(বাঁ দিকে) সাগর দত্ত হাসপাতালে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি শুভঙ্কর সরকার। তাঁকে ‘গো ব্যাক’ স্লোগান আন্দোলনকারী জুনিয়র ডাক্তারদের (ডান দিকে)। ছবি: সংগৃহীত।
সাগর দত্ত মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে গিয়েছিলেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি শুভঙ্কর সরকার। কিন্তু সেখানে আন্দোলনরত জুনিয়র ডাক্তারেরা তাঁকে ঘিরে বিক্ষোভ দেখান। তাঁর উদ্দেশে ‘গো ব্যাক’ স্লোগান দেওয়া হয়। কিছু ক্ষণ হাসপাতাল চত্বরে থাকার পর শুভঙ্কর সেখান থেকে বেরিয়ে যান। তিনি জানিয়েছেন, তিনি রাজনৈতিক ঝান্ডা ছাড়াই সাগর দত্তে গিয়েছিলেন ডাক্তারদের প্রতিবাদকে সমর্থন করতে। তাঁকে ‘গো ব্যাক’ স্লোগান দেওয়া হয়নি। তবে রাজনৈতিক পরিচয় থাকায় তাঁকে দূরে থাকতে অনুরোধ করেছেন আন্দোলনকারীরা।
রবিবার দুপুরে সাগর দত্তে গিয়েছিলেন শুভঙ্কর। জুনিয়র ডাক্তারেরা সেখানে অবস্থানে বসেছেন। তাঁকে দেখার পরেই শুরু হয় ‘গো ব্যাক’ স্লোগান। মাইক হাতে নিয়ে আন্দোলনকারীদের তরফে বলা হয়, ‘‘যাঁরা এই মঞ্চকে রাজনৈতিক কারণে ব্যবহারের চেষ্টা করছেন, তাঁদের হাতজোড় করে অনুরোধ, ফিরে যান। গো ব্যাক।’’
চিকিৎসক এবং স্বাস্থ্যকর্মীদের নিগ্রহকে কেন্দ্র করে শুক্রবার রাত থেকে উত্তপ্ত কামারহাটির সাগর দত্ত হাসপাতাল। শুক্রবার রাতে সেখানে এক রোগীর মৃত্যু হয়। তার পর তাঁর আত্মীয়েরা হাসপাতালের চার তলায় উঠে ডাক্তার, নার্সদের আক্রমণ করেন বলে অভিযোগ। হাসপাতালে ভাঙচুর চালানো হয়। পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি সামাল দিলেও সে দিন এক পুলিশকর্মী-সহ সাত জন আহত হয়েছিলেন। এই ঘটনার পর শুক্রবার রাত থেকেই হাসপাতালের জুনিয়র ডাক্তারেরা কর্মবিরতি পালন করছেন।
হাসপাতালে চিকিৎসক, নার্স এবং স্বাস্থ্যকর্মীদের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত কাজে ফিরবেন না বলে জানিয়ে দিয়েছেন সাগর দত্তের জুনিয়র ডাক্তারেরা। পশ্চিমবঙ্গ জুনিয়র ডক্টর্স ফ্রন্টের প্রতিনিধিরাও সেখানে গিয়েছিলেন। তাঁরা সোমবারের মধ্যে সুরাহা না হলে আবার কর্মবিরতির হুঁশিয়ারি দিয়েছেন রাজ্য জুড়ে। ডাক্তারদের এই আন্দোলনকে সমর্থন জানাতে রবিবার সেখানে গিয়েছিলেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি।
শুভঙ্কর সাগর দত্ত থেকে বলেন, ‘‘আমরা কেউ অরাজনৈতিক নই। প্রত্যেকের রাজনৈতিক পরিচয় আছে। কিন্তু সে সব পরিচয় বাইরে রেখে মানুষের স্বার্থে মানুষ হিসাবে আমরা এখানে এসেছি। জেলা কংগ্রেসের পরিচয় নিয়ে আসিনি। দলের ঝান্ডা নিয়েও আসিনি। চিকিৎসার সময়ে ডাক্তারেরা যেমন রোগীর ধর্ম, বর্ণ দেখেন না, তেমন তাঁদেরও রাজনৈতিক পরিচয় থাকে না। এখন আমাদেরও নেই।’’
ডাক্তারদের ‘গো ব্যাক’ স্লোগান প্রসঙ্গে শুভঙ্কর বলেন, ‘‘ওঁরা আমাদের গো ব্যাক বলেননি। আমি গিয়ে ওঁদের সঙ্গে কথা বলেছি। ঝান্ডা না নিয়ে আসার জন্য ওঁরা আমাদের ধন্যবাদ জানিয়েছেন। কিন্তু বলেছেন, যে হেতু আমাদের রাজনৈতিক পরিচয় আছে, তাই আন্দোলন থেকে দূরে থাকতে। আমরাও চাই না এই আন্দোলনে রাজনৈতিক রং লাগুক।’’ এর পর রাজ্য সরকারকে আক্রমণ করে শুভঙ্কর বলেন, ‘‘ময়লা পরিষ্কার করতে গেলে সকলকে ত্যাগ স্বীকার করতে হয়। ডাক্তারদের এই আন্দোলন সার্থক হোক। রাজ্য সরকারের এ বার আয়নার সামনে দাঁড়ানোর সময় এসেছে। পরিকাঠামো ঢেলে সাজানো প্রয়োজন। নতুন স্বাস্থ্যমন্ত্রী নিয়োগ করা প্রয়োজন। হাসপাতালের অব্যবস্থার জন্য তো সরকারই দায়ী। ওরা তো কিছু সামলাতেই তো পারছে না!’’
শুভঙ্কর পৌঁছনোর পর আন্দোলনকারী এক জুনিয়র ডাক্তার বলেন, ‘‘আমরা প্রথম থেকেই বলে আসছি, এই আন্দোলন সম্পূর্ণ অরাজনৈতিক। কাউকে আন্দোলনের মঞ্চ আমরা রাজনৈতিক কারণে ব্যবহার করতে দেব না। যদি কেউ আমাদের পাশে দাঁড়াতে চান, রাজনৈতিক ঝান্ডা বাড়িতে রেখে সাধারণ মানুষ হিসাবে আসুন। তাঁদের স্বাগত।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy