের উদ্বোধনে নজরুল মঞ্চ ও রবীন্দ্র সদনে দেখানো হবে ছবিটি। এ প্রজন্মের ক’জনই বা সত্যজিতের ছবি দেখেছেন বড় পর্দায়? আফসোস কিছুটা মিটবে উৎসবে, থাকছে সোনার কেল্লা, হীরক রাজার দেশে, সুকুমার রায়-ও, সব ‘রেস্টোর্ড ভার্সন’-এ। সঙ্গে গৌতম ঘোষের ছবি রে। ২৬ এপ্রিল থেকে নন্দন-২ অঙ্গনে সত্যজিৎ-প্রদর্শনী, সত্যজিতের কলাকুশলীদের নিয়ে আড্ডা ১ মে রবীন্দ্র সদনে। কার্লোস সওরা, পেদ্রো আলমোদোভার, নান্নি মোরেত্তি, আসগর ফারহাদি, টনি গ্যাটলিফ প্রমুখের নতুন ছবি; ‘কান্ট্রি ফোকাস’— ফিনল্যান্ড।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy