Advertisement
২৩ অক্টোবর ২০২৪
Cyclone Dana

ঢিমেতালে মণ্ডপ খোলার কাজ, চিন্তা ঝড়ের আগে

দিল্লির মৌসম ভবন সূত্রে জানা গিয়েছে, ওড়িশা এবং পশ্চিমবঙ্গের উপকূলীয় এলাকায় আছড়ে পড়তে পারে ঘূর্ণিঝড় ‘দানা’। ঝড়ের সর্বোচ্চ গতিবেগ সম্পর্কে আবহাওয়া বিজ্ঞানীরা এখনও নিশ্চিত করে কিছু না জানালেও প্রবল ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা করা হচ্ছে।

এখনও খোলা হয়নি দেশপ্রিয় পার্কের পুজো মণ্ডপ। মঙ্গলবার।

এখনও খোলা হয়নি দেশপ্রিয় পার্কের পুজো মণ্ডপ। মঙ্গলবার। ছবি: স্বাতী চক্রবর্তী।

চন্দন বিশ্বাস
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৩ অক্টোবর ২০২৪ ০৭:৩৯
Share: Save:

কোথাও মণ্ডপ খোলার কাজে এখনও হাতই পড়েনি। কোথাও লক্ষ্মীপুজোর পরে ঢিমেতালে শুরু হলেও কাজ কবে শেষ হবে, কেউ জানেন না। বাঁশ থেকে শুরু করে মণ্ডপ সাজাতে ব্যবহার করা টিনের কাঠামো, মণ্ডপের সামনের রাস্তার বিজ্ঞাপনী গেট— রয়ে গিয়েছে সবই। পুজো শেষ হওয়ার পরে সপ্তাহ পেরোলেও সেগুলি রয়ে যাওয়ায় প্রশ্ন উঠেছে, ঘূর্ণিঝড় ‘দানা’ আছড়ে পড়লে এই সমস্ত জিনিসই বিপদের কারণ হয়ে উঠবে না তো? প্রশাসনের প্রস্তুতির মধ্যেই ভয় ধরাচ্ছে এই প্রশ্ন।

দিল্লির মৌসম ভবন সূত্রে জানা গিয়েছে, ওড়িশা এবং পশ্চিমবঙ্গের উপকূলীয় এলাকায় আছড়ে পড়তে পারে ঘূর্ণিঝড় ‘দানা’। ঝড়ের সর্বোচ্চ গতিবেগ সম্পর্কে আবহাওয়া বিজ্ঞানীরা এখনও নিশ্চিত করে কিছু না জানালেও প্রবল ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা করা হচ্ছে। কলকাতায় ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাব কতটা পড়বে, তা নিয়ে নিশ্চিত হওয়া না গেলেও জোর প্রস্তুতি শুরু হয়েছে প্রশাসনের অন্দরে।

দমকা হাওয়ায় বাঁশের কাঠামো পড়ে যাওয়ায় অতীতে একাধিক দুর্ঘটনা ঘটেছে। এমনকি, বছরখানেক আগে রেড রোডে পুলিশের একটি অনুষ্ঠানে লোহার কাঠামো পড়ে আহত হয়েছিলেন পুলিশেরই এক শীর্ষ কর্তা-সহ কয়েক জন। ঘূর্ণিঝড়ের পূর্বাভাসের মধ্যেই শহরে এখনও অধিকাংশ দুর্গাপুজোর মণ্ডপের কাঠামো রয়ে যাওয়ায় পুরনো এমন ঘটনাগুলির কথা ফের উঠে আসছে। প্রশ্ন উঠেছে, ঝড়ের মধ্যে জনবহুল এলাকায় বা রাস্তার পাশে থাকা বাঁশের কাঠামো ভেঙে প্রাণহানি বা অন্য বিপদ ঘটলে কী হবে? প্রশাসনের তরফে যদিও দ্রুত ওই সব কাঠামো খোলার কাজ শেষ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। লালবাজারের এক কর্তার কথায়, ‘‘বিপজ্জনক এমন কাঠামো নামাতে ইতিমধ্যেই প্রতিটি থানাকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।’’

প্রশাসনের তরফে নির্দেশ দেওয়া হলেও মঙ্গলবার শহরের একাধিক পুজো মণ্ডপ ঘুরে অন্তত নিশ্চিন্ত হওয়া যায়নি। এ দিন দেশপ্রিয় পার্কে গিয়ে দেখা গেল, মাঠে রয়ে গিয়েছে বাঁশের বিশাল কাঠামো। যার বড় অংশই খোলা বাকি। পুজোর উদ্যোক্তা সুদীপ্ত কুমার জানালেন, ঘূর্ণিঝড়ের আশঙ্কায় জরুরি ভিত্তিতে খোলার কাজ শুরু হয়েছে। এ দিন থেকে অতিরিক্ত কর্মীও লাগানো হয়েছে। কিন্তু তার পরেও যে ঝড়ের আগে কাঠামো খোলার কাজ শেষ করা সম্ভব নয়, তা স্বীকার করে নিচ্ছেন তিনি। তাঁর কথায়, ‘‘যে মণ্ডপ দু’-তিন মাস ধরে তৈরি করা হয়, তা কি এক সপ্তাহে খোলা সম্ভব? তবে চেষ্টা করছি, ঝড়ের আগে কাঠামো যতটা সম্ভব খুলে ফেলে বিপদের আশঙ্কা কমাতে।’’

কার্যত একই ছবি সংলগ্ন সিংহী পার্কের পুজো মণ্ডপেও। ঘনবসতিপূর্ণ এলাকার মধ্যে এখনও রয়েছে বাঁশের কাঠামোর একাংশ। উদ্যোক্তাদের এক জন, জয়ন্ত গুছাইত যদিও বললেন, ‘‘আমরা অনেকটা খুলে ফেলতে পেরেছি। ঝড়ের আশঙ্কায় আগেই মণ্ডপের উঁচু অংশগুলি খোলার নির্দেশ দিয়েছিলাম।’’ এমন বিপজ্জনক অবস্থায় কাঠামো রয়ে গিয়েছে আরও বহু মণ্ডপে।

ফোরাম ফর দুর্গোৎসবের সাধারণ সম্পাদক তথা হাতিবাগান সর্বজনীনের কর্তা শাশ্বত বসু বললেন, ‘‘পুজোর কাজ শেষ করেই কর্মীরা বাড়িতে ফিরে যান। লক্ষ্মীপুজোর আগে তাঁদের কেউ সাধারণত ফেরেন না। তাই
অনেক সময়ে কাঠামো খুলতে দেরি হয়। তবে আমরা ঝড়ের খবর পেয়ে আগেই দ্রুত কাঠামো খোলার নির্দেশ দিয়েছিলাম। এ দিন সকালে পুনরায় বলা হয়েছে।’’

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE