Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
Electricity Bills

বিদ্যুতের বিল ৪০ হাজার টাকা! স্তম্ভিত প্রধান শিক্ষকরা, স্কুলগুলি দুষছে কেন্দ্রীয় বাহিনীকে

এ বছর গরমের ছুটির সময়ে ভোটের ডিউটির জন্য ওই সমস্ত স্কুলে ছিল কেন্দ্রীয় বাহিনী। তাদের আলো-পাখা জ্বালানোর বহর দেখেই প্রধান শিক্ষকেরা আশঙ্কা করেছিলেন, এ বার বিদ্যুতের বিল মাত্রাতিরিক্ত আসতে পারে।

Representative Image

—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

আর্যভট্ট খান
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৯ জুন ২০২৪ ০৭:৩৮
Share: Save:

কোথাও বিদ্যুতের বিল এসেছে ৩৪ হাজার, কোথাও ৪০ হাজার টাকা। গরমের ছুটির মধ্যে বেশ কিছু স্কুলে বিদ্যুতের বিলের এই বহর দেখে মাথায় হাত প্রধান শিক্ষকদের। তাঁরা জানাচ্ছেন, অন্যান্য বার গরমের ছুটিতে স্কুলের বিদ্যুৎ-বিল যা আসে, তার তুলনায় এ বছরের বিল এসেছে কয়েক গুণ বেশি!

স্কুলের প্রধান শিক্ষকেরা জানাচ্ছেন, বিদ্যুৎ বিভাগের কর্মীদের মাধ্যমে তাঁরা খতিয়ে দেখেছেন, স্কুলের বিদ্যুৎ সরবরাহের লাইনে কোনও সমস্যা নেই। এ বছর গরমের ছুটির সময়ে ভোটের ডিউটির জন্য ওই সমস্ত স্কুলে ছিল কেন্দ্রীয় বাহিনী। তাদের আলো-পাখা জ্বালানোর বহর দেখেই প্রধান শিক্ষকেরা আশঙ্কা করেছিলেন, এ বার বিদ্যুতের বিল মাত্রাতিরিক্ত আসতে পারে। কিন্তু এত বেশি আসবে, তা ভাবেননি তাঁরা। এই বিল কী ভাবে মেটানো হবে, তা নিয়েই দুশ্চিন্তায় ওই সব স্কুল কর্তৃপক্ষ। প্রধান শিক্ষকেরা জানাচ্ছেন, শিক্ষা দফতরকে চিঠি দিয়ে সব জানিয়েছেন তাঁরা।

যোধপুর পার্ক বয়েজ স্কুলের প্রধান শিক্ষক অমিত সেন মজুমদার জানাচ্ছেন, তাঁদের স্কুলে মে মাসে বিদ্যুতের বিল এসেছে ৩৫ হাজার ৮৬ টাকা। অমিত বলেন, ‘‘আমাদের স্কুলে ২০ এপ্রিল থেকে গরমের ছুটি পড়েছিল, খুলেছে ৩ জুন। মে মাসের প্রথমে স্কুলে কেন্দ্রীয় বাহিনী এসেছিল। পুরো মাস জুড়েই ওরা ছিল। সে সময়ে তাদের বিদ্যুৎ ব্যবহারের পরিমাণ দেখেই আশঙ্কা করেছিলাম, বিল অত্যধিক বেশি আসতে পারে।’’ অমিত জানাচ্ছেন, স্কুলের সব ঘরগুলিতেই ছিলেন কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানেরা। তিনি বলেন, ‘‘গরমের ছুটির সময়ে মাঝেমধ্যে স্কুলে এসে দেখেছি, ওঁরা সব সময়ে আলো, পাখা চালিয়ে রেখেছেন। দিনেও
হ্যালোজেন আলো জ্বালিয়ে রাখতেন। সব সময়ে জলের পাম্প চলত। অনেক বার বলেছিলাম, অকারণে আলো-পাখা জ্বালিয়ে না রাখতে। দিনে হ্যালোজেন আলো বন্ধ রাখতে।’’ যাদবপুরের এন কে পাল আদর্শ শিক্ষায়তনে বিদ্যুতের বিল এসেছে ৪০ হাজার ৩৪৫ টাকা। প্রধান শিক্ষক জনার্দন রায় বলেন, ‘‘কেন্দ্রীয় বাহিনী যত দিন স্কুলে ছিল, তার মধ্যেই এই বিল এসেছে। দিন-রাত আলো-পাখা তো জ্বলেছেই, সেই সঙ্গে সার্চলাইট, হ্যালোজেনও জ্বালিয়ে রাখা হয়েছে। ৬০টিরও মতো বড় বড় স্ট্যান্ড ফ্যান চলেছে সব সময়ে। প্রায় সব সময়ে পাম্প চলেছে।’’

‘অ্যাডভান্সড সোসাইটি ফর হেডমাস্টার্স অ্যান্ড হেডমিস্ট্রেসেস’-এর সাধারণ সম্পাদক চন্দন মাইতি বলেন, ‘‘কেন্দ্রীয় বাহিনী ছিল, এমন অনেক স্কুলেই অস্বাভাবিক বিদ্যুতের বিল এসেছে বলে জানতে পেরেছি। এই বিলের পুরোটাই যেন সরকার বা শিক্ষা দফতর মিটিয়ে দেয়, সেই দাবি জানাচ্ছি।’’

অমিত বলেন, ‘‘স্কুলপড়ুয়াদের বছরে বেতন ২৪০ টাকা। তা থেকে স্কুলের তহবিলে কার্যত কিছুই থাকে না। শিক্ষা দফতর থেকে স্কুলের পরিকাঠামো উন্নয়ন-সহ বিভিন্ন খাতে কম্পোজিট গ্রান্ট বাবদ বছরে এক লক্ষ টাকা পাওয়া যায়। এর মধ্যে বিদ্যুতের বিলও মেটাতে হয়। কিন্তু অস্বাভাবিক বেশি এই বিল মেটানোর ক্ষমতা আমাদের নেই। শিক্ষা দফতরকে চিঠি দিয়েছি।’’ কলকাতা জেলা স্কুল পরিদর্শক অফিসের এক কর্তা বলেন, ‘‘যে স্কুলগুলিতে অতিরিক্ত বিল এসেছে, তাঁরা আমাদের জানিয়েছেন। আমরা বিষয়টি খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেব।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Electricity Bills central forces Government Schools
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy