চাঁদনি মার্কেটে বসেছে বাজির পসরা। রবিবার। নিজস্ব চিত্র
পথের দু’পাশে পর পর দোকান ছেয়ে গিয়েছে দীপাবলির আলোর সরঞ্জামের পসরায়। আর তার মাঝেই রয়েছে ‘ছোটদের’ বাজির পসরা— রংমশাল, ফুলঝুরি, তুবড়ি, চরকি। হাইকোর্টের নির্দেশের তোয়াক্কা না করে চাঁদনি চক মার্কেটে এ ভাবেই অবাধে এবং প্রকাশ্যে চলছে বাজি বিক্রি।
আসন্ন কালীপুজো ও দীপাবলি উপলক্ষে চাঁদনি মার্কেট জুড়ে এখন বসেছে রকমারি আলোর হাট, যা কিনতে ভিড় জমাচ্ছেন ক্রেতারা। আর রবিবার সন্ধ্যায় সেখানে গিয়ে দেখা গেল, সেই আলোর সরঞ্জামের মধ্যেই প্রকাশ্যে বিক্রি হচ্ছে বাজিও। চাঁদনি মার্কেটের মোট তিনটি জায়গায় এ ভাবে বাজি বিক্রি হতে দেখা গেল। আর আলোর সরঞ্জাম কিনতে এসে ক্রেতাদের অনেককেই আবার দেখা গেল, কালো প্লাস্টিকে মুড়ে সেই বাজি কিনে নিয়ে যেতে।
আলোর সরঞ্জাম বিক্রির দোকানগুলির মধ্যেই মধ্যবয়স্ক ব্যক্তি বাজির পসরা সাজিয়ে বসেছিলেন। ফুলঝুরি থেকে শুরু করে তুবড়ি, চরকি, চটপটা, রংমশাল— কী নেই! ক্রেতা সেজে সেই দোকানদারের সামনে দাঁড়াতেই তিনি একগাল হেসে বললেন, ‘‘বাচ্চা বাজি কিনে দেওয়ার বায়না ধরেছে তো? নিয়ে যান। পাড়ায় এ বার এটুকুও পাবেন কি না সন্দেহ। ছাড়ও পাবেন। সব আলোর বাজি। কোনও শব্দবাজি নেই।’’
বিক্রেতার সঙ্গে কথোপকথনের মধ্যেই ওই দোকানে বাজি কিনতে এলেন এক ক্রেতা। তাঁকে চার প্যাকেট ফুলঝুরি, তিন প্যাকেট রংমশাল, দু’প্যাকেট তুবড়ি বিক্রি করতে করতে বিক্রেতা বললেন, ‘‘কালো প্লাস্টিকে মুড়ে দিচ্ছি, কেউ দেখতে পাবেন না। বাড়ি নিয়ে যান।’’
করোনা সংক্রমণের কথা মাথায় রেখে এ বছর কালীপুজো ও দীপাবলিতে বাজি বিক্রির উপরে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে কলকাতা হাইকোর্ট। তার পরেও বাজি কিনলে তো পুলিশে ধরবে? বিক্রেতাকে এই প্রশ্ন করতেই তিনি আশ্বস্ত করে বললেন, ‘‘এ তো বাচ্চাদের বাজি। তাই এই বাজি বিক্রি করলে বা কিনলে কেউ কিছু বলবে না। কোনও শব্দবাজি রাখিনি। চকলেট বোমা, দোদমা— সে সব কিছুই নেই।’’
ওই দোকান থেকে একটু দূরে ফের দেখা গেল একই দৃশ্য। রংমশাল, তুবড়ি, চরকির পসরা নিয়ে বসে রয়েছেন আরও এক বিক্রেতা। তিনি বলেন, ‘‘সারা বছর ফল বিক্রি করি, আর কালীপুজোর সময়ে বাজি। এ বার সেটাও বন্ধ। তবু কিছু আলোর বাজি তুলেছি বিক্রির জন্য। বাড়ির বাচ্চাদের জন্য নিয়ে যান, কম দামে দিয়ে দেব।’’
একই সঙ্গে বাজি এবং আলোর সরঞ্জাম বিক্রি হতে দেখা গেল চাঁদনি মার্কেটের আরও একটি দোকানে। সেই দোকানদারেরও সাফ যুক্তি, ‘‘কালীপুজোয় কী একটাও বাজি ফাটাবে না ছোটরা? কয়েকটা রংমশাল, ফুলঝুরি ফাটালে কোনও দোষ নেই।’’
যদিও বৌবাজার থানার আধিকারিকেরা জানাচ্ছেন, চাঁদনি মার্কেটে বাজি বিক্রির বিষয়ে তাঁদের কাছে এখনও তেমন কোনও তথ্য নেই। তবে হাইকোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী যে কোনও ধরনের বাজি এ বছর নিষিদ্ধ। বাজি বিক্রি যেন না হয়, তা নিয়ে প্রচার চলছে। চলছে অভিযানও। কোথাও বাজি বিক্রি করতে গিয়ে ধরা পড়লে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy