শনিবার শহরের পরিত্যক্ত জমির নিলাম নিয়ে মেয়র ফিরহাদ হাকিম পুর আধিকারিকদের সঙ্গে প্রাথমিক কথাবার্তা বলেছেন। ফাইল ছবি।
বকেয়া কর আদায় করতে শহরের পরিত্যক্ত জমি নিলামে তুলতে চাইছে কলকাতা পুরসভা। এ বিষয়ে কী ভাবে এগোনো যায়, শনিবার তা নিয়ে মেয়র ফিরহাদ হাকিম পুর আধিকারিকদের সঙ্গে প্রাথমিক কথাবার্তা বলেছেন। আধিকারিকদের একাংশের মতে, বকেয়া কর আদায়ে স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করে তা বিক্রির নিদান কলকাতা পুর আইনে রয়েছে। কিন্তু পুর ইতিহাস জানাচ্ছে, বাস্তবে ওই আইন প্রয়োগ করে কোনও সম্পত্তির নিলাম এখনও করে উঠতে পারেনি পুরসভা। তাই পরিত্যক্ত জমি নিলামে তোলার চিন্তা করলেও কবে তা সম্ভব হবে, সে ব্যাপারে সংশয়ে পুর প্রশাসনের একাংশ।
এ বিষয়ে হেমন্ত বসু সরণির এক বাড়ির উদাহরণ দিচ্ছেন পুরকর্তাদের একাংশ। দীর্ঘদিনের বকেয়া কর আদায়ের জন্য ২০১৬-’১৭ সাল নাগাদ হেমন্ত বসু সরণির সংশ্লিষ্ট সম্পত্তি নিলামে তোলার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন পুর কর্তৃপক্ষ। তার দায়িত্ব দেওয়া হয় বিশেষজ্ঞ নিলামকারী সংস্থাকে। কিন্তু তা এখনও ফলপ্রসূ হয়নি। তার পরিপ্রেক্ষিতেই আধিকারিকেরা জানাচ্ছেন, আইনে ক্ষমতা থাকা এক জিনিস। তার সফল প্রয়োগ আর এক বিষয়। আর এই দুইয়ের মধ্যে ব্যবধান রয়েছে।
তবে শুধু কলকাতা পুরসভাই নয়, দেশের অন্য কোনও পুরসভা বকেয়া কর আদায়ে সম্পত্তি নিলামে তুলতে পেরেছে— এমন তথ্যও মেলেনি। এ বিষয়ে চেন্নাই, মুম্বই-সহ দেশের একাধিক পুর কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা হয়েছে বলে জানাচ্ছেন কলকাতার পুরকর্তাদের একাংশ। সংশ্লিষ্ট পুরসভাগুলিও এই প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ করতে পারেনি। তারাও বকেয়া কর আদায়ে কলকাতা পুরসভার মতোই সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করে রেখে দিয়েছে।
এ ক্ষেত্রে আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় রয়েছে বলে মনে করছেন অনেকে। তা হল— শহরের অনেক ফাঁকা, পরিত্যক্ত জমিইমালিকানাহীন অবস্থায় পড়ে রয়েছে। বারবার চেষ্টা করেও সেগুলির মালিকের খোঁজ পায়নি পুরসভা। ফলে এমন ক্ষেত্রে বকেয়া করের প্রশ্নই আসে না, নিলাম তো দূর অস্ত্। তবে মালিকানাহীন পরিত্যক্ত জমির ব্যবস্থাপনা নিয়ন্ত্রণ পুরসভা করতে পারে। বকেয়া করআদায়ে সম্পত্তি নিলামে তোলার প্রসঙ্গ তখনই আসে, যখন জমির মালিক কে, সেই তথ্য জানতে পারে পুরসভা।
প্রসঙ্গত, শনিবার ‘টক টু মেয়র’ কার্যক্রমে এলাকার এক ফাঁকা, পরিত্যক্ত জমিতে জঞ্জাল জমা এবং তার জেরে সেটি মশার প্রজননক্ষেত্র ও ইঁদুরের অবাধ বিচরণক্ষেত্র হয়ে কী ভাবে জনস্বাস্থ্যের ক্ষেত্রে বিপদ তৈরি করছে, তা নিয়ে মেয়রকে ফোনে অভিযোগ জানান এক নাগরিক। সেই প্রসঙ্গেই এলাকাবাসীর মাথাব্যথার কারণ হয়ে ওঠা শহরের ফাঁকা, পরিত্যক্ত, জমিগুলির বকেয়া কর কত, সেই তথ্য বার করে সংশ্লিষ্ট জমির মালিকের বিরুদ্ধে আদালতে যাওয়ার প্রস্তাব দেন মেয়র।আদালতের রায় পুরসভার পক্ষে এলে জমিগুলি নিলামে তোলার প্রস্তাব দেন তিনি।
যার পরিপ্রেক্ষিতে এক পুরকর্তা জানাচ্ছেন, বৃহত্তর জনস্বার্থের কথা ভেবে এবং বকেয়া কর আদায়ে ইতিবাচক পদক্ষেপ হিসাবে নিলামের প্রসঙ্গটি তুলেছেন মেয়র। কিন্তু আইনে ক্ষমতা থাকলেই সব সময়ে তার প্রয়োগ সম্ভব হয় না। অনেক খুঁটিনাটি বিষয়, জটিলতা চলে আসে তখন। ওই কর্তার কথায়, ‘‘তা ছাড়া পুরো নিলাম প্রক্রিয়াটিই সময়সাপেক্ষ। এখানে পুরসভাকে বাদ দিয়েও একাধিক সংস্থার মতামত গুরুত্বপূর্ণ। তবে এ বিষয়ে অতীতের পদ্ধতিগত ত্রুটি দূর করে একটা নির্দিষ্ট নীতি গ্রহণের কথা ভাবা হচ্ছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy