প্রতীকী ছবি।
শহর জুড়ে বেআইনি নির্মাণের বিরুদ্ধে বার বার তোপ দেগেছে কলকাতা পুরসভা। একাধিক বার অভিযানও চালানো হয়েছে। কিন্তু পুর কর্তৃপক্ষের সাম্প্রতিক প্রস্তাব ঘিরে বিতর্ক তৈরি হয়েছে। প্রশ্ন উঠেছে, সংশ্লিষ্ট প্রস্তাব কার্যকর হলে কি বেআইনি নির্মাণকে ‘পরোক্ষে’ আইনসিদ্ধ করা হবে? তা হলে বেআইনি নির্মাণ নিয়ে মুখে এক রকম বলে আসলে কি ‘সমঝোতা’ করতে চাইছে পুরসভা? বিতর্ক সেই প্রস্তাব নিয়ে, যেখানে বলা হয়েছে, বেআইনি নির্মাণ ভাঙার আগে তার জন্য ‘সিকিউরিটি ডিপোজ়িট’-এর অর্ধাংশ পুরসভায় জমা রাখতে হবে।
পুর বিল্ডিং দফতর সূত্রের খবর, বেআইনি নির্মাণকে আইনসিদ্ধ করতে জরিমানা করা হয়। তবে বহু ক্ষেত্রেই দেখা যাচ্ছে, অনেকে সেই জরিমানা জমা দিচ্ছেন না। উল্টে বেআইনি নির্মাণের অংশ তৃতীয় পক্ষকে বিক্রি করে দিচ্ছেন। ফলে জটিল পরিস্থিতি তৈরি হচ্ছে। এই প্রবণতা আটকাতেই বিল্ডিং দফতরের প্রস্তাব— জমা পড়া অভিযোগের শুনানির আগে বেআইনি নির্মাণকে আইনসিদ্ধ করতে কত ‘ফি’ ধার্য করা যেতে পারে, তা হিসাব কষে বার করা হবে। শুনানির আগে সেই ‘ফি’-র ৫০ শতাংশ ‘সিকিউরিটি ডিপোজ়িট’ হিসাবে সংশ্লিষ্ট মালিককে পুরসভায় জমা করতে হবে। শুনানিতে ওই নির্মাণ না ভাঙার সিদ্ধান্ত গৃহীত হলে ‘ফি’-র বাকি ৫০ শতাংশ মালিক জমা করবেন পুরসভায়। এবং তখন ওই নির্মাণ আইনসিদ্ধ হয়ে যাবে।
কিন্তু শুনানির ভিত্তিতে নির্মাণ ভাঙার পক্ষে সিদ্ধান্ত গৃহীত হলে জমা হওয়া ‘সিকিউরিটি ডিপোজ়িট’-এর ৫০ শতাংশ অর্থ মালিককে ফেরত দেওয়া হবে। তবে একটা শর্ত থাকবে সেখানে। তা হল, মালিককে নিজের উদ্যোগে বেআইনি নির্মাণ ভাঙতে হবে। তিনি তা না করলে বেআইনি অংশ পুরসভা ভেঙে দেবে। এর জন্য যে খরচ হবে, তা বাদ দিয়ে জমা রাখা ‘সিকিউরিটি ডিপোজ়িট’ মালিক ফেরত পাবেন।
এখানেই প্রশ্ন উঠেছে, কোনটা ভাঙা হবে আর কোনটা ভাঙা হবে না, সেটা স্বচ্ছতার সঙ্গে হবে কি? কারণ, বেআইনি নির্মাণ সংক্রান্ত জমা পড়া অভিযোগের সিংহভাগই ‘সিকিউরিটি ডিপোজ়িট’-এর কারণ দর্শিয়ে যে রেখে দেওয়া হবে না, তার নিশ্চয়তা কোথায়? প্রসঙ্গত, এর আগেও জরিমানার পরিবর্তে বেআইনি নির্মাণ আইনসিদ্ধ করা নিয়ে বিতর্ক হয়েছিল।
পুরসভা সূত্রের খবর, বর্তমান প্রস্তাবটি এসেছে পুর বিল্ডিং দফতরের ডিরেক্টর জেনারেল অনিন্দ্য কারফর্মার অফিস থেকে। এ প্রসঙ্গে অনিন্দ্যবাবু বলেন, ‘‘সবই তো জানেন। এ বিষয়ে কিছু বলতে পারব না।’’ এর মাধ্যমে কি বেআইনি নির্মাণ পরোক্ষে আইনসিদ্ধ করার আশঙ্কা থাকছে না? তাঁর বক্তব্য, ‘‘এ বিষয়ে কোনও ধারণা নেই।’’
যার প্রেক্ষিতে পুর প্রশাসনেরই একাংশ জানাচ্ছে, যে দফতর থেকে প্রস্তাব আসছে, সেই দফতরের শীর্ষ কর্তারই যদি বিষয়টি নিয়ে ধারণা না থাকে, তা হলে প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা কতটা থাকবে, সংশয় তা নিয়েই!
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy