গ্রাফিক: সনৎ সিংহ।
কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের প্রথম বর্ষের ডাক্তারি পড়ুয়াদের ক্লাস শুরুর আগে সোমবার ‘চরক শপথঠ পাঠ করানো নিয়ে বিতর্ক সৃষ্টি হয়। ‘হিপোক্রেটিক ওথ’-এর নাম বদলের সিদ্ধান্ত এখনও চূড়ান্ত হয়নি। চলতি মাসে ন্যাশনাল মেডিক্যাল কমিশন(এনএমসি)-এর একটি ভার্চুয়াল বৈঠকে ওই প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা হয়েছিল শুধু। এই অবস্থায় কেন ‘চরক’ শপথ পাঠ করানো হল তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
এ প্রসঙ্গে মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ রঘুনাথ মিশ্র জানান, ‘ভুল বুঝে’ ডাক্তারি পড়ুয়াদের ক্লাস শুরুর আগে ওই শপথ পাঠ করানো হয়েছে। তিনি বলেন, ‘‘পড়ুয়াদের ইর্ন্টানশিপের সময় ‘হিপোক্রেটিক ওথ’! পাঠ করানো হয়। কিন্তু চলতি মাসে দেশের সব মেডিক্যাল কলেজের সঙ্গে ভার্চুয়াল বৈঠক করে ন্যাশনাল মেডিক্যাল কমিশন। সেখানেই ‘হোয়াইট কোর্ট সেরিমনি’-তে ‘চরক শপথ’ পাঠ করানোর বিষয়ে প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল। সে সংক্রান্ত ওই বৈঠকের একটি ‘মিনিটস’-ও সামনে আসে। সেটা আমরা বুঝতে ভুল করেছি। ভুল করেই ওই শপথ পাঠ করানো হয়। পড়ুয়াদের ইর্ন্টানশিপের সময় যে শপথ পাঠ করানোর নির্দেশ আসবে তাই পাঠ করানো হবে।’’
চিকিৎসা পেশায় আসার আগে গোটা বিশ্বেই শপথ নেওয়ার প্রচলন রয়েছে। মূলত গ্রিক চিকিৎসক হিপোক্রেটসের নামাঙ্কিত শপথ পাঠ করা হয়। সেটাই ‘হিপোক্রেটিক ওথ’ বা শপথ নামে পরিচিত। চিরাচরিত সেই শপথের নাম বদলের এনএমসি-র প্রস্তাব নিয়ে ইতিমধ্যেই চিকিৎসকদের এক বড় অংশ বিরোধিতায় সরব হয়েছেন। ‘হিপোক্রেটিক ওথ’-এর নাম বদল হলে চিকিৎসক গোষ্ঠী আন্দোলনে নামবে বলে জানিয়েছেন ‘ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন’ (আইএমএ)-ক প্রাক্তন সভাপতি ও চিকিৎসক শান্তনু সেন।
এনএমসির সদস্য শান্তনু এ বিষয়ে বলেন “ন্যাশনাল মেডিক্যাল কমিশনের চেয়ারম্যান এবং আন্ডার গ্র্যাজুয়েট এডুকেশন বোর্ডের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে কথা বলে ছিলাম। কারণ, আমরা মনে করছিলাম এটা মেডিক্যাল শিক্ষার গৈরিকীকরণের একটা প্রচেষ্টা। দু’জনেই জানিয়েছেন কোনও কিছুই এখনও চূড়ান্ত হয়নি। এই অবস্থায় কলকাতা মেডিক্যাল কলেজে যা হল, সেটা অনভিপ্রেত। এটা হওয়া কাম্য নয়। বিশেষ করে সেখানে আমাদের অনেক বিশিষ্ট লোকজন আছেন। আমি অনুরোধ করছি, যাতে তাঁরা বিষয়টি দেখেন।”
মেডিক্যাল কলেজের রোগীকল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান এবং বিধানসভার স্বাস্থ্য সংক্রান্ত স্যান্ডিং কমিটির চেয়ারম্যান নির্মল মাজির দাবি, মেডিক্যাল কলেজে ‘চরক শপথ’ পাঠ করানো হয়েছে তা তিনি জানতেন না, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ এবিষয়ে তাঁকে কিছু জানাননি বলেও দাবি তৃণমূল বিধায়কের। তিনি বলেন, “ব্যক্তিগত ভাবে আমি চরক শপথের বিরুদ্ধে। বিজেপি রাজনৈতিক এবং ধর্মীয় মেরুকরণের জন্যই চিকিৎসকদের শপথের নাম বদল এবং সস্তায় বাজিমাত করতে চাইছে।”
রাজ্য বিজেপি-র স্বাস্থ্য সেলের আহ্বায়ক এবং স্ত্রী রোগ বিশেষজ্ঞ অর্চনা মজুমদার অবশ্য বলেন, ‘‘আমাদের দেশের কারও নামে শপথ চালু হলে ভালোই হবে। কারণ হিপোক্রেটস ভারতীয় ছিলেন না। সে দিক থেকে দেখলে মহর্ষি চরক প্রাচীন ভারতে আয়ুর্বেদ চিকিৎসার প্রসার ঘটিয়েছিলেন।’’ কলকাতা মেডিক্যাল কলেজে `হিপোক্রিট ওথ’-এর বদলে কেনও `চরক শপথ’ পাঠ করানো হল তা নিয়ে মঙ্গলবার ডিএসও-এর মেডিক্যাল ইউনিট কলকাতা মেডিক্যাল কলেজে অধ্যক্ষের কাছে ডেপুটেশন দেয়। মেডিক্যাল কলেজের পড়ুয়াদের ফাউন্ডেশন কোর্স শেষে ‘হিপোক্রেটিক ওথ’ পাঠ করেনো হবে বলে অধ্যক্ষ জানিয়েছেন বলে বিক্ষোভকারীদের দাবি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy